মুম্বইয়ের ওয়াঙ্খেড়ে স্টেডিয়ামে যেখানে এক দশক আগে ওডিআই বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারতীয় দল, যেখানে এক বছর আগে বিশ্বকাপের মঞ্চেও দাপট দেখিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই ওয়াঙ্খেড়ে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের কাছেই লজ্জার হার স্বীকার করতে হল ভারতীয় দলকে। এমনিতে বড় রান তাড়া করতে নেমে হারলে অন্য বিষয় হত, তবে ভারতীয় দল টেস্টের তৃতীয় দিনে মাত্র ১৪৭ রান তাড়া করতেও পারল না।
আরও পড়ুন-খারাপ ভাগ্য না দায়সারা ক্রিকেট! বিরাটের রান আউট নিয়ে উঠল প্রশ্ন! আবার বিপদে ভারত…ভিডিয়ো
টেস্টে লজ্জার রেকর্ড রোহিতের দলের-
ভারতীয় ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ হেরে এমনিতেই কোনঠাসা অবস্থায় ছিল। ক্রিকেটারদের ওপর কতটা মানসিক চাপ তৈরি হয়েছিল সেটা বোঝা গেছিল মুম্বইতে প্রথম ইনিংসেও। যেখানে কিউয়িদের রান তেমন বেশি না থাকলেও স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকা ভারতীয় ব্যাটাররা অধিকাংশই ফ্লপ হয়েছিলে।এবার আরও লজ্জার রেকর্ড রোহিতের।
আরও পড়ুন-কিং নন, ‘কিং মেকার’ রোহিত! তাঁর এই স্বার্থত্যাগে অটুট মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের দূর্গ…
স্পিন অস্ত্রেই জব্দ টিম ইন্ডিয়া-
ভারতীয় ব্যাটারদের স্পিন খেলার ক্ষেত্রে অসহায়তা নিউজিল্যান্ড স্পিনাররা এদেশে এসে বারবার বুঝিয়ে দিলেন। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ওডিআই সিরিজেও স্পিন খেলতে না পেরেই হেরেছিল ভারত। কয়েক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও মেহেদি হাসান মিরাজ বেশ ভালো চাপে রেখেছিল বিরাট, রোহিতদের। কিন্তু বাংলাদেশ দলে আর তেমন ভালো মানের স্পিনার না থাকায় তাঁরা চাপে ফেলতে পারেনি। কিন্তু নিউজিল্যান্ড দল স্পিনারদের বৈচিত্র দিয়েই টেক্কা দিয়ে দিল রোহিত শর্মার দলকে।
দেশের মাটিতে ২০০-র কম টার্গেট চেজ করতে ব্যর্থ ভারত-
এই প্রথমবার ভারতীয় দল নিজেদের দেশের মাটিতে ২০০ রানের কম টার্গেটও তাড়া করে জিততে পারল না। যে দলে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মতো তাবর তাবর ব্যাটাররা রয়েছেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে ব্রিজটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২০ রানের টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি ভারত। ২০১৫ সালে গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ১৭৬ রানের টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি ভারতীয় দল। ২০১৮ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এজবাস্টন টেস্টে ১৯৪ রানের টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। তবে সবই ছিল বিদেশের মাটিতে। এই প্রথমবার ভারতীয় দল ১৪৭ রানের কম টার্গেটও দেশের মাটিতে তাড়া করে জিততে পারল না, যা আক্ষরিক অর্থেই লজ্জাজনক।
ভুল স্ট্র্যাটেজিতেই হার ভারতের-
মনে করা হয়েছিল পুণে টেস্টের হার থেকে হয়ত শিক্ষা নেবে ভারতীয় দল। মুম্বইতে হয়ত স্পিন সহায়ক উইকেট থেকে বেরিয়ে স্পোর্টিং উইকেট করা হবে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট আবারও স্পিন সহায়ক উইকেটই চায় কিউরেটরের থেকে। ব্যাস যা হওয়ার তাই হল। দ্বিতীয় টেস্ট আর তৃতীয় টেস্টের মাঝে থাকা তিন-চারদিন সময়ের মধ্যে যে ভারতীয় ব্যাটারদের পক্ষে কোনও জাদুবলে স্পিন খেলার টেকনিক ১০০ শতাংশ রপ্ত হওয়া সম্ভব নয়, এই সহজ তথ্যটাই বোঝেননি গম্ভীররা। তাই তাঁদের স্ট্র্যাটেজিগত গলদটাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছিলেন ম্যাচে ১১ উইকেট নেওয়া কিউয়ি স্পিনার আজাজ প্যাটেল।