চলতি সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির গ্রুপ লিগে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স উপহার দেয় বাংলা। তারা ৭ ম্যাচের মধ্যে ৬টি ম্যাচে জয় তুলে নেয়। গ্রুপ লিগে বাংলা পরাজিত করে যথাক্রমে পঞ্জাব, হায়দরাবাদ, মিজোরাম, মেঘালয়, বিহার ও রাজস্থানকে। বাংলা গ্রুপ লিগে হেরে যায় কেবল মাত্র মধ্যপ্রদেশের কাছে।
তুলনায় দুর্বল মিজোরাম, মেঘালয় ও বিহারের বিরুদ্ধে বাংলার জয় নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। তবে তিলক বর্মার হায়দরাবাদ, তারকাখচিত রাজস্থান ও গতবারের চ্যাম্পিয়ন পঞ্জাবের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিয়েই বাংলা বুঝিয়ে দেয় যে, এবার তারা খেতাব জয়ের অন্যতম দাবিদার।
যদিও নক-আউটে পর্বের প্রথম হার্ডলেই বাংলার ব্যাটিং আহামরি হল না। সোমবার বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে মুস্তাক আলির প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে নামে বাংলা। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে বাধ্য হয় তারা। তবে পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই টপ অর্ডারের তিনজন ব্যাটারের উইকেট হারিয়ে বসে বাংলা।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে বসেন আগ্রাসী ওপেনার অভিষেক পোড়েল। ১টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মাঠ ছাড়েন সদ্য ক্রিজে আসা ক্যাপ্টেন সুদীপ ঘরামি। তিনি ২ বল খেলে খাতা খুলতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে আউট হন হাবিব গান্ধী। তিনি ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১০ বলে ১০ রান করেন।
একদিক দিয়ে পরপর উইকেট পড়তে থাকায় অপর ওপেনার করণ লাল ডাকাবুকো হওয়ার সাহস পাননি। ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় ক্রিজে এসেই ঝড়ের গতিতে রান তুলতে থাকেন। তিনি ২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১২ বলে ২৮ রান করে আউট হয়ে বসেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বাংলার ব্যাটারদের ভুল শট নির্বাচনে উইকেট ছুঁড়ে দিতে দেখা যায়। চিন্নাস্বামীতে জিততে হলে স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলতে হবে, এটা উপলব্ধি করেই বাংলার ব্যাটাররা বাড়তি আগ্রাসন দেখানোর চেষ্টা করেন।
অষ্টম ওভারে একটি ছক্কা মারার পরের বলেই ফের বড় শট নিতে গিয়ে বল গগনে তুলে বসেন ঋত্বিক। উইকেটকিপার পিছন দিকে অনেকটা দৌড়ে ক্যাচ ধরেন। নবম ওভারে ১টি ছক্কা হাঁকানোর পরের বলে ফের বড় শট নিতে গিয়ে উইকেট দেন শাহবাজ আহমেদ। তিনি ৩ বলে ৭ রান করে মাঠ ছাড়েন।
১২তম ওভারে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলেই আউট হন করণ লাল। তিনি ২৫ বলে ৩৩ রান করেন। মারেন ১টি চার ও ২টি ছক্কা। অর্থাৎ, বাংলার তিনজন ব্যাটার ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই ফের বড় শট নিতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন।
অগ্নিভ পান স্টেপ-আউট করে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে ক্যাচ প্র্যাক্টিস দেন ফিল্ডারকে। তিনি ১২ বলে ৬ রান করেন। কণিষ্ক শেঠ শর্ট বলে আধা শট খেলে ফাইন-লেগ বাউন্ডারিতে ধরা দেন। তিনি ৩ বলে ১ রান করেন। প্রদীপ্ত প্রামানিক ব্যাট হাতে ক্রিজে এসেই বড় শট নিতে শুরু করে। তবে সঙ্গ দেওয়ার লোকের অভাব দেখে নিজেকে সংযত করে নেন তিনি। শেষে ২৪ বলে ৩০ রান করে আউট হন প্রদীপ্ত। তিনি ৩টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন।
শেষমেশ মহম্মদ শামির ঝোড়ো ইনিংসের সুবাদে ১৫০ রানের গণ্ডি টপকাতে সক্ষম হয় বাংলা। ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে শামি মাত্র ১৭ বলে ৩২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তিনি ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। শামি সন্দীপ শর্মার শেষ ওভারে ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। শেষ ওভারে ১৯ রান সংগ্রহ করে বাংলা। শেষমেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে বাংলা। ৩ বলে ১ রান করে নট-আউট থাকেন সায়ন ঘোষ।