শুভব্রত মুখার্জি:- আইপিএলের ১৭টি মরশুমের ইতিহাস যদি দেখা যায় তাহলে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় আর তা হল সেরার সেরা কামব্যাক ঘটিয়েছে আরসিবি। চলতি মরশুমে তাদের প্রথম আট ম্যাচের মধ্যে সাতটিই হেরে গিয়েছিল আরসিবি। অতিবড় আরসিবি ভক্তও আশা করেননি তাঁর দল এবার প্লে অফে খেলতে পারে। তবে সেই ঘটনাই বাস্তবে ঘটেছে। পরপর ছটি ম্যাচ জিতে সমস্ত সমীকরণ মিলিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফের টিকিট নিশ্চিত করে নিয়েছে তাঁরা। তাদের এই জয়ে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তাদের অধিনায়ক ফ্যাফ ডু'প্লেসি। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন তিনি। তবে ম্যাচের শেষ ওভারে মাথা ঠান্ডা রেখে দলকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেওয়া যশ দয়ালকে তাঁর ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কারটি উৎসর্গ করেছেন ফ্যাফ ডু'প্লেসি।
আরও পড়ুন… বাংলা ফুটবলে লক্ষ্মীলাভ, IFA-র সঙ্গে তিন বছরে সাড়ে সাত কোটি টাকার চুক্তি করল শ্রাচী গ্রুপ
এ দিন ম্যাচে ৩৯ বলে ৫৪ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেন ফ্যাফ। ওপেনিংয়ে বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি বেঁধে দলের হয়ে বেশ ভালো শুরু করেন তিনি। ম্যাচ শেষে ফ্যাফ ডু'প্লেসি জানিয়েছেন, ‘আমি আমার ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার যশ দয়ালকে উৎসর্গ করছি। আমি ওঁকে বলেছিলাম এই উইকেটে স্লোয়ার বল খুব কাজে আসবে। এই উইকেটে ওটাই সেরা অপশন। অসাধারণ একটা রাত। দুর্দান্ত পরিবেশ। ঘরের সমর্থকদের সামনে মরশুমে গ্রুপ পর্যায় শেষ করতে পারাটা খুব উপভোগ্য। এই উইকেটে প্রচুর বৃষ্টি পড়েছে। আমি কখনই চাইনি আর্দ্রতা উইকেটে প্রবেশ করুক। অনেকটা রাঁচিতে টেস্ট ম্যাচে পঞ্চম দিনের উইকেটের মতন ছিল উইকেটটা। আমাদের এই জয়ে একাধিক ব্যাটার যোগদান দিয়েছে। আমি খুব গর্বিত। আমরা কিন্তু ১৭৫ রান বাঁচাচ্ছি এই মানসিকতা নিয়ে বোলিং করেছি। বোলাররা আমাকে খুব সাহায্য করেছে। আমরা এদিন বলটা যতটা সম্ভব বদলানোর চেষ্টা করেছি। আমি সমর্থকদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা যখন জিতছিলাম না তখনও ওরা আমাদের পাশে থেকেছে। উইকেটটা ভালো ছিল এদিন।বল স্পিন করছিল। বল ২২ গজে গ্রিপ করে আসছিল।’
প্রসঙ্গত এ দিনের ম্যাচ থেকে প্লে অফ কোয়ালিফাই করতে সিএসকের শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ১৭ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন ধোনির মতন ম্যাচ ফিনিশার। প্রথম বলটাই ফুল টস দেন যশ। ধোনি লেগ সাইডের উপর দিয়ে বিরাট ছক্কা হাঁকান। বল যায় স্টেডিয়ামের বাইরে। তখনও মনে হয়নি যশ দয়াল এই রান বাঁচাতে পারবেন। এরপরের বলটাই যশ ফুলটস দিয়ে বসেন। ভাগ্য ভালো ছিল বলটা মিস টাইম করে ডিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ধোনি। ক্রিজে আসেন শার্দুল ঠাকুর। প্রথম বলটাই তাঁকে স্লোয়ার দেন যশ। মিস করেন ঠাকুর। এরপরের বলে জোরে ব্যাট চালাতে যান শার্দুল। বল তাঁর ব্যাটের কানাতে লেগে যায় থার্ড ম্যান অঞ্চলে। একটি রান নেন তিনি। স্ট্রাইকে ফেরেন সেট হয়ে থাকা রবীন্দ্র জাদেজা। সিএসকের পক্ষে তখন সমীকরণ ২ বলে ১০ রান করলেই প্লে অফ। এই অবস্থায় পরপর দুটি বল স্লোয়ার দেন যশ দয়াল। দুটিই মিস করেন রবীন্দ্র জাদেজা। ফলে প্রথম আট ম্যাচে সাতটি হেরেও এরপরে পরপর ছটি ম্যাচ জিতে সমস্ত সমীকরণ মিলিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফে জায়গা করে নিল আরসিবি। শেষ ওভারে নার্ভ ধরে রেখে আরসিবির নায়ক হয়েছিলেন যশ দয়াল।