চলতি বর্ডার গাভাসকর ট্রফির শুরু থেকেই উইকেট তুলছেন মহম্মদ সিরাজ। তবে শুরুর দিকে পরিচিত ছন্দে ছিলেন না তিনি। অস্ট্রেলিয়ার পিচে জসপ্রীত বুমরাহ যে রকম আগুন ঝরাচ্ছেন প্রতি ম্যাচেই, সিরাজের বোলিংয়ে সেই আঁচ চোখে পড়ছিল না। তবে সিরিজ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সিরাজের চমকও বাড়তে থাকে। সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ডিএসপি সিরাজ বুঝিয়ে দিলেন, জসপ্রীতের সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নিতে এই মুহূর্তে তাঁর জুড়ি নেই।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চলতি টেস্ট সিরিজ জেতার সুযোগ নেই ভারতের সামনে। তবে সিরিজ ড্র করে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি নিজেদের দখলে রাখার সুযোগ রয়েছে টিম ইন্ডিয়ার সামনে। তবে তার জন্য সিডনির শেষ টেস্টে জিততেই হবে ভারতকে। তাছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখতে হলে সিডনিতে জয় ছাড়া উপায় নেই বুমরাহদের।
অথচ এমন মহা গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ম্যাচে ভারত শুরুতে ব্যাট করে পর্যাপ্ত পুঁজি সংগ্রহ করে নিতে পারেনি। সিডনিতে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে টিম ইন্ডিয়া। তবে তারা প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৮৫ রানে অল-আউট হয়ে যায়। এমনটা নয় যে, এমন ছোটখাটো পুঁজি হাতে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে আগে বেকায়দায় ফেলেনি ভারতীয় দল। পার্থের প্রথম টেস্টেই এমনটা করে দেখিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। তবে তার জন্য দরকার ছিল শুরুতেই পালটা ব্যাট করতে নামা অজি শিবিরে ধাক্কা দেওয়ার।
জসপ্রীত বুমরাহ প্রাথমিক উইকেট তোলার কাজ যথাযথ করে দেখান। তিনি ইনিংসের ২.৬ ওভারে সাজঘরে ফেরান উসমান খোয়াজাকে। পরে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে অজি ইনিংসের ৬.২ ওভারে জসপ্রীত আউট করেন মার্নাস ল্যাবুশানকে। অস্ট্রেলিয়া দলগত ১৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বসে।
তবে স্যাম কনস্টাস বুমরাহর বিরুদ্ধে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে শুরু করেন। তিনি রিভার্স স্কুপে জসপ্রীতকে বাউন্ডারিও মারেন। কনস্টাস যদি তাঁর আগ্রাসী মেজাজ জারি রাখতেন, তবে ম্যাচের রাশ ভারতের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে বিশেষ সময় লাগত না। মহম্মদ সিরাজ এক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনায় জল ঢালেন। তিনি ইনিংসের ১২তম ওভারে সাজঘরে ফেরান দুই অজি তারকা স্যাম কনস্টাস ও ট্র্যাভিস হেডকে।
১১.২ ওভারে মহম্মদ সিরাজের বলে যশস্বী জসওয়ালের হাতে ধরা পড়েন স্যাম কনস্টাস। ৩৮ বলে ২৩ রান করেন তিনি। মারেন ৩টি চার। অস্ট্রেলিয়া ৩৫ রানে ৩টি উইকেট হারায়। ব্যাট করতে নামেন ট্র্যাভিস হেড। চলতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন হেড। তিনি মাঠে নেমে দ্বিতীয় বলেই চার মেরে বুঝিয়ে দেন যে, নিজের আগ্রাসী মেজাজ থেকে সরে আসছেন না। তবে হেডের সেই আগ্রাসনেও জল ঢালেন সিরাজ।
কনস্টাসকে ফেরানোর পরে সেই একই ওভারে ট্র্যাভিস হেডকেও আউট করেন মহম্মদ সিরাজ। ১১.৫ ওভারে সিরাজের বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ধরা পড়েন সদ্য ক্রিজে আসা ট্র্যাভিস। ১টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩ বলে ৪ রান করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে পড়ে যায়। সিরাজ এভাবেই জাবাব দেন গ্যালারি থেকে ক্রমাগত বিদ্রুপ করা অজি সমর্থকদেরও।