রঞ্জি ট্রফিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর, যেখানে তিনি ২১.১৬ গড়ে ৩০টি উইকেট নিয়েছেন এবং তিনটি অর্ধশতক ও একটি সেঞ্চুরিসহ ৩৯৬ রান করেছেন, ফাস্ট-বোলিং অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর স্বীকার করেছেন যে তার নজর রয়েছে ভারতের পরবর্তী টেস্ট সিরিজের দিকে। আসলে জুনে ইংল্যান্ড সফরের দিকে টার্গেট করছেন শার্দুল ঠাকুর। যদিও নির্বাচন প্রক্রিয়া এখনও বাকি রয়েছে। অজিত আগরকর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিকে শার্দুল ঠাকুর বার্তা দিয়েছেন যে তিনি ভারতের জন্য আর অশ্বিনের মতো নীচের দিকে ব্যাটিং করতে পারেন।
হরিয়ানার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাচ জেতানো নয় উইকেট শিকারের পর, যেখানে প্রথম ইনিংসে তিনি ছয় উইকেট নিয়েছিলেন, ঠাকুর RevSportz-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে তিনি আত্মবিশ্বাসে ভরপুর রয়েছেন এবং ১৩ মাসের বেশি সময় পর ভারতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি সর্বশেষ ভারতের হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট খেলেছিলেন।
শার্দুল ঠাকুর উল্লেখ করেছেন যে প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের অধীনে ভারতের লম্বা টেল ব্যাটিং পছন্দের প্রবণতা রয়েছে, এবং সেই অনুযায়ী তিনি মনে করেন যে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার মতো তিনি ৭ বা ৮ নম্বরে ব্যাট করতে পারেন।
আরও পড়ুন …. IPL 2025: রাজস্থান রয়্যালসের বড় ঘোষণা! দলের স্পিনিং রত্নদের উজ্জ্বল করতে যুক্ত হলেন দ্রাবিড়ের প্রাক্তন সতীর্থ
শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘আমার আত্মবিশ্বাস খুবই উঁচুর দিকে রয়েছে। দেশের জন্য খেলার চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা কিছু নেই। আপনি যদি ভারতের কম্বিনেশন দেখেন, ঘরে হোক বা বিদেশে, সবসময় এমন একজন বোলার প্রয়োজন যে ৭ বা ৮ নম্বরে ব্যাট করতে পারে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ব্যাট হাতে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন, রবীন্দ্র জাদেজাও সেই দক্ষতা দেখিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, আমি ভারতের জন্য ৭ বা ৮ নম্বরে ব্যাট করেও ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারব।’
এরপরে তিনি বলেন, ‘আমার যদি দলের তৃতীয় বা চতুর্থ পেসার হিসেবেও সুযোগ আসে, তাতেও আমি নিজেকে কম কিছু ভাবি না। রঞ্জি ট্রফিতে আমি মুম্বইয়ের প্রধান পেসার হিসেবে নতুন বল হাতে নিই। তাই যদি জসপ্রীত বুমরাহ এক প্রান্ত থেকে বল করেন এবং ভারতীয় দলের অধিনায়ক আমাকে অন্য প্রান্ত থেকে শুরু করতে বলেন, আমি প্রস্তুত থাকব। এটা আমার জন্য নতুন কিছু নয়। আমি বিশ্বাস করি, আমার বোলিং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে।’
এছাড়া শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘যদি আপনি টি-টোয়েন্টির কথা ভাবেন, যেখানে বুমরাহ ও আমি একসঙ্গে খেলেছি, আমি সাধারণত ডেথ ওভারে বল করেছি। টেস্ট ক্রিকেটে আমি নতুন ও পুরনো দুই বলেই কার্যকর। ব্যাট হাতে ৮ থেকে ১১ নম্বরে রান করা দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ইংল্যান্ড সফরের মতো বিদেশের কন্ডিশনে। অতিরিক্ত রান বোলারদের জন্য স্বস্তি আনে এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।’
আরও পড়ুন …. Champions Trophy 2025: স্ত্রী বা সঙ্গীনিদের কি দুবাই নিয়ে যাওয়া যাবে? BCCI-র কাছে ক্রিকেটারের প্রশ্ন- রিপোর্ট
বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে সুযোগ না পাওয়ার হতাশা
অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য ভারতীয় টেস্ট দলে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে শার্দুল ঠাকুর ছিলেন অন্যতম। বিশেষ করে ম্যানেজমেন্ট একজন ফাস্ট-বোলিং অলরাউন্ডার খুঁজছিল। যদিও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হোম সিরিজ এবং নিউজিল্যান্ড সিরিজে তিনি দলে ছিলেন না, অনেকেই মনে করেছিলেন যে অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে তিনি ফিরবেন। কিন্তু নির্বাচকরা তার পরিবর্তে হর্ষিত রানাকে বেছে নেন।
শার্দুল ঠাকুর স্বীকার করেছেন যে দল থেকে বাদ পড়া তাকে কিছুদিন ‘বিপর্যস্ত’ করেছিল, তবে পরে তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘প্রথমে যখন দলের ঘোষণা হল এবং আমি আমার নাম দেখলাম না, তখন এটা খুবই কষ্টদায়ক ছিল। কিন্তু একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমরা বুঝি যে কেরিয়ারে উত্থান-পতন থাকবেই। তখন আমি ভেবেছিলাম, যদি আমি ক্রিকেটে বড় কিছু অর্জন করতে চাই, তাহলে এই প্রত্যাখ্যান নিয়ে পড়ে থাকা যাবে না। আমি ইতিবাচক ছিলাম যে সুযোগ এলে আমি প্রস্তুত থাকব।’
আরও পড়ুন …. WPL 2025 শুরুর আগেই RCB শিবিরে বড় ধাক্কা! চোট কারণে ছিটকে গেলেন দলের তারকা স্পিনার
তিনি আরও বলেন, চলতি ২০২৪/২৫ রঞ্জি ট্রফিতে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শুধুমাত্র কিছু প্রমাণ করার জন্য ছিল না, বরং নিজের সেরাটা দেওয়ার প্রেরণা থেকেই এসেছে। শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘আমি আলাদা করে কিছু প্রমাণ করতে চাইনি, আমি শুধু আমার মৌলিক দক্ষতাগুলোর ওপর জোর দিয়েছি। যদি আপনি জিজ্ঞাসা করেন, মুম্বইয়ের হয়ে খেলতে গেলে আমাকে কী বিশেষ করে তোলে, তাহলে বলব, আমি নিয়মিত উইকেট নিই এবং নকআউট পর্বে ভালো পারফর্ম করি। এগুলোই আমার জন্য অনুপ্রেরণা। আমি বিশ্বাস করি, আগে যা করেছি, তা আবারও করতে পারব।’
এরপরে শার্দুল ঠাকুর বলেন, ‘যখন অস্ট্রেলিয়া সফরের দল ঘোষণা করা হল, তখনই আমি আমার মনোযোগ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আইপিএল এবং আসন্ন ইংল্যান্ড সফরের দিকে সরিয়ে নিয়েছিলাম। প্রেরণা সবসময় ছিল, এবং আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি।’