বাউন্ডারি লাইনের ক্যাচ ধরার নিয়মে বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে, অবৈধ হওয়ার পথে বানি হপ

ক্রিকেটে খেলোয়াড়রা বাউন্ডারি লাইনের উপর দিয়ে লাফিয়ে বহু বার ক্যাচ ধরেছেন, এমন দৃশ্য মোটেও নতুন কিছু নয়। কিন্তু এখন ক্যাচিংয়ের নিয়মে কিছু পরিবর্তন আসতে চলেছে, যে কারণে সীমানার উপর একটি আশ্চর্যজনক ক্যাচ ধরা অবৈধ বলে বিবেচিত হতে পারে। এখন আইসিসি এবং এমসিসি এই ধরনের ক্যাচের নিয়মে বড় পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, সীমানার উপর ‘বানি হপ’ এখন অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। ‘বানি হপ’ শব্দটির অর্থ, যখন কোনও খেলোয়াড় সীমানার বাইরে যাওয়ার পরে বাতাসে লাফিয়ে বলটি ভিতরে ছুঁড়ে মারে। এই ক্ষেত্রে, এখন সীমানার ভিতরে থাকাকালীন বলটি স্পর্শ করতে হবে।

কী কী পরিবর্তন হবে?

এখনও পর্যন্ত ক্রিকেটে ফিল্ডাররা বাউন্ডারি লাইনের বাইরে থাকা বল, যেটা বাতাসে ভাসছে, সেটা লাফিয়ে ধরে ভেতরে নিয়ে এসে নিজে বা অন্য কোনও প্লেয়ারকে দিয়ে ক্যাচ নিয়ে থাকেন, সেটা বৈধ হিসেবে গণ্য হয়। সেক্ষেত্রে ব্যাটাররা আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। তবে এবার বাউন্ডারি ক্যাচিং নিয়মের পরিবর্তনের ফলে, সীমানার বাইরে বাতাসে বল থাকলেও, সেটা ফিল্ডার ধরলেও, সব ক্ষেত্রে ক্যাচ হিসেবে গণ্য হবে না। কারণ এবার থেকে বাউন্ডারি লাইনের বাইরে থেকে বলের সঙ্গে যে কোনও ধরণের যোগাযোগ অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। এছাড়াও, ফিল্ডার সীমানার বাইরে কেবল একবার বাতাসে লাফিয়ে বল ধরতে পারবেন।

উভয় খেলোয়াড়কেই মাঠের ভেতরে থাকতে হবে

আগে, অনেক সময়, বাউন্ডারি লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা খেলোয়াড়রা বলটিকে সীমানার বাইরে দু'বার বাউন্স করিয়ে এবং তার পর সীমানার ভেতরে নিয়ে এসে ক্যাচ ধরে ফেলতেন। কিন্তু এখন এই ক্যাচগুলি বৈধ হবে না। একই সময়ে, যখন দু'জন খেলোয়াড় একসঙ্গে সীমানার উপর একটি ক্যাচ ধরে, তখন তাঁদের দু'জনকেই সেই সময়ের মধ্যে সীমানার ভিতরে থাকতে হবে।

অর্থাৎ, যদি কোনও ফিল্ডার সীমানার উপর দিয়ে আসা বলটি বাতাসে ছুঁড়ে মারে এবং তা সীমানার বাইরে চলে যায়, তাহলে অন্য খেলোয়াড় সীমানার ভিতরে তা ধরার আগে, সেই খেলোয়াড়কেও মাঠের ভিতরে আসতে হবে, তবেই ক্যাচটি বৈধ হবে। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, ২০২৩ সালের বিগ ব্যাশ লিগে মাইকেল নেসার এবং ২০২৫ সালের আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে চেন্নাই সুপার কিংসের ডsওয়াল্ড ব্রেভিসের নেওয়া ক্যাচগুলি আর বৈধ থাকবে না।

এই ক্যাচগুলি নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে?

২০২৩ সালে, বিগ ব্যাশ লিগ (বিবিএল) চলাকালীন, মাইকেল নেসারের বাউন্ডারি ক্যাচ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর পরে, ক্যাচিংয়ের নিয়ম পরিবর্তনের দাবি ওঠে। ঘটনাটি হল, ২০২৩ সালের বিবিএলে ব্রিসবেন হিট এবং সিডনি সিক্সার্সের মধ্যে খেলা ম্যাচের সময়, সিডনি সিক্সার্সের ব্যাটসম্যান জর্ডন সিল্ক লং অফে একটি শক্তিশালী শট খেলেন।

ব্রিসবেন হিটের খেলোয়াড় মাইকেল নাসের বলটি বাউন্ডারি লাইনের সামনে ধরেন কিন্তু ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন, এর পর তিনি বলটি সীমানার বাইরে বাতাসে ছুঁড়ে মারেন, তার পর সীমানার বাইরে গিয়ে বলটি ধরে আবার বাতাসে ছুঁড়ে মারেন এবং তার পর ভেতরে এসে বলটি ধরেন। আম্পায়ার সিল্ককে আউট ঘোষণা করেন, কিন্তু সিল্ক এতে খুশি হননি। এই ক্যাচটি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল।

ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল

একই ভাবে, ২০২০ সালে আরও একটি বিবিএল ম্যাচেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। সেই ম্যাচটি হোবার্ট হ্যারিকেনস এবং ব্রিসবেন হিটের মধ্যে খেলা হয়েছিল। আসলে, প্রথম ইনিংসে, হোবার্ট হ্যারিকেনসের অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড ১৫তম ওভারের চতুর্থ বলে বাউন্ডারিতে একটি শট খেলেন। ব্রিসবেন হিটের ম্যাট রেনশ, সীমানার উপর দাঁড়িয়ে, বাতাসে লাফিয়ে বলটি ভিতরের দিকে ছুঁড়ে মারেন, যা তাঁর সতীর্থ টম ব্যান্টনের হাতে ধরা পড়ে। তৃতীয় আম্পায়ার ওয়েডকে আউট ঘোষণা করেন। তবে, ম্যাট রেনশ সীমানার বাইরে পড়ে যান। এই ক্যাচ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।