চলতি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে পাওয়ারপ্লে সবচেয়ে বেশি রান করছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এটা করার জন্য তারা নতুন একটা স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছে, আসলে বলা ভালো একটি নতুন টেমপ্লেট খুঁজে পেয়েছে সানরাইজার্স হয়াদরাবাদ। সেই কারণেই প্যাট কামিন্সের দল আইপিএল-এ রানের নতুন ইতিহাস গড়ে চলেছে। এবার সানরাইজার্স হয়াদরাবাদের সাফল্যের রসায়ণ ফাঁস করলেন ট্র্যাভিস হেড।
ট্র্যাভিস হেড হলেন এই পরিকল্পনার অন্যতম স্থপতি। তিনি প্রকাশ করেছেন যে ধারণাটি আসলে কী। তিনি বলেন, অভিষেক শর্মার সঙ্গে একটি অবিচলিত ওপেনিং পার্টনারশিপ ত্বরান্বিত করা, কিছু শক্তিশালী হিট দিয়ে যাত্রা শুরু করা এরপরে এনরিখ ক্লাসেনের যোগ দেওয়ার পরে প্রতিপক্ষ বোলার ও দলকে কিছু ভাবতে না দেওয়া। এই ধরনের কৌশলের সঙ্গে ট্র্যাভিস হেড প্রায়শই ২০০-র কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট বজায় রেখে রান করে চলেছেন।
নিজেদের খেলার কৌশল নিয়ে কী বললেন ট্র্যাভিস হেড?
শুক্রবার একটি নির্বাচিত মিডিয়া ইন্টারঅ্যাকশনের সময় ট্র্যাভিস হেড বলেন, ‘এটা নির্ভর করে আপনি কোথায় খেলছেন এবং আপনি কীভাবে আপনার ব্যাটিং লাইন আপ গঠন করছেন তার উপর। এখানে সানরাইজার্সে, লক্ষ্য ছিল পাওয়ারপ্লে নিয়ন্ত্রণ করা এবং পাওয়ারপ্লেতে আক্রমণাত্মক হওয়া।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এবং অভি (অভিষেক) এবং ক্লাস (ক্লাসেন) এটা করতে সক্ষম। সুতরাং, এটা শুধু একটি খেলা। প্রতিটি দলেরই আলাদা আলাদা পরিচয় এবং ভিন্ন ভিন্ন খেলার পরিকল্পনা রয়েছে এবং আমরা যে ধরনের ব্যাটিং পেয়েছি তা দিয়ে পাওয়ারপ্লেকে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে চাই।’
গত কয়েক মাস ট্র্যাভিস হেডের জন্য বেশ ঘটনাবহুল ছিল। অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করার পর, হেড সানরাইজার্সের সঙ্গে আইপিএলে ফিরে এসেছেন এবং এখন পর্যন্ত পাঁচটি ম্যাচ থেকে ২৩৫ রান সংগ্রহ করেছেন। বেশ কিছু হতাশাজনক অভিযানের পর, বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের নেতৃত্বে সানরাইজার্স একটি আত্মবিশ্বাসী ইউনিট হিসেবে পরিনত হয়েছে।
ট্র্যাভিস হেড বলেছেন, ‘আমরা সবসময় খেলার রাশ নিজেদের হাতে রাখার চেষ্টা করি, সে কারণেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি আমরা। এবং পুরো ব্যাটিং লাইনআপ জুড়ে আমাদের একটা বার্তা থাকে। আপনাকে ঝুঁকি নিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা শুধ একটা জায়গা নয়, আমরা সর্বত্র এই ভাবে মেরে খেলি। আমরা একটি ইতিবাচক মানসিকতা রাখতে চাই, এবং আমি মনে করি আমরা কোথায় বল মারার চেষ্টা করব এবং কাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করব সে সম্পর্কে আমরা সত্যিই ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের এটি করার আগে অনেক কথোপকথন হয় এবং এটি এই মুহূর্তে সত্যিই চমৎকার কাজ করছে।’
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়ে কী বললেন ট্র্যাভিস হেড?
ট্র্যাভিস হেডের মতে, টি-টোয়েন্টির মতো দ্রুত বিকশিত ফর্ম্যাটে বহু বিতর্কিত ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়মটি প্রকৃতপক্ষে প্রভাব ফেলেছে। এই বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি গত কয়েক বছর ধরে খুব বেশি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলিনি, কিন্তু গত ১২ মাসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দলে ফিরে এসেছি। এই নিয়মটি আসার ফলে সাত ও আট নম্বরেও আপনার ভালো ব্যাটার থাকবে। ফলে আপনি মন খুলে খেলার চেষ্টা করতে পারেন। কারণ আপনার ব্যাটিং লাইনের গভীরতা অনেকটা হয়। আইপিএলে এই মুহূর্তে সেরা হিটাররা ৬ বা সাত নম্বরে এসেছেন। আপনি (আন্দ্রে) রাসেল বা রিঙ্কু সিং-এর মতো ছেলেদের দিকে তাকান এবং এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে প্রতিফলিত করে।’
এরপরে ট্র্যাভিস হেড বলেন, ‘যখন আপনি কয়েক সপ্তাহ পরে বিশ্বকাপে খেলতে যাবেন, তখন আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, ইংল্যান্ড দল এবং অস্ট্রেলিয়ান দলগুলির মধ্যে ছয় থেকে আট নম্বরের মধ্যে অনেক পাওয়ার হিটারকে দেখতে পাব। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়মটি ব্যাটারদের ফ্রেন্ডলি করে, তবে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেও প্রতিফলিত করে...’