শুক্রবার ডারবানে ১৪ ওভারেই ১৬০ রানের গণ্ডি টপকে যায় ভারত। হাতে ছিল ৮টি উইকেট। তা সত্ত্বেও শেষ ৬ ওভারে মোটে ৪০ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় ভারতীয় দল। এই ৬ ওভারে ৬টি উইকেট খোয়ায় টিম ইন্ডিয়া। একসময় ভারত ২৩০ রানের গণ্ডি টপকে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে সূর্যকুমারদের থামতে হয় ৮ উইকেটে ২০২ রানে।
যদিও ডেথ ওভারে ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামা নিয়ে বিন্দুমাত্র দুশ্চিন্তায় নেই ভারতের ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। দল ৬১ রানের বড় জয় তুলে নিলে এই সব বিষয় কোনও ক্যাপ্টেনের মাথাতেই থাকে না। সূর্য বরং খুশি নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগ্রাসী ব্র্য়ান্ডের ক্রিকেট উপহার দিতে পারায়।
ম্যাচের শেষে টিম ইন্ডিয়ার নতুন টি-২০ ক্যাপ্টেন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দল ঠিক কী ধরণের ক্রিকেট খেলতে চায়। সূর্যর স্পষ্ট দাবি, ম্যাচটা ২০ ওভারের। তবে যদি ১৭ ওভারে ২০০ টপকানো যায়, সেটার চেষ্টা করবেন না কেন?
পুরস্কার বিররণী অনুষ্ঠানে ডেথ ওভারে ভারতের পরপর উইকেট হারানো প্রসঙ্গে সূর্য বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট একটা প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। আমরা নিজেদের ক্রিকেট খেলার ব্র্যান্ড বদলাতে চাই না। ছেলেরা যেভাবে নির্ভিক ক্রিকেট উপহার দিয়েছে, ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার কাজ সহজ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা এরকমই ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চাই। যদি তাতে পরপর উইকেটও খোয়াতে হয়, তাও আমরা নিজেদের লক্ষ্যে স্থির থাকতে চাই। আমরা জানি এটা টি-২০ ক্রিকেট। আমাদের হাতে ২০ ওভার রয়েছে। তবে যদি ১৭ ওভারে ২০০ টপকানো যায়, কেন সেটার চেষ্টা করা হবে না!’
ডারবানে সঞ্জু স্যামসনের ধুমধাড়াক্কা সেঞ্চুরিই যে ভারতের জয়ের ভিত গড়ে দেয়, সেই বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করবেন না কেউই। স্যামসন ৭টি চার ও ১০টি ছক্কার সাহায্যে ৫০ বলে ১০৭ রান করে আউট হন। ভারতীয় দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন তিলক বর্মা (৩৩)।
স্যামসনের এমন ইনিংস সঙ্গত কারণেই ভারতের ক্যাপ্টেনকে খুশি করে। তবে সূর্যকে আপ্লুত শোনায় স্যামসনের নিঃস্বার্থ মানসিকতায়। আসলে হাতে বিস্তর ওভার থাকা সত্ত্বেও ৯০-এর কোঠায় দাঁড়িয়ে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি নিশ্চিত করার কথা ভাবেননি সঞ্জু। বরং দলের স্বার্থে বড় শট নেওয়ার চেষ্টা করেন। স্যামসন ৯২ রানে দাঁড়িয়ে ছক্কা হাঁকান এবং সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পৌঁছে যান।
ম্যাচের শেষে সূর্যকুমার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওর ইনিংসটা নিয়ে দারুণ খুশি। গত কয়েক বছরে যে রকম পরিশ্রম করেছে, যেভাবে একঘেঁয়ে কাজগুলো দিনের পর দিন করে গিয়েছে, তার ফল পাচ্ছে এখন। ও দলকে ব্যক্তিগত স্বার্থের উপরে রাখে। এমনকি ৯০-এ দাঁড়িয়েও চার-ছক্কা মারার চেষ্টা করেছে। এতেই প্রমাণ মেলে ওর নিঃস্বার্থ মানসিকতার। এই জন্যই ও আলাদা।’