ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের হারের পর মহম্মদ রিজওয়ান, বাবর আজমদের ধুইয়ে দিচ্ছেন প্রাক্তনীরা। পাকিস্তানের প্রাক্তন তারকা বাসিত আলি তো রীতিমতো কটাক্ষ করে বলেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজকদের ভারতের কাছ থেকে ওডিআই ক্রিকেট খেলা শেখা উচিত।
পাকিস্তান যখন ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনাল সহ তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু'টিতেই হেরেছে, ভারত সেখানে ইংল্যান্ডকে ওডিআই সিরিজে ৩-০ উড়িয়ে দিয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স পেন্ডুলামের মতোই দুলেছে। কারণ তারা নিউজিল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে শুরু করেছিল এবং তার পরে ৩৫২ রান তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল। কিন্তু ফাইনালে তারা বোর্ডে মাত্র ২৪২ রান তুলতে সমর্থ হয়। যে রান কিউয়িরা সহজেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে তুলে নেয়।
আরও পড়ুন: এটা সত্যিই কঠিন… রান-আউট বিতর্ক নিয়ে MI কোচ মুখ খুলতেই আগুনে ঘৃতাহুতি
পাকিস্তানের খেলা বিশ্লেষণ করে এবং ভারতের পদ্ধতির সঙ্গে তুলনা করে, বাসিত বলেছেন যে, প্রথম বা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার উপর ভিত্তি করে কী ভাবে ওয়ানডে ইনিংস তৈরি করা যায়, তা বুঝতে অক্ষম পাকিস্তান টিম। বাসিত তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের একটি ভিডিয়োতে বলেছেন, ‘জানা উচিত কী ভাবে এই ধরনের (করাচি) পিচে রান করতে হয়। বোলারকে কী ভাবে ট্যাকল করতে হয়, সবটাই জানা উচিত, কিন্তু ওরা তা করতে পারেনি। নিজেদের মস্তিষ্ক ব্যবহার করতে হবে।’
বাবর আজম (২৯), মহম্মদ রিজওয়ান (৪৬), সলমন আগা (৪৫) এবং তৈয়ব তাহির (৩৮) শুরু করেছিলেন, কিন্তু তার পরে তাঁদের ইনিংসকে গতি দিতে পারেননি বাকিরা। যার ফলে পাকিস্তানকে বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হয়।
আরও পড়ুন: দরজায় কড়া নাড়ছে Champions Trophy, এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসটা জানা আছে? কী কী রেকর্ড রয়েছে জানেন?
বসিতের দাবি, ‘নিউজিল্যান্ডকে ভারতের সঙ্গে খেলতে দিন, আপনি (পার্থক্য) দেখতে পাবেন। (মিচেল) স্যান্টনার একটি লুপ্ত ফ্লাইট দিচ্ছিলেন, কারণ তিনি জানতেন যে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা এগিয়ে এসে মারবেন না। তবে ওকে (শুভমন) গিল, রোহিত (শর্মা), বিরাট (কোহলি), (শ্রেয়স) আইয়ার, (কেএল) রাহুল বা (হার্দিক) পান্ডিয়ার বিপক্ষে বলের জন্য এতটা ফ্লাইট দিতে দিন।’
দুই দলের পার্থক্য তুলে ধরতে তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের পদ্ধতির উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, ‘ভারত যে ভাবে ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল… ওরা ৫০ ওভারকে দু'টি ভাগে ভাগ করেছে - ৩০ ওভার এবং ২০ ওভার। যে খেলোয়াড়রা ধৈর্য ধরে স্ট্রেইট খেলে এবং তাদের একাগ্রতা হারায় না, তারা এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অনেক স্কোর করবে...যে ভাবে (শুভমান) গিল খেলছে। আমি আপনাকে বলেছিলাম যে, ও ওর স্টাইল পরিবর্তন করেছে, যাকে বলা হয় মানিয়ে নেওয়া (পিচ এবং পরিস্থিতির সঙ্গে)।’ প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন গিল। তিনি ৮৬.৩৩ গড়ে ২৫৯ রান করেন, যার মধ্যে একটি সেঞ্চুরি ও দু'টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে।
আরও পড়ুন: টেস্ট দল থেকে ঘাড় ধাক্কা খেতে চলেছেন রোহিত,BCCI-এর ভাবনায় নতুন অধিনায়ক- রিপোর্ট
বাসিত পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জামানের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করেছেন। উল্লেখ্য, ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করার সময় ফখর ১০ রান করেছিলেন এবং পাকিস্তান রান তাড়া করার দু'টি ম্যাচে তিনি ৮৪ এবং ৪১ রানের নক খেলেন। ফখর বলেছেন, ‘প্রথমে ব্যাটিং করা এবং রান তাড়া করা দু'টি ভিন্ন জিনিস। পাকিস্তান যখন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করেছে, তখন ফখর ভালো পারফর্ম করেছে কারণ ওর সামনে টার্গেট ছিল। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করলে সেটা হয় না। প্রথমে ব্যাট করার সময় ওকে প্রথম ১৫-২০ ওভার খেলতে হবে। ও একজন গেম চেঞ্জার।’
তিনি পাকিস্তানের স্পিনারদেরও সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় স্পিনারদের সঙ্গে তুলনা টেনে বলেছেন, ‘ভারতীয় স্পিনাররা যখন বোলিং করতে আসে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি হল রানের প্রবাহ থামিয়ে উইকেট নেওয়া। এর জন্য, তারা প্রতি বলে উইকেট পাওয়ার চেষ্টা করার পরিবর্তে ভালো বোলিং করে (চাপ তৈরি করে)। আমাদের (পাকিস্তান) স্পিনাররা প্রতি বলে উইকেট চায়। এটাই পার্থক্য।’