এজবাস্টনের গ্যালারি জুড়ে তখন মেক্সিক্যান ওয়েভ। টেস্টের অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ রবিবার স্বভাবতই দর্শকাসন ছিল ভরাট। গ্যালারি জুড়ে তখন প্রতিটা বল-এ ভারতের জয়ধ্বনি.. স্লোগান.. জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে উল্লাস সমর্থকদের। দ্বিতীয় ইনিংসের শেষের দিকে খেলা যত এগোয় ভারতের পকেটে আসা প্রতিটা উইকেট ঘিরে ততই তুমুল উল্লাস চলে গ্যালারিতে! এই উচ্ছ্বাস উদযাপনের মধ্যে দিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটের টেস্টের ইতিহাসে এক মাহেন্দ্রক্ষণে ‘প্রিন্স’ গিলের বিজয়রথের চাকা গড়িয়ে গেল। ৩৩৬ রানে ইংরেজভূমে রাজকীয় জয় ছিনিয়ে নিল শুভমন গিলের ভারত!
এজবাস্টনে ভারতের জয়ের খরা কাটিয়ে ভারতের নতুন প্রজন্মের টেস্ট টিম দাপটে জিতে নিল অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকার ট্রফির দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। এর আগে এজবাস্টনে কোনও টেস্ট ম্যাচই পকেটে পুরতে পারেনি ভারত। ২৫ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন গিলের ভারত সেই না পারার ক্ষত সরিয়ে জিতে নিল এই ম্যাচ। উল্লেখ্য, ম্যাচের প্রথম থেকেই ভারতের দাপুটে ব্যাটিং এ ভর করে ‘ম্যামথ টোটাল’ স্কোর বোর্ডে রাখেন গিল, পন্তরা। প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৫৮৭। তাতে একা অধিনায়ক শুভমনের অবদান ছিল ২৬৯র এক ঝকঝকে ইনিংস। তার জবাবে আসে ইংল্যান্ডের তরফে ৪০৭ রান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও ‘পঞ্জাব দা পুত্তর’ শুভমন গিলের শতরান ভারতের জয়ের মাটি শক্ত করে দেয়। ভারতের লম্বা ইনিংস গিয়ে থামে ৪০৭ রানে। এরপর ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই ব্যাকফুটে ছিল বেন স্টোকসের দল।
এজবাস্টনের এই ব্যাজবল টেস্ট গড়ায় রুদ্ধশ্বাস পঞ্চম দিনে।যদিও পঞ্চম দিনের শুরুতেই ইংল্যান্ডের আকাশের মেঘ অনেককেই দুশ্চিন্তায় ফেলে। এরপর শুরু হয় বৃষ্টি। পরে মেঘ যেমন কাটে, তেমনই দুশ্চিন্তার মেঘও কাটে। ২২ গজে নেমেই বোলিং ভেল্কি শুরু হয় আকাশদীপ, প্রসিদ্ধদের। আকাশদীপ নিয়েছেন ৬, সিরাজ ১, প্রসিদ্ধ ১, রবীন্দ্র ১, সুন্দর ১ টি উইকে নিয়েছেন পঞ্চম দিনে।
অন্যদিকে, ডাইভ দিয়ে টং-র অবিশ্বাস্য ক্যাচ হাতে তুলে ‘মিঞা ম্যাজিক’ দেখিয়েছেন ডিএসপি সিরাজও! সব মিলিয়ে, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি পরবর্তী ভারতীয় টেস্ট টিম ইংল্যান্ডের বুকে এক নতুন অধ্যায় লিখল এই জয় দিয়ে। সেই অধ্যায় কি ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ‘গিল-অধ্যায়’ নামে পরিচিত হবে? উত্তর নিশ্চয়ই রয়েছে ক্রিকেট দেবতার কাছে। তবে আপাতত যে এই সিরিজে ইংরেজদের হোয়াইট ওয়াশ করে সিরিজের রাশ ধরে রাখল ভারত।