আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাইব্রিড মডেলেই করার। ভারতীয় দলকে তাঁরা ম্যাচ খেলতে দেবে দুবাইতে। যদিও ২০২৭ পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রেই এমন হাইব্রিড মডেলের রাস্তা খোলা রাখতে চলেছে আইসিসি। আইসিসির এক সূত্র অনুযায়ী এই সিদ্ধান্তটা কার্যত নেওয়া হয় আইসিসির নয়া চেয়ারম্যান জয় শাহ এবং আইসিসির বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের বৈঠকে, দুবাইতে সেই বৈঠকে ছিল পাকিস্তানের প্রতিনিধিও। সকলেই সেখানে মেনে নেয় যে পাকিস্তানের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আরেক হোস্ট সংযুক্ত আরব আমিরশাহি যেখানে টিম ইন্ডিয়া তাঁদের ম্যাচ খেলবে।
আগামী ফেবরুয়ারি এবং মার্চ মাসে হতে চলা চ্যাম্পিয়নস ট্রফি প্রথমে পাকিস্তান চেয়েছিল সব ম্যাচেই নিজেদের দেশে করতে। তবে ভারত বেঁকে বসায় তাঁরা হাইব্রিড মডেলে রাজি হয়েছে, কিন্তু ২০৩১ সাল পর্যন্ত একইভাবে আইসিসির সব প্রতিযোগিতাতেই হাইব্রিড মডেল চেয়েছিল, যাতে তাঁদেরও ভারতে না খেলতে হয়। তাতে রাজি হয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত আইসিসি নাকি রাজি হয়েছে হাইব্রিড মডেলে প্রতিযোগিতা আয়োজনের ক্ষেত্রে।
এই সময় কালে ভারতে মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ২০২৫ সালে এবং ২০২৬ সালে পুরুষদের টি২০ বিশ্বকাপ হবে ভারত এবং শ্রীলঙ্কায়। পিসিবি দাবি করেছে, ২০২৬ টি২০ বিশ্বকাপের সময় পাকিস্তান তাঁদের ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কায়। এছাড়া পাকিস্তান যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে, সেই নিয়েও কথাবার্তা চলছে আইসিসির অন্দরে, জানিয়েছে একটি সূত্র।
আইসিসি পাকিস্তানের আবেদনে সাড়া দেওয়া মানে, ভারতীয় মহিলা দলকেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে অন্য দেশে যেতে হবে। কারণ লিগ ম্যাচে দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার কথা। আগেই পাকিস্তান বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহসিন নকভি বলেছিলেন, ক্রিকেটের স্বার্থে তাঁরা সবরকমের সিদ্ধান্ত নিতে রাজি। ক্রিকেট যেন জেতে, কিন্তু নিয়ম এবং সম্মান সকলের জন্য যাতে সমান হয়। সেই অনুযায়ী আইসিসির কাছে তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন পাল্টা হাইব্রিড মডেলের।
এই সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি প্রকাশ নিয়ে আর তেমন কোনও সমস্যা রইল না। ফলে সমর্থক এবং সম্প্রচারকারী সংস্থা, দুজনেই হাঁফ ছেড়ে বাচলেন। সম্প্রচারকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী অন্তত প্রতিযোগিতা শুরুর ৯০ দিন আগে সূচি প্রকাশ করতে হত আইসিসিকে, যদিও তাঁরা সেকাজে ব্যর্থ হয়।
সম্প্রচারকারী সংস্থার তরফ থেকে দুবাইয়ে বৈঠকের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন প্রতিনিধিরা। তাঁরা হাইব্রিড মডেলে ঠিক কীভাবে ম্যাচ হবে এবং সূচির সম্পর্কে খুটিনাটি জেনে নেওয়ার জন্য গেছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠক শনিবার পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। এর আগে পিসিবি বাড়তি মুনাফাও দাবি করেছিল আইসিসির থেকে, যদিও তা নিয়ে এখনও কোনও কথা হয়নি।
২০০৮ সালে মুম্বইয়ে জঙ্গী হামলার পর থেকে আর পাকিস্তানে যায়নি ভারত, সেই হামলায় ১৫০ জন প্রাণ হারান। দুই দল শেষবার দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে ২০১২ সালে। সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে ভারত জানিয়ে দেয় আইসিসিকে যে তাঁদের পক্ষে পাকিস্তানে খেলতে যাওয়া সম্ভব নয়। এর আগে আইসিসিও একাধিকবার বলেছে, সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে কোনও দেশ খেলতে আসবে, সেটা তাঁরা আশাও করে না।