১৪তম ওভারে বল করতে এসেছিলেন কাগিসো রাবাদা। তাঁর ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে ভারতকে ১০০ রানের গণ্ডি পার করিয়ে দেন অক্ষর প্যাটেল। তবে ১৩.৩ ওভারে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান-আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন দুরন্ত ছন্দে থাকা অক্ষর। নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে আসেন তিনি। ৩১ বলে ৪৭ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় অক্ষরকে। মারেন ১টি চার ও ৪টি ছক্কা।
ডি'ককের কেরামতি
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি'ককের তীক্ষ্ণ ফিল্ডিং দক্ষতার কারণে ভারতের অলরাউন্ডার অক্ষর প্যাটেলকে সাজঘরে ফিরতে হয়। এতে ম্যাচের রং কিছুটা হলেও বদলে যায়। কারণ অক্ষর প্যাটেল ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপকে স্থিতিশীল করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলছিলেন।
অক্ষরের বড় ভুল
রান আউটের দোষটা অবশ্য পুরোটাই অক্ষরের। সময় থাকতেও ক্রিজে ঢুকতে পারেননি তিনি। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন এক্ষেত্রে। দায় এড়াতে পারেন না কোহলিও। শট খেলে পিছনে উইকেটরক্ষকের দিকে তাকিয়ে পিচের মাঝে চলে আসেন। অক্ষরের দিকে খেয়াল করেননি তিনি। যদিও কল ছিল অক্ষরেরই। ডি'কক সজাগ ছিলেন। এবং খেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন তিনি। লক্ষ্য করেন যে, অক্ষর প্যাটেল ক্রিজের বাইরে রয়েছেন। বল বাউন্ডারির দিকে যাওয়ার সময়েও, ডি'ককের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে নন-স্ট্রাইকারের প্রান্তে দ্রুত বল ছোড়েন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকান কিপারের মুখে হাসি চওড়া হয়। তিনি সরাসরি থ্রো-তে রানআউট করে দেন অক্ষরকে।
আরও পড়ুন: রোহিত সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন- কোহলির ছেলেবেলার কোচের মুখে হিটম্যান স্তুতি
১৭৬ রান করে ভারত
এদিন টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। যা খুবই স্বাভাবিক। হাই-প্রোফাইল ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে বিপক্ষের ঘাড়ে রান চাপিয়ে দেওয়াই সাধারণত দলগুলোর লক্ষ্য থেকে থাকে। ভারতেরও সেই লক্ষ্যই ছিল। শুরুটা খারাপ করেনি টিম ইন্ডিয়ার দুই ওপেনার বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। প্রথম ওভারে হয় ১৫ রানও। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারে কেশব মহারাজ এসে পরপর রোহিত শর্মা এবং ঋষভ পন্তকে ফিরিয়ে ভারতকে চাপে ফেলে দেন। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দেন কাগিসো রাবাদা। পঞ্চম ওভারে সূর্যকুমার যাদবকে ফিরিয়ে। শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলি এবং অক্ষর প্যাটেল মিলে দলের হাল ধরেন। ভালো ব্যাট করছিলেন তারকা অলরাউন্ডার।
আরও পড়ুন: কোহলিকে নিয়ে কোনও কথা বলবেন না, তিন-চার ম্যাচ না খেললে… বড় বয়ান প্রাক্তন অধিনায়কের
এই জুটি চতুর্থ উইকেটে ৭২ রান যোগও করে। তারা ভেঙে দেন গৌতম গম্ভীর এবং যুবরাজ সিং-এর রেকর্ড। ২০০৭ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালের সময় ৬৩ রান যোগ করেছিলেন। শনিবার বার্বাডোজে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচের সময় অক্ষর প্যাটেল এবং বিরাট কোহলি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে যে কোনও উইকেটে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়ে টপকে যান গৌতি-যুবির নজির।
অক্ষর হাফসেঞ্চুরি করতে না পারলেও, কোহলি এদিন হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন। ৪৮ বলে অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। ইনিংসে ছিল চারটি চার। ৫০ এর গণ্ডি পেরোনোর পর হাত খোলেন বিরাট। তখনও বাকি ৩ ওভার। শেষপর্যন্ত ৫৯ বলে ৭৬ রান করে আউট হন কোহলি। ইনিংসে ছিল ২টি ছয়, ৬টি চার। আর কোহলির হাফসেঞ্চুরির হাত ধরেই নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৬ রান করে ভারত।