বাংলা দল মঙ্গলবারই ৩৩ বারের জন্য সন্তোষ ট্রফি জিতেছে। কেরলকে হারিয়ে তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। হায়দরাবাদ থেকে ভারতসেরা হয়ে ফিরেছে তাঁরা। সঞ্জয় সেনের দল এবারে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই খেলেছে। কারণ দলের ডিফেন্স থেকে অ্যাটাক, সবার মধ্যেই একটা জমাট ভাব ছিল, আর ছিল অসম্ভব ভালো বোঝাপড়া।
আরও পড়ুন- এক বছরে টেস্টে ১৪৭৮ রান! যশস্বী টপকালে সানি-বীরুকে! শীর্ষে এখনও সচিন তেন্ডুলকর, কত রান?
সঞ্জয় সেনের কোচ হওয়া-
এবছর বাংলার সন্তোষ ট্রফি জয়ের বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রধান কারণ অবশ্য দলের সঠিক কোচ নির্বাচন। বিগত কয়েক বছর ধরে অনেক কোচকে বাংলার দায়িত্ব দেওয়া হলেও, অনেকেই সেই মানের ছিলেন না। আবার কিছুক্ষেত্রে ভালো কোচ আসলেও শোনা যেত, যে ফুটবলাররা নাকি তাঁদের একটা কথাও শুনতেন না। সেখানে ডাকাবুকো সঞ্জয় সেনই ছিলেন এই দলের একমাত্র নেতা, দলে তেমন কোনও স্টারও নেই। বড় ক্লাবের হিরোরাও ছিলেন না। আর সঞ্জয়ের কাছে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জও ছিল নিজেকে প্রমাণের। কারণ কোনও আইএসএল বা আইলিগের দলে তিনি যুক্ত নন।
২০২৪ সালে সফল বাংলার ফুটবল-
বাংলা ফুটবল গত বছরে ভালো জায়গায় নিজেদের মেলে ধরেছে। সুপার কাপ জয় দিয়ে শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গল, এরপর মোহনবাগান জেতে আইএসএল শিল্ড। মহমেডান স্পোর্টিং চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আইলিগে। ফলে বাংলার ছেলেদের ভিতর থেকে সেই তাগিদটা বের করে আনতে পেরেছিলেন সঞ্জয় সেন। আর চাকু মাণ্ডি, রবি হাঁসদারাও সেই মতো নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন।
আইএফএর ভূমিপুত্র সংরক্ষণ নীতি-
বাংলার সাফল্যের আরও এক কারণ অবশ্যই কলকাতা লিগে ভূমিপুত্র সংরক্ষণ বা খেলানোর নয়া নীতি। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কলকাতা ফুটবল লিগে নজরে পড়ত অধিকাংশই ভিনরাজ্যের ফুটবলারদের নিয়ে ঠাসা দল। বিহার, কেরল, গোয়া, মণিপুর থেকে এসেই ফুটবলাররা দাপিয়ে বেরাতো ময়দানে, যদিও আইএফএ কলকাতা লিগে বাঙলার ফুটবলার খেলানোয় জোর দেওয়ার ভূমিপুত্ররাও সুযোগ পেয়েছেন নিজেদের চেনানোর।
ভালো অ্যাটাক, সঙ্গে দুর্দান্ত ডিফেন্স-
এবারের সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার সাফল্যের আরও এক প্রধান কারণ দলের ডিফেন্স এবং মাঝমাঠের অসাধারণ পারফরমেনস। ১১টা ম্যাচে বাংলা একটা ম্যাচেও হারেনি, এটা স্রেফ দলের স্ট্রাইকারদের জন্য হতে পারে না। প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোল স্কোরার রবি হাঁসদা থেকে নরহরি শ্রেষ্ঠারা যেমন দলকে কাঙ্খিত গোল এনে দিয়েছেন, তেমনই জুয়েল-আদিত্যরা গোলদূর্গ অক্ষত রেখেছেন বহু ম্যাচে। যার ফলে দলগত দিক থেকেই সকলে আত্মবিশ্বাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন-Video-ফের ল্যাবুশানের সঙ্গে বেল নিয়ে তুকতাক সিরাজের! কাজে এল! তবে এবার আউট
সুমনের বড় দাবি-
অবশ্য এরই মধ্যে বাংলার হয়ে অতীতে সন্তোষ ট্রফি জেতা ফুটবলার সুমন হাজরা অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা বাংলাকে ট্রফি এনে দিলেও প্রাপ্য সম্মান তাঁরা পাননি। তিনি আর্জি জানিয়েছেন যাতে বাংলার হয়ে খেলা এই তরুণ ফুটবলারদের প্রাপ্য সম্মান এবং সুযোগ দেওয়া হয় আগামী দিনে, যাতে তাঁরা আরও উদ্বুদ্ধ হন।