আইপিএলে সাম্প্রতিককালে অনেক দল, অনেক ক্রিকেটারই বলেছেন লয়ালটি অর্থাৎ বিশ্বাসযোগ্যতা, আনুগত্যের কথা। অনেক দলই ক্রিকেটারদের ছেড়ে দেয় আইপিএলের নিলামের আগে। আবার অনেক দলই থাকে যারা আইপিএলের রিটেনশনে তো বটেই, এছাড়া পুরনো কোর টিম ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর হয়, অর্থাৎ চেষ্টা করে পুরনো দলই ধরে রাখার।
আরও পড়ুন -তিনটি আলাদা নেটে বিশেষ অনুশীলন! অ্যাডিলেডে রানে ফিরতে মরিয়া ল্যাবুশেন…
প্রথমেই আসা যাক কেকেআরে। গতবারের আইপিএলজয়ী দলের অধিকাংশ সদস্যকেই তাঁরা ধরে রেখেছে। আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, রিঙ্কু সিং, রমনদীপ সিং, বরুণ চক্রবর্তী এবং হর্ষিত রানা। এছাড়াও বৈভব আরোরা, অংকৃষ রঘুবংশীকে তাঁরা ফিরিয়ে নিয়েছে। বেঙ্কটেশ আইয়ারকে ২৩ কোটির বেশি দিয়ে তাঁরা দলে রেখেছে, অর্থাৎ ক্রিকেটারদের ভালোবাসার দিক থেকে কেকেআর যথেষ্টই এগিয়ে রয়েছে। মণীশ পাণ্ডেকেও দলে ফেরানো হয়েছে।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলও রোহিত শর্মা,হার্দিক পাণ্ডিয়া, সূর্যকুমার যাদব, জসপ্রীত বুমরাহ এবং তিলক বর্মাকে দলে রেখেছে। এছাড়াও নমন ধীর, অর্জুন তেন্ডুলকরদের ফিরিয়ে নিয়েছে।
চেন্নাই সুপার কিংস রুতুরাজ গায়েকওয়াড়, মহেন্দ্র সিং ধোনি, শিবম দুবে, মথিসা পথিরানা এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ধরে রাখার পাশাপাশি গতবার খেলা ডেভন কনওয়েকে ফিরিয়ে নিয়েছে। রাচিন রবীন্দ্রকে ফেরানোর পাশাপাশি দলের প্রাক্তনী অশ্বিন এবং স্যাম কারানকেও ফিরিয়েছে সিএসকে।
সেদিক থেকে আরসিবি আবার খুব বেশি পুরনো দলের ক্রিকেটারদের ফেরায়নি। বিরাট কোহলি রজত পতিদার, যশ দয়ালকে রিটেন করা ছাড়া তেমন কোনও ক্রিকেটারদের আরটিএম কার্ড দিয়ে ফেরায়নি আরসিবি।
রাজস্থান রয়্যালস ছয় ক্রিকেটার যশস্বী জয়সওয়াল, রিয়ান পরাগ, ধ্রুব জুরেল, সিমরন হেতমায়ের, সন্দীপ শর্মা এবং সঞ্জু শর্মাকে রিটেন করার পাশাপাশি অতীতে খেলে যাওয়া জোফ্রা আর্চারকে ফিরিয়েছে দলে।
পঞ্জাব কিংস দল তো একেবারেই প্রায় নতুন। গতবারে দল থেকে শশাঙ্ক সিং এবং প্রভসিমরন সিংকে রেখেছিল তাঁরা। এছাড়া এবারে আরটিএম কাজে লাগিয়ে আর্শদীপ সিংকে ঘরে তোলে পঞ্জাব। গ্লেন ম্যাক্সওলে ফিরলেও বহুদিন পর তিনি এলেন।
আরও পড়ুন-ভারত প্রথম টেস্টে জিতবে! জানতেন মহারাজ! লিড নিতেই করেছিলেন মাইকেল ভনকে টেক্সটও…
দিল্লি ক্যাপিটালসে অবশ্য গতবারের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকেই ফিরিয়ে নিয়েছে। ৪ ক্রিকেটারকে সরাসরি রিটেন করেছিল ক্যাপিটালসরা। ট্রিস্টান স্টাবস, অভিষেক পোড়েল, কুলদীপ যাদব এবং অক্ষর প্যাটেল ছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই পুরনো দলের জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্ক এবং মুকেশ কুমারকে আরটিএম কাজে লাগিয়ে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
হায়দরাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজিও সরাসরি পাঁচ ক্রিকেটার ধরে রাখে। ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, হেনরিখ ক্লাসেন, প্যাট কামিনস ও নীতীশ রেড্ডিকে তাঁরা দলে রিটেন করে। যদিও পুরনো দলের শাহবাজ, ভুবনেশ্বরদরে, নটরাজনদের এবারে রাখেনি হায়দরাবাদ।
গুজরাট টাইটানস দল তুলনায় অনেকের থেকেই নতুন। সবে তিন বছর হয়েছে, এখানে তাই এত জলদি পেশাদার ক্রিকেটারদের থেকে আনুগত্য আশা করাও যায়না। তাঁরা সাই সুদর্শন, রাহুল তেওয়াতিয়া, শাহরুখ খানের পাশাপাশি শুভমন গিল এবং রশিদ খানকে রিটেন করে। এছাড়া তাঁরা মূলত নতুন দল নিয়েই শক্তিশালী স্কোয়াড বানিয়েছে।
লখনউ সুপার জায়ান্টে এমনিতেই মালিকের সঙ্গে অধিনায়কের ঝগড়া লেগেছিল কয়েক মাস আগে। ফলে এক্ষেত্রে যে ম্যানেজমেন্ট পেশাদারিত্ব এবং সাফল্যকেই অগ্রাধিকার দেবে তা বলাই বাহুল্য। তাঁরা নিকোলাস পুরান ছাড়া আয়ুশ বাদোনি, রবি বিশনৈ, মোহসিন খান এবং মায়াঙ্ক যাদবকে রিটেন করেন। ফলে লয়্যালটি বা ক্রিকেটারদের প্রতি দলের দায়বদ্ধতার কথাও যদি উঠে আসে সেক্ষেত্রে ওপরের দিকেই স্থান রয়েছে কেকেআরের।