ভারতীয় দলকে সদ্যসমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাফল্য এনে দেওয়ার ক্ষেত্রে বরুণ চক্রবর্তীর ভূমিকা ছিল অনন্য। এই মিস্ট্রি স্পিনার তিন ম্যাচে মোট নয়টি উইকেট শিকার করেছিলেন। যার মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছিলেন। টুর্নামেন্ট জয়ের কয়েকদিন পর, ৩৩ বছর বয়সি বরুণ চক্রবর্তী টেস্ট ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে, তিনি তার একটি সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করেন, যা দীর্ঘতম ফরম্যাটে খেলার ক্ষেত্রে তার জন্য বড় বাধা হতে পারে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বরুণ তার প্রথম ম্যাচ খেলেন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে। সেখানে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর, তিনি সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ও ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুইটি করে উইকেট শিকার করেন।
সম্প্রতি, ভারতের প্রাক্তন স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলেছেন যে বরুণ চক্রবর্তীকে 'প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট' পুরস্কার দেওয়া উচিত ছিল, কারণ তিনি পুরো প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন এবং রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলে প্রয়োজনীয় 'এক্স-ফ্যাক্টর' যোগ করেছিলেন।
আরও পড়ুন … ‘কী খেয়েছি? এসব বিষয় আলোচনা না করে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলুন’ কাকে তুলোধনা করলেন বিরাট কোহলি?
টেস্টে খেলা নিয়ে কী বললেন বরুণ চক্রবর্তী?
একটি পডকাস্টে গোপীনাথের ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলার সময় বরুণ বলেন, ‘আমি টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রহী, কিন্তু আমার বোলিং স্টাইল টেস্ট ক্রিকেটের উপযোগী নয়।’
বরুণ চক্রবর্তী আরও বলেন, ‘আমার বোলিং প্রায় মিডিয়াম পেসের মতো। টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে ২০-৩০ ওভার বল করতে হয়। আমি আমার বোলিং দিয়ে এটা পারবো না। যেহেতু আমি দ্রুতগতিতে বল করি, সর্বোচ্চ ১০-১৫ ওভার করতে পারি, যা লাল বলের ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই আমি এখন শুধুমাত্র ২০ ওভার ও ৫০ ওভারের হোয়াইট বল ক্রিকেটের ওপর মনোযোগ দিচ্ছি।’ উল্লেখ্য, বরুণ চক্রবর্তী পুরো টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন, তার চেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছিলেন কেবল নিউজিল্যান্ডের ম্যাট হেনরি।
শুরুটা করেছিলেন পেসার হিসেবে
বরুণ চক্রবর্তী কলেজ জীবনে একজন পেসার ছিলেন, তবে চোটের কারণে তিনি স্পিন বোলিংয়ে পরিবর্তিত হন। তার ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়েছিল উইকেটকিপার হিসেবে। বরুণ জানান, পেস বোলিং ছেড়ে দেওয়ার কোনও আক্ষেপ তার নেই, কারণ স্পিন বোলিংই তাকে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে এবং পরিচিতি এনে দিয়েছে।
পেস বোলিং ছাড়া নিয়ে বরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘না, আমার কোনও আফসোস নেই। এজন্যই আমি আজ এখানে আছি। আমি যদি পেস বোলিং চালিয়ে যেতাম, তাহলে হয়তো আটকে থাকতাম। প্রচুর পেসার আছে। তাছাড়া, তামিলনাড়ুর উইকেটে বল সুইং করে না। ওখানে উইকেট স্পিন-বান্ধব। এজন্য তামিলনাড়ু থেকে খুব কম পেসার উঠে আসে। এটা খুবই বিরল ঘটনা।’
বরুণ আরও যোগ করেন, ‘বালাজি ও নটরাজন আছেন, তবে অন্য রাজ্যে অনেক বেশি পেসার রয়েছে। আমি খুশি যে আমি পেস বোলিং ছেড়েছি। এমনকি (রবিচন্দ্রন) অশ্বিনও পেস বোলিং ছেড়ে স্পিনার হয়েছেন। তাই আমি সন্তুষ্ট।’
আরও পড়ুন … ‘একটাই তো তারকা, তাঁকে বাদ দিলে ক্রিকেট চলবে কী করে?’ বাবরের পাশে পাক প্রাক্তনী
কেকেআর-এ এসে নতুন করে নিজেকে চিনেছিলেন বরুণ চক্রবর্তী
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বরুণ চক্রবর্তীর পথচলা অনেক দূর এগিয়েছে। তার প্রথম আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ২০২১ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো যায়নি, কারণ তিনি একটিও উইকেট নিতে পারেননি। তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) হয়ে আইপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বরুণের কেরিয়ারে নতুন গতি এসেছে এবং তিনি জাতীয় দলে আবারও জায়গা করে নিয়েছেন।