সচিন তেন্ডুলকর ভারতীয় ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি। দীর্ঘদিন ধরে দেশের হয়ে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন তিনি। গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। তেন্ডুলকরকে ক্রিকেট থেকে বিদায় জানানোটা মোটেও সহজ কাজ ছিল না ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে। ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান নিজের শেষ ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেছিলেন ১৬ নভেম্বর ২০১৩ সালে। ওয়াংখেড়েতে ২০০ তম টেস্ট ম্যাচ খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি। শেষ বেলায় বেশ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন সচিন। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি আর। শুধু তিনি নন, আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন আপামর ক্রিকেট প্রেমী। সম্প্রতি সেই দিনের কথা এক সাক্ষাৎকারে স্মরণ করেছেন পাতাললোক খ্যাত অভিনেতা জয়দীপ আহলাওয়াত।
এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেতা জানান যে একসঙ্গে তিনি কোনও দিন এত জনকে কাঁদতে দেখেননি। তিনি বলেন, ‘সচিনের শেষ ম্যাচ ছিল ওয়াংখেড়েতে। আমরা সব ব্যাচ মেটরা দেখতে গিয়েছিলাম। তৃতীয় দিন আমরা খেলা দেখতে যাইনি। আমরা ভেবেছিলাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ আজ সারাদিন ব্যাট করবে তাই চতুর্থ দিন খেলা দেখতে যাব। দুপুর ১২টার আশেপাশে ঘুম থেকে উঠে দেখি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪ উইকেট পড়ে গেছে। তখনই ভাবলাম খেলা দেখতে যেতেই হবে, কারণ আজ যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়ে যায় তাহলে ভারতের আর ব্যাটিং আসবে না। ইনিংস এবং রানে ম্যাচ জিতে নিত টিম ইন্ডিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রওনা দিই। কিন্তু যতক্ষণে গিয়ে পৌঁছই ততক্ষণে ইনিংস শেষ হয়ে যায়। আমার গিয়ে দেখি স্টেডিয়ামের গেট আটকে দেওয়া হয়েছে। বাইরে লোক দাঁড়িয়ে। কারণ সবাই জানত এদিন সচিন বক্তব্য রাখবে। তাই সিকিউরিটি গার্ডরাও তালা লাগিয়ে চলে গিয়েছিল তাঁর কথা শুনতে। আমরা চিৎকার করার পর গেট খুলে দেওয়া হয়। আমরা স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি সচিন হাতে মাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে। উনি যখন বক্তব্য শুরু করলেন তখন গোটা স্টেডিয়াম একসঙ্গে কাঁদছিল। আমি আগে কখনও এরকম কিছু দেখিনি। এটা আপনে আপ একটা স্মৃতি।’ জয়দীপ আহলাওয়াত বলেন, তিনি ক্রিকেটে ‘সচিন সচিন’ চিৎকার করাটা মিস করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ৫০ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। সেখানে নিজেও অবসরের দিনের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেসেছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার। জানিয়েছিলেন শুধুমাত্র মায়ের জন্য ওয়াংখেড়েতে শেষ ম্যাচ খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। সচিন বলেন, ‘আমার মা আমাকে কখনও খেলতে দেখেননি। তখন আমার মায়ের স্বাস্থ্য এমন ছিল যে তিনি ভ্রমণ করতে পারতেন না। তিনি ওয়াংখেড়ে ছাড়া অন্য কোনও জায়গায় গিয়ে খেলা দেখার মতো অবস্থায় ছিলেন না। তাই সেখানে খেলার অনুরোধ জানিয়েছিলাম বোর্ডের কাছে।’