পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আক্রম আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ২০২৪ আইপিএলের কোয়ালিফায়ার ওয়ানের হাই-ভোল্টেজ ম্যাচের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলারদের সম্পর্কে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে সতর্ক করেছেন। কেকেআর ১.৪২৮-এর সর্বকালের সর্বোচ্চ নেট রানরেট নিয়ে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে থেকে লিগ পর্ব শেষ করেছে। তারা এবার টিম হিসেবে ক্রিকেট খেলছে এবং নাইটরা নিজেদের ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় বিভাগেই অসাধারণ পারফর্ম করে আধিপত্য বজায় রেখেছে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদও কিন্তু প্রায় একই ধরনের টেমপ্লেট নিয়ে খেলছে। তবে তাদের ব্যাটিং বিভাগে আগ্রাসন কিছুটা হলেও নাইটদের চেয়ে বেশি। তবে কেকেআরের বিরুদ্ধে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে তারা। কারণ নাইটদের একটি শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ রয়েছে। লিগ পর্বে যখন দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন শ্রেয়স আইয়ারের দল টানটান উত্তেজনার ম্যাচে ৪ রানে জিতেছিল কেকেআর।
কিন্তু সেই দলের সঙ্গে আজকের সানরাইজার্সের অনেক পার্থক্য আছে। প্রথম ম্যাচ হওয়ায় কিছুটা অগোছালো ছিল কামিন্সদের দল। তা সত্ত্বেও ম্যাচ প্রায় বার করে নিচ্ছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। কোনওক্রমে শেষ ওভারে জেতে কেকেআর। বর্তমানে দারুণ ছন্দে রয়েছে হায়দরাবাদের ব্যাটিং। প্রত্যেক ম্যাচেই বড় রান তুলছে। আইপিএলের ইতিহাসে সর্বাধিক রান সানরাইজার্সের দখলে। লিগ পর্বে কার্যত প্রত্যেক ম্যাচেই ব্যাটিং ঝড় দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে পাওয়ার প্লে-তে। বিধ্বংসী মেজাজে শুরু করছেন ট্র্যাভিস হেড এবং অভিষেক শর্মা। তাই এই ম্যাচ নাইট বোলারদের কাছে অ্যাসিড টেস্ট। উইকেটের মধ্যে আছেন সুনীল নারিন, বরুণ চক্রবর্তী, হর্ষিত রানারা। এদিনও একই ছন্দ ধরে রাখতে হবে তাঁদের। পাশাপাশি সতীর্থের বিরুদ্ধে মিচেল স্টার্ককেও বড় ভূমিকা নিতে হবে। শুরুতে হেড এবং স্টার্কের দ্বৈরথের উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে।
আরও পড়ুন: কোন বিষয় চিন্তায় রাখছে নাইটদের?কোথায় এগিয়ে হায়দরাবাদ?কী হবে ২ দলের একাদশ? জানুন যাবতীয় খুঁটিনাটি
কেন নাইটদের এগিয়ে রাখছেন আক্রম?
স্পোর্টসকিডায় এক সাক্ষাৎকারে আক্রম বলেছেন, ‘পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে কেকেআর শেষ করার পিছনে ওদের বোলিংই অন্যতম প্রধান কারণ। উইকেট নেওয়ার মতো বোলার রয়েছে। যে দলগুলো উইকেট নেবে, তারাই ম্যাচ জিতবে। আপনি যদি দেখেন, (বরুণ) চক্রবর্তী ১৮টি, হর্ষিত রানা ১৬টি, অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল এবং সুনীল নারিনের ১৫টি করে এবং মিচেল স্টার্কের ১২টি উইকেট রয়েছে। স্টার্ক একক ভাবে নাইটদের একটি ম্যাচ জিতিয়েওছে। ওরা নিশ্চিত ভাবেই খুব ঠাণ্ডা মাথায়, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এবং খুব বিপজ্জনক দল হিসেবে ফাইনালে উঠতে চলেছে।’
আরও পড়ুন: ধোনির সঙ্গে হাত না মিলিয়ে সেলিব্রেশনে মেতেছিল RCB, তীব্র নিন্দে করলেন ভন, হর্ষ
আক্রম অতীতে কেকেআর-এর কোচ ছিলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, কেকেআর এখনও পর্যন্ত একটি নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন দেখিয়েছে, যা তাদের পক্ষে কার্যকরী হয়েছে। তাঁর মতে, ‘প্রায় সবাই পারফর্ম করছে, ওরা মনীশ পান্ডেকে একটি ম্যাচ খেলিয়েছে এবং সেও নজর কেড়েছে। সুতরাং ওরা যে আত্মবিশ্বাসী, তা স্পষ্ট বেঝা যাচ্ছে। ওদের আগ্রাসন আছে, কিন্তু ওরা সেই আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ করেছে। ওরা কিন্তু উদাসীন বা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী নয়। অর্থাৎ আত্মতুষ্টিতে ভুগছে না।’
সল্টের অনুপস্থিতি চাপে রাখবে নাইটদের
ওপেনিং জুটি নিয়ে চিন্তা থাকবে নাইটদের। প্রত্যেক ম্যাচেই ফিল সল্ট এবং সুনীল নারিন জুটি দারুণ শুরু করছিল। কিন্তু দেশে ফিরে গিয়েছেন সল্ট। তাই বাধ্য হয়েই ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। সুনীলের সঙ্গে ওপেন করবেন সম্ভবত রহমানুল্লাহ গুরবাজ। শেষ দু'ম্যাচে এই ওপেনিং জুটিকে নিয়ে একটা মহড়া সেরে রাখতে চেয়েছিল কেকেআর। কিন্তু বৃষ্টিতে খেলা ভেস্তে যাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। আক্রমও মনে করেন, ফিল সল্টের অনুপস্থিতি টেবলের শীর্ষে থাকা খেলোয়াড়দের প্রভাবিত করতে পারে। তাঁর দাবি, ‘কোনও সন্দেহ নেই, ফিল সল্টের অনুপস্থিতি ওদের প্রভাবিত করবে।’