১৭ বছরের কেরিয়ারের ইতি টানলেন ভারতীয় পেসার বরুণ অ্যারন। ভারতের ফাস্ট বোলার বরুণ অ্যারন সম্প্রতি সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন। ১৭ বছর দীর্ঘ পেশাদার কেরিয়ারে তিনি ভারতের হয়ে ১৮টি ম্যাচে ২৯টি উইকেট শিকার করেছেন এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬৬টি ম্যাচ খেলে ১৭৩টি উইকেট নিয়েছিলেন।
বরুণ অ্যারনের কেরিয়ারের স্মরণীয় মুহূর্তগুলো কী কী—
১) ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ব্যাটার স্টুয়ার্ট ব্রডকে বাউন্সার মেরে তার নাক ভেঙে দিয়েছিলেন।
২) দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান হাশিম আমলাকে দুর্দান্তভাবে আউট করেছিলেন।
৩) নিয়মিতভাবে ১৫০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে বল করে ব্যাটসম্যানদের ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন বরুণ অ্যারন।
৪) তবে এই গতির সঙ্গে চোটজনিত সমস্যা ছিল তার নিত্যসঙ্গী।
আরও পড়ুন… LSG-তে এত বাঁহাতি ব্যাটার! দল কি সমস্যায় পড়বে? টিমের কৌশল ফাঁস করলেন লখনউ-এর মেন্টর জাহির খান
বরুণ অ্যারনের কাঁধ ছোট বড় ছিল-
নিজের চোট নিয়ে সম্প্রতি টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বরুণ অ্যারন। তিনি এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন। দ্রুতগতির বোলিংয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বরুণ অ্যারন বলেন, ‘শুধুমাত্র একজন ফাস্ট বোলারই জানে, একজন ফাস্ট বোলার কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। ১৫০ কিমি গতিতে বল করতে হলে শরীরের সবটুকু শক্তি উজাড় করে দিতে হয়। অনেকে জানে না, কিন্তু আমার ডান কাঁধ বাম কাঁধের চেয়ে ২ সেন্টিমিটার ছোট, যে কারণে আমাকে বল ছাড়ার সময় বেশি ঝুঁকতে হতো। এই বায়োমেকানিক্যাল চ্যালেঞ্জগুলোর কারণে চোট পাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে গিয়েছিল।’
আরও পড়ুন… ভারতীয় জার্সিতে লেখা হবে না ‘পাকিস্তান’! Champions Trophy 2025-তে শুরু নতুন বিতর্ক
চোট ও কেরিয়ারের সঙ্গে লড়াই
৩৫ বছর বয়সে অবসর নেওয়া অ্যারন জানিয়েছেন, বিসিসিআই ও তার বাবা-মায়ের সমর্থন না থাকলে তিনি হয়তো ২৫ বছরেই অবসর নিয়ে ফেলতেন। বরুণ অ্যারন বলেন, ‘আমি আটটি স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের শিকার হয়েছি, যার মধ্যে ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে টানা তিনটি চোট ছিল। এটি আমার জন্য খুবই কঠিন সময় ছিল। এই সময়গুলোতে আমি অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ডেনিস লিলির সঙ্গে আমার কথোপকথনগুলো মনে করতাম। তিনি একবার বলেছিলেন, কীভাবে তিনি কেরিয়ার-বিপর্যয়ী স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের পরও ফিরে এসেছিলেন, যখন কোনও টেকনিক্যাল সহায়তা ছিল না। আমি কেবল নিজেকে বিশ্বাস করতাম এবং সেই বিশ্বাসই আমাকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছে।’
আরও পড়ুন… ভিডিয়ো: মিষ্টি দই থেকে বাংলা ভাষা, ইডেন গার্ডেন্সে পা দিতেই স্মৃতির সাগরে ডুব দিলেন সূর্যকুমার যাদব
ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে স্মরণীয় তর্কাতর্কি
মাঠের আগ্রাসী মানসিকতার জন্যও বরুণ অ্যারন পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে ২০১৪ সালের অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে তার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় আলোচনার বিষয় হয়েছিল। বরুণ অ্যারন বলেন, ‘সেই ঘটনাটা খুব মনে পড়ে। ভারতীয় দল জানত যে ওয়ার্নার আমাদের জন্য বড় উইকেট। আমি ওকে আউট করার পর বিদায়ী বার্তা দিয়েছিলাম, কিন্তু পরে দেখা গেল আমি সামান্য ওভারস্টেপ করেছিলাম, তাই আউটটি বাতিল করা হয়। ওয়ার্নার ফিরে এসে আমাদের পাল্টা জবাব দেয়। ঘটনাটি সত্যিই মনে রাখার মতো ছিল।’
মায়াঙ্ক যাদবকে ভবিষ্যতের প্রতিভা হিসেবে দেখছেন অ্যারন
লখনউ সুপার জায়ান্টসের (LSG) পেসার মায়াঙ্ক যাদবকে নিজের মতোই আগ্রাসী ও আত্মবিশ্বাসী মনে করেন বরুণ অ্যারন। তিনি বলেন, ‘আমি মায়াঙ্ক যাদবের বোলিং খুব পছন্দ করি। ওর উচিত নিজেকে বিশ্বাস করা এবং গতি বজায় রাখা। আমরা জনসমর্থনের জন্য খেলছি না, নিজের জন্য খেলছি।’