ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলকে বেনজির আক্রমণ প্রাক্তন অজি ক্রিকেটার ইয়ান চ্যাপেলের। টেস্টে টু টায়ার সিস্টেম সম্পর্কে বলতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন এই প্রাক্তন অজি ক্রিকেটার। তিনি মনে করেন, যতদিন না আইসিসি একটি সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করবে ততদিন আর্থিক ভাবে সচ্ছল বোর্ডগুলি নিজেদের ইচ্ছামতো ক্রীড়াসূচি নির্ধারণ করে খেলা চালিয়ে যেতে থাকবে। চ্যাপেল মনে করেন টু টায়ার টেস্ট সিস্টেম চালু করার এটাই সঠিক সময়। তবে তিনি এও মনে করেন যে টেস্ট ক্রিকেটকে প্রাসঙ্গিক রাখতে অন্যান্য আরও জরুরি বিষয় রয়েছে, যেগুলির উপর নজর দেওয়া দরকার।
ইয়ান চ্যাপেল ESPN ক্রিকইনফোতে লেখা কলামে উল্লেখ করেছেন, ‘টু-টায়ার টেস্ট সিস্টেমের বিষয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন পেস-বোলিং চ্যাম্পিয়ন মাইকেল হোল্ডিং উল্লেখ করেছেন, অনেক সমালোচনা থাকতে পারে, তবে ফিফা অন্তত আসলে ফুটবল চালায়। আইসিসিকে অবশ্যই ক্রিকেট চালাতে হবে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘এখানে একটি বিভ্রান্তিকর সমস্যা রয়েছে। আইসিসি ক্রিকেট চালায় না এবং যদি এই ব্যবস্থার বড় পরিবর্তন না হয়, তাহলে আর্থিক ভাবে শক্তিশালী বোর্ডগুলি নিজেদের মতো করে ক্রীড়াসূচি তৈরি করতে থাকবে।’
চ্যাপেল মনে করেন বিশ্ব ক্রিকেটে ভারত যেই পরিমান অর্থ খরচ করে তার সমানুপাতে আইসিসির থেকে সুবিধাও পায়। তিনি লিখেছেন, ‘আর্থিক বণ্টন নিয়ে একটা বড় সমস্যা রয়েছে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড হওয়া সত্ত্বেও ক্রিকেট সংস্থাগুলির মধ্যে ভাগ করা মোট অর্থের একটি বড় অংশ দাবি করে। তারা আরও বেশি অংশের দাবিও জানিয়েছে। ক্রিকেট থেকে আইসিসি যা আয় করে তার প্রায় ৭০ শতাংশই হয় ভারতের কারণে। আর এটা একটি জটিল সমস্যা তৈরি করেছে, যার জন্য ক্রিকেট একটি কার্যকর সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না।’
এই অজি কিংবদন্তি মনে করেন বেশ কয়েক বছর আগেই টু-টায়ার টেস্ট সিস্টেম চালু করা উচিত ছিল আইসিসির। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগেই টু-টায়ার টেস্ট সিস্টেম চালু করা উচিত ছিল। বাস্তবে সীমিত সংখ্যক দলই দীর্ঘ মেয়াদে পাঁচ দিনের টেস্ট খেলতে সক্ষম। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্টেডিয়ামে লোক আনার ক্ষমতা দিয়ে আর্থিক সহায়তার অধিকার অর্জন করেছে। ওদের টেস্ট ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে, যেটা একটা অপরাধ।’
ইয়ান মনে করেন টেস্ট ক্রিকেটে আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ডের মতো দলের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘প্রোমোশন এবং রেলিগেশন অন্তর্ভুক্ত এমন একটি সিস্টেম সম্ভব, কিন্তু একটি দলের টেস্ট খেলার অধিকার পাওয়ার বিষয়ে কিছু মানদণ্ড থাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত: তাদের দেশে কি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা হয়? তাদের টেস্ট ক্রিকেট আয়োজনের পরিকাঠামো আছে? তারা কি আর্থিকভাবে স্থিতিশীল? যদি একটি দল এই মানদণ্ডগুলি পূরণ করে এবং কয়েক বছর ধরে খেলার উচ্চ মান বজায় রাখে তাহলে টেস্ট খেলার ছাড়পত্র পেলে সেটা বৈধ বলে বিবেচনা করা হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তবে সাম্প্রতিক কালে যেই দেশগুলি টেস্ট খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে তার বেশিরভাগের খেলার কোনও অধিকার নেই। উদাহরণস্বরূপ, আফগানিস্তান কি তাদের দেশে টেস্ট সিরিজ আয়োজন করতে পারে? আয়ারল্যান্ডের কি পর্যাপ্ত টেস্ট খেলার মাঠ আছে? তালিবানদের নারীদের উপর আক্রমণের বিষয়টা সরিয়ে রাখি তারপরেও এই প্রশ্নের উত্তর হল একেবারেই না। তাহলে কেন তাদের টেস্ট খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হল? কারণ টেস্ট স্ট্যাটাসের বিনিময়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আইসিসিকে ভোট দেয়। আইসিসি আসলে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।’