ভারতের অন্যতম প্রতিশ্রুতিবান তরুণ ক্রিকেটার হলেন যশস্বী জসওয়াল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অল্প সময়ে বেশ দাগ কেটেছেন তিনি। সম্প্রতি নাগপুরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজের প্রথম ম্যাচে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তাঁর। তবে সিরিজে মাত্র একটি ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। প্রথমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলেও সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু পরবর্তীতে যশস্বীকে বাদ দেওয়া হয় এবং তাঁর জায়গায় দলে নেওয়া হয় বরুণ চক্রবর্তীকে। এসবের মাঝে তাঁর কোচ জ্বলা সিং NDTV-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে তাঁর ছাত্র যখনই সুযোগ পাবে নিজেকে প্রমাণ করবে। ২০২৩ সালে ভারতের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন যশস্বী। দু’বছরের মধ্যে তিনি অল-ফরম্যাট ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন। যা দেখে আনন্দিত তাঁর কোচ।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি মাত্র ওডিআই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে জ্বলা সিং বলেন, ‘সে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার একদিনের ক্রিকেটে ডেবিউ করেছে, প্রায় ১৫ রান করেছে। আমি মনে করি ও আরও বেশি রান করতে পারত, কিন্তু ক্রিকেটে একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কখনও কখনও আপনি যা খুঁজছেন তা পান না। ভারতের হয়ে ওডিআই ক্রিকেটে ডেবিউয়ের পর সে অল ফরম্যাট ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছে। তবে এর সঙ্গে সঙ্গে এখানে তার জন্য শেখার বিষয় রয়েছে। যখনই খেলোয়াড়রা ব্যর্থ হয় বা তারা পারফর্ম করতে পারে না, সেই সময় তখন তাকে সবকিছু নতুন করে ভাবতে হয় এবং শরীর ও মনকে নতুন করে গঠন করতে হয়। তাই আমি নিশ্চিত যে পরবর্তীতে সে ওয়ানডেতে ভালো খেলবে। এটি সুযোগ নষ্ট করার বিষয় নয়। এটা শেখার বিষয়। তাই আমি মনে করি ব্যর্থতাও আপনাকে অনেক শিক্ষা দেয় এবং সে ওয়ানডেতে ভালো করবে। পরবর্তী সুযোগ পেলেই ও ভালো খেলবে।’
যশস্বীর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে বাদ পড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সুযোগ পেয়েছিল। আমি একাধিক অনুষ্ঠানে রোহিত শর্মাকে বলতে শুনেছি যে যশস্বী ভালো খেলছে। তাই একটিও ওডিআই না খেলা যশস্বীকে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল কেন তার নাম (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চূড়ান্ত দলে) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি সে সম্পর্কে আমি খুব বেশি কিছু জানি না। তবে হ্যাঁ, আমাদের নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। তারা কী ভাবছে, তারা কী ধরনের দলের ভারসাম্য খুঁজছে এবং তারা কী ধরনের সমন্বয় খুঁজছে সেটা একটা বড় বিষয়। সব ঠিক আছে, কারণ সে তরুণ এবং সে ভবিষ্যতে উন্নতি করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করা, তারা হল নির্বাচক। আমাদের সকলকে এটিকে সম্মান করতে হবে এবং আরও একটি সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
সম্প্রতি বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, যশস্বীকে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসাবে দেখছেন ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এই বিষয়ে তাঁর কোচ বলেন, ‘আমি মনে করি অধিনায়কত্ব এমন একটা জিনিস যা খেলোয়াড়ের হাতে নেই। এটা সম্পূর্ণ নির্বাচক, কোচ এবং যারা সিদ্ধান্ত নেয় তাদের উপর নির্ভর করে। একজন খেলোয়াড় হিসাবে আপনি সবসময় ভালো খেলার এবং দেশের হয়ে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করেন। এটা হল খেলোয়াড়দের প্রাথমিক লক্ষ্য। যখন আপনি কোনও দলের হয়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য খেলবেন, আপনি সিনিয়র খেলোয়াড় হয়ে উঠবেন এবং তারপর আপনি অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক হওয়ার দাবিদার হয়ে উঠতে পারবেন। এটা যাত্রার একটি অংশ, কিন্তু প্রথমে আমি মনে করি আপনাকে ভালো খেলতে হবে, দলে টিকে থাকতে হবে, ধারাবাহিক হতে হবে, দলের হয়ে ম্যাচ জিততে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা মনে করেন যে সে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ভালো বা হয়তো ক্যাপ্টেনকে সাহায্য করতে পারেন, বিষয়টা হল অটো পাইলটের মতো।’