আইপিএল ২০২৪-এ সব থেকে বড় চমক দেখিয়েছিল বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু প্লেসিদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম আট ম্যাচের মধ্যে ৭টিতেই হারার পর, হঠাৎই জিরো থেকে হিরো হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজি। পরপর ৬টি ম্যাচ জিতে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন করেছিলেন তাঁরা, কিন্তু এরই মধ্যে ফের ছন্দপতন। চেন্নাই সুপার কিংসকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিয়ে এলিমিনেটরে খেলতে নেমে, রাজস্থানের বিপক্ষে হেরে বিদায় নেয় বেঙ্গালুরু। নকআউটে গিয়ে দলের তেমন কেউই চাপ ধরে রাখতে পারেননি। বিরাট শুরুর দিকে চেষ্টা করেছিলেন, রজত পতিদার এবং মহিপাল লোমরোর মাঝে লড়াই দিয়েছিলেন। কিন্তু দলগত ভাবে আরসিবি নজর কাড়তে পারেনি। তৃতীয়লার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল কেকেআর, কিন্তু ১৭ বছরেও কেন পারল না আরসিবি, একঝলকে কয়েকটি কারণ।
আরও পড়ুন-ভারতীয় দলের জার্সিতে কামব্যাকের অনুভূতি আলাদা...মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এসে বললেন পন্ত
২০২৪ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর খারাপ পারফরমেন্সের প্রধান কারণ বোলারদের ব্যর্থতা। আলজারি জোসেফকে ১১ কোটি টাকার বেশি খরচা করে দলে নিয়েছিল আরসিবি, তিনি তিন ম্যাচে নিয়েছিলেন মাত্র উইকেট, ইকোনমি ১১.৯০। রিস টোপলি এবং লকি ফারগুসনও চেনা ছন্দে ছিলেন না। দলের আরেক তারকা পেসার মহম্মদ সিরাজ এবারের আইপিএলে ১৫ উইকেট নিলেও ইকোনমি ছিল ৯-এর ওপরে। এছাড়াও দলে কোনও ভালো মানের স্পিনার নেই। কলকাতায় যেমন সুনীল নারিন,বরুণ চক্রবর্তী, রাজস্থানে যুজবেন্দ্র চাহাল, দিল্লিতে কুলদীপ যাদব,গুজরাটে রশিদ খানরা রয়েছেন, তেমন আরসিবিতে ভালো মানের স্পিনারের প্রবল অভাব দেখা গেছে।
আরও পড়ুন-সাদা সিধে ছেলের পেটে এত কিছু...খেতে বসে গম্ভীরকে গার্লফ্রেন্ডের কথা বলেছিলেন কেন নারিন?
আইপিএলে আরসিবির এবারের দ্বিতীয়ার্ধের পারফরমেন্স অনেকের নজর কাড়লেও তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো খেলেনি। ফ্যাফ ডুপ্লেসিসের রানের গতি খুব ভালো নয়। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল টানা দায়িত্বজ্ঞানহীন ইনিংস খেলার পরেও তাঁকে হয়ত বলার মতো কেউ ছিলেন না। ড্রেসিং রুমে ডুপ্লেসির হয়ত সেই কন্ট্রোল নেই। কোচ হিসেবে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারও অতটা কঠিন হয়, গৌতম গম্ভীর বা রিকি পন্টিংদের মতো।
আরসিবির সাফল্য না পাওয়ার আরও একটা কারণ অবশ্যই লিগের লাস্ট ল্যাপের আগে ইংরেজ ব্যাটার উইল জ্যাকসের চলে যাওয়া। এই ইংরেজ মারকুটে ব্যাটার দলে আসার পরই ধারাবাহিকভাবে পারফরমেন্স করতে থাকে আরসিবি টপ অর্ডার, কিন্তু জ্যাকস দেশে ফিরতেই ফের একবার ব্যাটিং পুরোপুরি বিরাট নির্ভর হয়ে যায়।
আরও পড়ুন-আগামী IPL-র নিলামের জন্য চ্যাম্পিয়ন হয়েও শান্তি নেই,ভাঙন রুখতে নয়া প্রস্তাব নাইট সিইওর
এবারের আইপিএলের আগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বিপুল অর্থ ব্যয় করে ক্যামেরন গ্রিনকে দলে নিলেও তাঁকে টপ অর্ডারে না খেলিয়ে বরং মিডল অর্ডারে বেশি খেলিয়েছিল তাঁরা। ফলে বেশি বল খেলার সুযোগ না পাওয়ায় হিট করতে গিয়ে বারবার আউট হয়ে যান তিনি। তাই পরের মরশুম থেকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে বেঙ্গালুরুকে বিরাটের মতো ক্রিকেটারই নিতে হবে। যারা বিরাটের মতো সমমানের নাও হতে পারেন, অন্তত তাঁর মত দলের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন। ম্যাক্সওয়েলর মতো আউট হয়ে হাসতে হাসতে মাঠ ছাড়বেন না। এক্ষেত্রে তাই ক্রিকেটারদের পাশাপাশি দলগঠনের জন্য টিম ম্যানেজমেন্টও দায় এড়াতে পারেনা।