বডি ল্যাঙ্গোয়েজই বলে দিচ্ছিল কতটা চাপে আছেন তিনি। নানান সময় উত্তর দিতে গিয়ে একেবারে গরমও হয়ে গেলেন। সঞ্জয় মঞ্জরেকর পরে বললেন যে বিসিসিআইয়ের কখনো গম্ভীরকে প্রেস কনফারেন্সে পাঠানো উচিত নয়। উনি মিডিয়া হ্যান্ডেল করতে পারছেন না। প্রকাশ্যে যদিও কোনও চাপের কথা স্বীকার করতে রাজি নন গম্ভীর। আইপিএল জয়ী মেন্টর যেভারে রাতারাতি হিরো থেকে জিরো হয়েছেন ভারতীয় ফ্যানদের চোখে, যেভাবে নিন্দার সুনামি উঠেছে তাঁর এক একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে, তাতে যে কোনও মানুষ কিছুটা বিচলিত হবেনই। গম্ভীর যদিও বলছেন, এটা তিনি আগেই জানতেন, এটা পার্ট অফ দ্য জব।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে লজ্জাজনক ভাবে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছিল ভারতকে। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল সমালোচনা শুনতে হয়েছিল কোচ গৌতম গম্ভীরকে। প্রশ্ন উঠেছিল তাঁর পরিকল্পনা এবং কৌশল নিয়েও। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়, ম্যানেজমেন্ট গম্ভীরের সিদ্ধান্তে খুশি নয়। এবার সমালোচকদের একহাত নিলেন গম্ভীর। একই সঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, তাঁর উপর কোনও বাড়তি চাপ কাজ করছে না। একই সঙ্গে দলের উপর তাঁর পুরো আস্থা রয়েছে বলেও জানিয়ে দেন।
অস্ট্রেলিয়ায় উড়ে যাওয়ার আগে মুম্বইয়ে রবিবার এক প্রেস মিটে গম্ভীর বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া আমার জীবনে এবং কারও জীবনে কী পার্থক্য গড়ে দিয়েছে? যখন আমি এই চাকরিটি নিয়েছিলাম, আমি সবসময় জানতাম যে এটি একটি অত্যন্ত কঠিন কাজ এবং একটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজও হতে চলেছে। আমি মনে করি না যে আমি কোনও চাপ অনুভব করছি। কারণ আমি আমার কাজের প্রতি একেবারে সৎ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ড্রেসিংরুমে কিছু অত্যন্ত দৃঢ় মানসিকতার লোক আছে, যারা দেশের হয়ে কিছু দুর্দান্ত জিনিস অর্জন করেছে এবং দেশের জন্য আরও কিছু দুর্দান্ত জিনিস অর্জন করতে থাকবে। তাই তাদের কোচিং করা এবং ভারতের কোচিং করাটা একটি পরম সম্মানের বিষয়।’
এদিন গৌতম গম্ভীর বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার পাশে দাঁড়িয়েছেন। জবাব দিয়েছেন রিকি পন্টিংকেও। কয়েকদিন আগে কোহলি কেন খারাপ পারফরম্যান্স করার পরও প্রথম একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অজি কিংবদন্তি। ভারতীয় দলের হেড কোচ সাফ বলে দেন এনিয়ে তাঁর মাথাব্যথার কোনও কারণ নেই, তিনি অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের কথা ভাবুক। উল্লেখ্য, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি শুরু হবে ২২ নভেম্বর। তার আগে ভারতীয় ক্রিকেট টিম ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। সেখানে মোট ৫টি টেস্ট খেলা হবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিরিখে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজ। বর্তমানে ভারত WTC-এর পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ১ নম্বরে অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে জায়গা করে নিতে ভারতকে এই সিরিজ বড় ব্যবধানে জিততেই হবে। আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে WTC-এর ফাইনাল। সেখানে জায়গা করে নেওয়াই এখন প্রধান লক্ষ্য কোচ গম্ভীর এবং বাকিদের। তবে লড়াইটা সহজ হবে না, ঘরের মাঠে সিরিজ হারতে চাইবে না অস্ট্রেলিয়াও।