তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন সরগরম হয়ে উঠেছিল ধারাভাষ্যকর ইশা গুহর বুমরাহকে নিয়ে কটূ মন্তব্য করা নিয়ে। এরপরেই লাইভ টেলিভিশনে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন এই প্রাক্তন ইংরেজ মহিলা ক্রিকেটার। শনিবার ধারাভাষ্য করার সময় তিনি বুমরাহকে ‘প্রাইমেট’ অর্থাৎ এক ধরণের বাঁদরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। ইশা ধারাভাষ্য করার সময় বুমরাহের বোলিং নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন,‘ও হচ্ছে এমভিপি (মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার)। তাই না? মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্রাইমেট।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘জসপ্রীত বুমরাহ এমন একজন বোলার যাকে নিয়েই সব কথা হবে। কিন্তু ওর ওপর সব ফোকাস থাকবে কেন? ও ফিট থাকবে কিনা সেই নিয়েও ওর ওপর নজর ছিল সকলের।’
ঘটনাটি অনেককে অতীতের ‘মাঙ্কি-গেট’ কাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দেয়। এরপর রবিবার টেস্টের তৃতীয় দিনে যখন ধারাভাষ্য করার জন্য উপস্থিত হন ইশা গুহ তখন তিনি শনিবারের ঘটনার জন্য ক্ষমা চান। তিনি বলেন, ‘গতকাল আমি কিছু মন্তব্য করেছিলাম, যেটার নানা রকম মানে বার করা হচ্ছে। আমি আমার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আমি সবসময় অন্যদের সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর চেষ্টা করি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আপনি যদি পুরো মন্তব্যটি শোনেন তাহলে দেখবেন আমি ভারতের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারের প্রশংসা করেছি। এবং আমি সবসময় তার প্রশংসা করি। আমি সবসময় সাম্যের পক্ষে। আমিও এমন একজন যে এই খেলার অন্তর্ভুক্তি এবং বোঝাপড়ার কথা চিন্তা করে নিজের ক্যারিয়ার কাটিয়েছে।’
ইশা গুহ তাঁর করা মন্তব্যের জন্য গভীর ভাবে দুঃখিত বলে জানিয়েছেন। তিনি এও স্পষ্ট করেছেন যে কারোর আবেগকে আঘাত করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। ইশা বলেন, ‘আমি তার কৃতিত্বের বিশালতা তুলে ধরার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু আমি ভুল শব্দটি বেছে নিয়েছি। তার জন্য, আমি গভীরভাবে দুঃখিত। দক্ষিণ এশীয় ঐতিহ্যের একজন হিসেবে আমি আশা করি লোকেরা বুঝতে পারবে যে সেখানে অন্য কোনও উদ্দেশ্য বা বিদ্বেষ ছিল না। আশা করব ঘটনাটি একটা এতো ভালো টেস্ট ম্যাচকে ছাপিয়ে যাবে না। আমি বিষয়টি কোন দিকে যায় সেদিকে নজর রাখব।’
এরপরেই সঙ্গে সঙ্গে প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রী নিজের প্রতিক্রিয়া দেন। তিনি ইশা গুহকে ‘সাহসী মহিলা’ হিসেবে অভিহিত করেন। শাস্ত্রী বলেন, ‘সাহসী মহিলা, লাইভ টেলিভিশনে ক্ষমা চাইতে দম লাগে। মানুষের ভুল করার অধিকার আছে, আমরা সবাই মানুষ। মুহূর্তের উত্তাপে, কখনও কখনও আপনার হাতে মাইক থাকলে এরকম ঘটনাগুলি ঘটতে পারে। এবার এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।’ উল্লেখ্য, জন্মসূত্রে ইশা বাঙালি, তাঁর পরিবার কলকাতার। তবে দীর্ঘদিন ধরেই ইংল্যান্ডে থাকেন তাঁরা, ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে গিয়েছে সংযোগ।