শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভাইরাল রয়েছে করুন নায়ারের এক পোস্ট, যা তিনি কয়েকবছর আগে করেছিলেন এক্স হ্যান্ডেলে। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘ডিয়ার ক্রিকেট, গিভ মি ওয়ান মোর চান্স ’। অর্থাৎ ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর তাঁকে যখন তাঁর রাজ্য সংস্থার দলও ভুলে যেতে বসেছিল, তখনই খেলায় ফেরার এই কাতর আর্জি জানান তিনি।
আরও পড়ুন- BGTতে ব্যর্থ হলেও এখনই অবসর নয় বিরাটের! তবে টেস্ট দলে ঢুকতে দিতে হবে লাল বলে পরীক্ষা!
২০২২-২৩ সালটা খুবই খারাপ গেছিল তাঁর, কারণ তাঁর রাজ্য সংস্থার দলও ধরে নিয়েছিল তাঁর কেরিয়ার শেষের পথে। তাই প্রায় প্রত্যেক দিনই ঘন্টার পর ঘন্টা শুধুই তাঁর নেট সেশনে কাটত, মাঠে খেলতে নামার সুযোগ পেতেন না। এসবেরই জবাব তিনি দিয়েছেন বিজয় হাজারে ট্রফিতে বিদর্ভের হয়ে নিজের পঞ্চম শতরান এবং টানা চতুর্থ শতরান করে।
আরও পড়ুন-২০২২ সালের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন! রেগে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়েই বেরিয়ে গেলেন জকোভিচ
ভারতীয় দলে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, শুভমন গিলরা যখন ব্যর্থ, তখন করুণ নায়ার অপেক্ষা করছেন আরেকটি সুযোগের। সেই নিয়েই নায়ার শতরানের পর বলছেন, ‘যখন আমি ওই পোস্টটা করেছিলাম, সেই সময়টা আমার জন্য খুবই আবেগঘন জাচ্ছিল ’। তাঁর ১২২ রানের ইনিংসের সৌজন্যে রাজস্থানকে হারিয়ে সেমিতে উঠল বিদর্ভ।
আরও পড়ুন-SA20র ম্যাচে দুরন্ত ক্যাচ ব্রেভিসের! সাজঘরে ফিরলেন ডুপ্লেসিস! তবু জিতল জোবার্গই
করুণ বলছেন, ‘প্রায় ছয়-সাত মাস ধরে আমি কোনও ক্রিকেট খেলিনি তখন। আমি শুধুই যেতাম সেখানে, তিন ঘন্টা করে নেট নেশন নিয়ে চলে আসতাম। কোনও ফরম্যাটেই আমায় খেলানো হত না, আর সেই সময়টা আমার জন্য খুব কঠিনই ছিল। আমাকে এগিয়ে যেতে হত আর নিজেকে সময় দিতে হত। আমায় বিষয়টি থেকে বেরিয়ে নিজের স্কিলের ওপর কাজ করতে হত। তাই আমি তখন চেষ্টা করছিলাম, যদি একটা সুযোগ পাই নিজেকে প্রমাণ করার। তাই সুযোগ পাওয়ার পর আমি আর কাউকে সুযোগ দিতে চাইনি, আমায় ড্রপ করার। সেটার জন্য ধারাবাহিকভাবে রান করা দরকার ছিল, সেটাই আমি করার চেষ্টা করেছি’।
নিজের রাজ্য সংস্থার দল থেকেও ব্রাত্য হয়ে তিনি যোগ দেন বিদর্ভতে। সেই নিয়ে করুণ বলছেন, ‘আবে কুরুভিল্লা আমার অনূর্ধ্ব ১৯ সময়ের নির্বাচক ছিল, তাই কোনও দলে বিষয় নিয়ে আমি তার কাছে জেতে পারি। আমি তার কাছে সাহায্য চাওয়ায় আমায় বিদর্ভে খেলার সুযোগ করে দেয়। আমি ওনার কাছে কৃতজ্ঞ এখানে খেলার সুযোগ করে দেওয়ায়’।
২০২৩-২৪ রঞ্জি ট্রফিতে ৬৯০ রান ছিল তাঁর। এছাড়াও নর্দ্যাম্পটনশায়ারের হয়ে কাউন্টিতে তিনটি ম্যাচে তিনি করেছিলেন ৭৮. ১৫০ এবং ২১ রান। ২০২৪ সালের কাউন্টিতে ফিরে করেন দ্বিশতরান। এরপর রঞ্জিতেও করেন শতরান। আর বিজয় হাজারে ট্রফিতে এসে অপরাজিত ১১২ রানের স্কোর দিয়ে শুরু করে তাঁর বাকি ইনিংসে স্কোর অপরাজিত ৪৪, ১৬৩ , ১১১, ১১২ এবং ১২২। লিস্ট এ ক্রিকেটেও তিনি রেকর্ড গড়েছেন সম্প্রতি।
করুণ বলছেন, ‘আমি জানিনা কীভাব করছি এই পারফরমেন্স। আমার মনে হয় এমন পারফরমেন্স আসছে কারণ আমি একটা একটা করে ম্যাচ দেখছি। আগের ইনিংসের দিকে আর ফিরে তাকাচ্ছি না। এটা গোটা কেরিয়ার জুড়েই আমি করে এসেছি। যখন ক্রিকেট খেলতে পারতাম না, তখন স্বপ্ন দেখতাম ব্যাটিং করার। আর এখন সেটা করতে পারছি ’।