মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া-এ দলের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টে ভারতীয়-এ দলের মেরুদণ্ড হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন ধ্রুব জুরেল। চাপের মুখে ম্যাচের দুই ইনিংসেই দুর্দান্ত ব্যাট করেন টিম ইন্ডিয়ার তরুণ উইকেটকিপার।
প্রথম ইনিংসে ভারত একসময় ১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল। সেখান থেকে ৮০ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে জুরেলই ভারতকে দেড়শো রানের গণ্ডি পার করান। দ্বিতীয় ইনিংসে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারতীয়-এ দল। তারা একসময় ৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে। সেখানে থেকে জুরেলের ৬৮ রানের দাপুটে ইনিংসে ভর করে ভারত ২০০ রানের গণ্ডি টপকায়।
যদিও ভারতকে সিরিজের দ্বিতীয় বেসরকারি টেস্টেও হারের মুখ দেখতে হয়। তবে বাকিদের ব্যর্থতার মাঝে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেয় ধ্রুব জুরেলের লড়াই। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, জুরেল এই প্রথমবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলতে নামেন। এমনটা নয় যে, তিনি বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ভারতীয়-এ দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় ছিলেন। বরং দ্বিতীয় ম্যাচের ঠিক আগেই রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের সংসারে যোগ দেন ধ্রুব। তা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার পিচের বাউন্স ও পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে যথাযথ মানিয়ে নেন জুরেল।
অস্ট্রেলিয়ার মাঠে প্রথমবার খেলতে নেমেই উপমহাদেশের তরুণ ব্যাটারদের সফল হওয়া সহজ নয় মোটেও। সেদিক থেকে নিজের পারফর্ম্যান্সে তৃপ্ত জুরেল। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মনোভাব প্রকাশ করতে পিছপা হননি। আসলে ধ্রুব জুরেল বোঝেন যে, ৫ ম্যাচের দীর্ঘ বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে মাঠে নামার সুযোগ পেতে হলে এরকমই পারফর্ম্যান্স উপহার দেওয়া জরুরি ছিল।
টুইটারে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ধ্রুব জুরেল লেখেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবার খেলতে নেমে উপভোগ্য ব্যাটিং। আরও শেখার জন্য এবং আরও বেশি অবদান রাখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’
স্পষ্ট বোধা যাচ্ছে যে, ধ্রুব জুরেল বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে মাঠে নামার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁর এই অবদান রাখার ইচ্ছা প্রকাশের বিষয়টিই চাপ বাড়াতে পারে টিম ম্যানেজমেন্টের উপরে।
আসলে শেষবার যখন জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন, জুরেলের পারফর্ম্যান্স নিয়ে ধন্য ধন্য রব ওঠে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে। তবে ঋষভ পন্ত জাতীয় দলে ফিরে আসায় স্কোয়াডে থেকেও আর মাঠে নামার সুযোগ হয় না তাঁর। জুরেলকে সময় কাটাতে হয় রিজার্ভ বেঞ্চেই। অবশ্য পন্ত চোট পেলে পরিবর্ত হিসেবে কিপিং করতে দেখা যায় তাঁকে।
জুরেল বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩টি টেস্টে মাঠে নামেন। তিনি ৪টি ইনিংসে ব্যাট করে ৬৩.৩৩ গড়ে ১৯০ রান সংগ্রহ করেন। হাফ-সেঞ্চুরি করেন ১টি। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ৯০ রানের। চাপের মুখে জুরেলের ব্যাটিং প্রশংসা কুড়িয়ে নেয় বিশেষজ্ঞদের।