আইসিসি দ্বারা পরিচালিত পুরুষদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসলে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। মর্যাদার দিক থেকে এই টুর্নামেন্টের অবস্থান বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পরেই। ১৯৯৮ সালে আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা নামে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত চূড়ান্ত খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে শিরোপা পেয়েছিল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল হচ্ছে পাকিস্তান।
২০০২ সালে আইসিসি নক-আউট টুর্নামেন্টের নাম বদলে রাখা হয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর পর আয়োজক দেশ হিসেবে অগ্রাধিকার পেতে থাকা আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য দেশগুলিই। অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যাও কমিয়ে আট করা হয়। ওডিআই বিশ্বকাপের গুরুত্ব যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে সেই কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে নক-আউট টুর্নামেন্ট হিসেবেই দেখা হতে লাগে। যদিও ২০০২ সালের টুর্নামেন্টটি রাউন্ড-রবিন ফর্ম্যাটে খেলা হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংখ্যক দেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেললেও ২০০৯ থেকে টুর্নামেন্টের ছয় মাস আগে আইসিসি র্যাঙ্কিং-এ শীর্ষে আটটি স্থানে থাকা দেশগুলিই খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রেয়াঙ্কা পাতিলের বদলি হিসাবে GG-র প্রাক্তনীকে দলে নিচ্ছে RCB
২০১৩ ও ২০১৭তে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তুলে দেওয়ার কথা ভেবেছিল আইসিসি। যদিও তা হয় নি। কোভিডের কারণে ২০২১ সালে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়নি। তবে ২০২৫ সালে ফিরেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এই বছর এই ট্রফির নবম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হবে। ওডিআই বিশ্বকাপের লীগ পর্বে প্রথম আটটি স্থানে থাকা দলগুলি সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।
শুরুতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতি দুই বছর অন্তর আয়োজন করা হত। কিন্তু ২০০৮ সালে পাকিস্তানে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায়নি নিরাপত্তাজনিত সমস্যা থাকায়। ২০০৯ সালে তা আয়োজিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। এর পর থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতি চার বছরে একবার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: বছরের ১০ মাসই ক্রিকেট খেলতে হয়… বুমরাহের চোট নিয়ে চাঁচাছোলা কপিল
এখনও পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফলাফল:
১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
২০০০ সালে নিউজিল্যান্ড বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ভারত।
২০০২ সালে বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনালের জেরে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা যুগ্ম ভাবে জয়ী হয়।
২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ইংল্যান্ড।
২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়া বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া বিজয়ী হয়, রানার্স হয় নিউজিল্যান্ড।
২০১৩ সালে ভারত বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ইংল্যান্ড।
২০১৭ সালে পাকিস্তান বিজয়ী হয়, রানার্স হয় ভারত।
আরও পড়ুন: রিচার পুষ্পা স্টাইলে সেলিব্রেশন, কণিকার ভাংড়া- GG-কে হারিয়ে বাঁধনহীন আনন্দে ভাসল RCB- ভিডিয়ো
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির রেকর্ড:
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ম্যাচ জেতার নজির রয়েছে ভারতের। ২৯টি ম্যাচ খেলে তারা জিতে নিয়েছে ১৮টি। দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া। তারা ২৪ ম্যাচ খেলে ১২টিতে জিতেছে। দুই দলই ৮টি করে ম্যাচ হেরেছে।
খেতাব জয়ের নিরিখেও সবার উপরে ভারত ও অস্ট্রেলিয়াই রয়েছে। ২০০২ ও ২০১৩ সালে ট্রফি জেতে টিম ইন্ডিয়া। অস্ট্রেলিয়া ২০০৬ ও ২০০৯ সালে দু'বার চ্যাম্পিয়ন হয়। টানা দু'বার ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব অজিদের।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক ক্রিস গেইল। ক্যারিবিয়ান তারকা করেছেন ৭৯১ রান। সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় ভারতের বিরাট কোহলির (৮৮.১৬)।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ ৩টি করে শতরান রয়েছে চার তারকার। তাঁরা হলেন ভারতের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শিখর ধাওয়ান, দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক উইকেট নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের কাইল মিলস। ২০০২ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে ২৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি।
এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর নিউজিল্যান্ডের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ৩৪৭ করেছিল তারা।
এক ইনিংসে সর্বনিম্ন স্কোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তারা গুটিয়ে গিয়েছিল ৬৫ রানে।