মায়ের অসুস্থতার জন্য আইপিএলের মধ্যেই দেশে গিয়েছিলেন। মা পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে উঠলেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) যখন দরকার, তখন ভারতে ফিরে আসেন। দলের তরফ থেকে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। বলা হয়নি যে মা'কে ছেড়ে ফিরে এস। কিন্তু রহমানউল্লাহ গুরবাজ ফিরে আসেন, কারণ কেকেআরও তো তাঁর একটা পরিবার। আর পরিবারের যখন দরকার, তখন গুরবাজ দূরে থাকতে চাননি। বরং নিজের কেকেআর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে নাইট ব্রিগেডের হাতে আরও একটা আইপিএল তুলে দিতে চান গুরবাজ। সেই স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপ হিসেবে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে আইপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে জিতে গুরবাজ জানান, ভারতে ফিরে আসার পরে মায়ের সঙ্গে কথা হয়। মা'ও খুশি যে ছেলে দরকারের সময় কেকেআর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। যিনি এখনও হাসপাতালে ভরতি আছেন।
মায়ের অসুস্থতা নিয়ে গুরবাজ
মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে জিতে আইপিএলের ফাইনালে পৌঁছানোর পরে আফগানিস্তানের তারকা ক্রিকেটার বলেন, ‘আমার মা এখনও হাসপাতালে আছে। আমি রোজ কথা বলি মায়ের সঙ্গে। ফিল সল্ট চলে যাওয়ার পরে আমার কেকেআর পরিবারেরও আমায় লাগত। তাই আমি আফগানিস্তান থেকে ফিরে আসি। এখানে থাকতে পেরে ভালো লাগছে। আমার মা'ও খুশি।’
সল্টের পরিবর্তে গুরবাজ
অথচ গ্রুপ পর্যায়ে এবারের আইপিএলে একটি ম্যাচেও খেলার সুযোগ পাননি গুরবাজ। ফিল সল্ট খেলছিলেন। দারুণ উইকেটকিপিং করছিলেন। বেধড়ক মেরেও খেলছিলেন। কেকেআর যে এবার আইপিএলের গ্রুপ পর্যায়ের শেষে শীর্ষস্থানে ছিল, সেটার অন্যতম কারণও হলেন সল্ট।তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিং কেকেআরকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) ম্যাচে তো তাঁর রান-আউটের জন্য দু'পয়েন্ট পায় কেকেআর। কিন্তু আইপিএলের একেবারে শেষলগ্নে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য তাঁকে ফিরে যেতে হয়।
সেই পরিস্থিতিতে খেলার সুযোগ আসে গুরবাজের কাছে। কিন্তু প্লে-অফের আগে মাঠে নেমে যে নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করে নেবেন, সেই সুযোগ হয়নি গুরবাজের। বৃষ্টির জন্য গ্রুপ পর্যায়ে কেকেআরের শেষ দুটি ম্যাচ ভেস্তে যায়। একেবারে সরাসরি প্লে-অফে মাঠে নামতে হয় গুরবাজকে। সেই মার্চের পরে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নেমে খুব একটা খারাপ উইকেটকিপিং করেননি। শুরুর দিকটা একটু জড়সড় লাগলেও পরে সেটা কাটিয়ে ওঠেন। ব্যাট হাতে ১৪ বলে ২৩ রান করেন। রানটা বড় না হলেও কম লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ওই শুরুটা খুব দরকার ছিল কেকেআরের। বিশেষত সল্টের মতো কেকেআর ইনিংসের শুরুটা আক্রমণাত্মক ছন্দে করে দেন।
সবসময় প্রস্তুত রাখতে হবে, সাফল্যের রেসিপি বললেন গুরবাজ
আর সেই ইনিংসের পরে গুরবাজ জানান যে এতদিন দলে সুযোগ না পাওয়ায় একেবারেই ভেঙে পড়েননি। বরং সুযোগটা এলে ভালো খেলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘ক্রিকেটার হিসেবে আপনার জানা উচিত যে কী করা দরকার। প্রথম একাদশে মাত্র চারজন (বিদেশি) খেলতে পারে। সেটা সবসময় মাথায় রেখে চলতে হবে। সেই পরিস্থিতিতে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে পারে। আর সুযোগ না পেলেও নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। যখনই সুযোগ পাবে, তখনই নিজের দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করতে হবে।’