বিজয় হাজারে ট্রফির ষষ্ঠ ইনিংসে পঞ্চম শতরান হাঁকালেন করুণ নায়ার। শুধু তাই নয়, টানা চারটি ইনিংসে শতরান করলেন বিদর্ভের অধিনায়ক। যিনি রবিবার কোয়ার্টার ফাইনালে ৮২ বলে অপরাজিত ১২২ রান করে দলকে বিজয় হাজারে ট্রফির সেমিফাইনালে তোলেন। সেইসঙ্গে নিজের অভাবনীয় পরিসংখ্যানকে আরও অভাবনীয় করেন। এবার বিজয় হাজারে ট্রফির ছ'টি ইনিংসে মাত্র একবার আউট হয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) প্রাক্তন তারকা। সবমিলিয়ে ৬৬৪ রান করেছেন। একবার মাত্র আউট হওয়ায় গড় ৬৬৪-তে ঠেকেছে।
আর অধিনায়কের সেই দুর্দান্ত ফর্মের প্রভাব পড়েছে দলের উপরেও। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ৩৯ বল বাকি থাকতে ২৯২ রান তাড়া করে নয় উইকেটে জিতে সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে বিদর্ভ। আসলে রবিবার টস থেকেই রাজস্থানকে দাঁড়াতে দেয়নি করুণের দল। বোলিং থেকে ব্যাটিং- ভদোদরার মাঠে সবক্ষেত্রেই রাজস্থানকে নিয়ে ছেলেখেলা করেছে।
রাজস্থানকে দাঁড়াতেই দেয়নি বিদর্ভ
রবিবার টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করে বিদর্ভ। রাজস্থানকে রানই তুলতে দিচ্ছিল না। সঙ্গে উইকেটও তুলে নিতে থাকে। আট ওভারে রাজস্থানের স্কোর দাঁড়ায় দু'উইকেটে ১৯ রান। তারপর অবশ্য রাজস্থানের ইনিংস কিছুটা চাঙ্গা হয়। তৃতীয় উইকেটে ৭১ রান যোগ করেন দীপক হুডা এবং মহিপাল লোমরর। পঞ্চম উইকেটে ৭৯ বলে ৮২ রান যোগ করেন শুভম গাড়োয়াল এবং কার্তিক।
কেউ খুব একটা বড় স্কোর করতে না পারলেও মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারের সম্মিলিত প্রয়াসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ২৯১ রান ওঠে রাজস্থানের। ৬১ বলে ৬২ রান করেন কার্তিক। ৫৯ বলে ৫৯ রান করেন শুভম। ৪৫ রান করেন হুডা। ৩২ রান করেন লোমরর। ১৪ বলে ৩১ রান করেন দীপক চাহার। অন্যদিকে, বিদর্ভের হয়ে দারুণ বোলিং করেন যশ ঠাকুর। ১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে চার উইকেট নেন।
আর যশের পারফরম্যান্স থেকেই সেমিফাইনালে পৌঁছানোর অনুপ্রেরণা খুঁজতে হত রাজস্থানকে। কিন্তু সেটা একেবারেই করতে পারেননি দীপক চাহার, খলিল আহমেদরা। প্রথম উইকেটে ৯২ রান যোগ করেন ধ্রুব শোরে এবং যশ রাঠোর। ৪৯ বলে ৩৯ রান করে যশ ১৮.২ ওভারে আউট হয়ে যাওয়ার পরে রাজস্থানকে আর ম্যাচে ফিরতে দেননি করুণ এবং ধ্রুব।
দ্বিতীয় উইকেটে ১৫২ বলে অপরাজিত ২০০ রান যোগ করে হাসতে-হাসতে বিদর্ভকে সেমিফাইনালে তুলে দেন করুণ এবং ধ্রুব। ১৩১ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত থাকেন বিদর্ভের ওপেনার। মারেন ১০টি চার এবং তিনটি ছক্কা। আর করুণ নিজে ১৩টি চার এবং পাঁচটি ছক্কা মারেন। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৪৮.৭৮। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ধ্রুব।
এবারের বিজয় হাজারে ট্রফিতে করুণের পারফরম্যান্স
১) জম্মু ও কাশ্মীর: অপরাজিত ১১২ রান।
২) ছত্তিশগড়: অপরাজিত ৪৪ রান।
৩) চণ্ডীগড়: অপরাজিত ১৬৩ রান।
৪) তামিলনাড়ু: অপরাজিত ১১১ রান।
৫) উত্তরপ্রদেশ: ১১২ রান।
৬) মিজোরাম: ব্যাট করেননি।
৭) রাজস্থান (কোয়ার্টার ফাইনাল): অপরাজিত ১২২ রান।
কী কী রেকর্ড গড়েছেন করুণ?
১) দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে বিজয় হাজারে ট্রফির একটি সংস্করণের পাঁচটি শতরান করলেন করুণ। অর্থাৎ একটি সংস্করণের সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করলেন।
২) তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে টানা চারটি শতরান হাঁকানোর নজির গড়লেন করুণ। তাঁর আগে সেই কাজটা করেছেন দেবদূত পাডিক্কাল (২০২০-২১) এবং নারায়ণ জগদীশন (২০২১-২২)। একটানা সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে জগদীশনের ঝুলিতে। তিনি টানা পাঁচটি শতরান হাঁকিয়েছিলেন। আর বিশ্বের মধ্যে কুমার সাঙ্গাকারা এবং আলভিরো পিটারসেন টানা শতরান করেছিলেন ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটে।