ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ২ উইকেটে হারিয়ে দিল চেন্নাই সুপার কিংস। এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কেকেআরের প্লে অফে যাওয়ার স্বপ্ন বড় ধাক্কা খেল। যা অবস্থা তাতে আর হয়ত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের আইপিএল ২০২৫-র প্লে অফে ওঠা হবে না। ইডেনে ২ উইকেটে নাইটদের বিরুদ্ধে শেষ ওভারে গিয়ে ম্য়াচ জিতে নিল চেন্নাই সুপার কিংস।
ইডেন গার্ডেন্সে কেকেআরের মাস্ট উইন ম্যাচ ছিল এদিন। চেন্নাই সুপার কিংসকে চাপেও ফেলে দিয়েছিল রাহানের দল। কিন্তু ব্রেভিসের দুর্দান্ত ইনিংস সঙ্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির মাথা ঠান্ডা করে ফিনিশিংই আইপিএল থেকে ছিটকে দিল নাইটদের। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রাহানে। কিন্তু তেমন বড় রান তারা তুলতে পারেনি চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নিল ধোনির দল।
প্রথমে ব্যাট করে কলকাতা নাইট রাইডার্স নির্ধারিত ২০ ওভারে করেছিল ৬ উইকেটে ১৭৯ রান। অজিঙ্কা রাহানে ৩৩ বলে ৪৮ রান, আন্দ্রে রাসেল ২১ বলে ৩৮ রান এবং মণিশ পাণ্ডে ২৮ বলে ৩৬ রান করেন। নারিন ১৭ বলে ২৬ রান করলেও আরেক ওপেনার গুরবাজ ব্যর্থ হন। অংকৃষ রঘুবংশী এদিন ক্লিক করলেন না। ইডেনের পিচে কত রান নিরাপদ সেটাই বুঝে উঠতে পারলেন না মণিশ, রাহানেরা। তাতেই ম্যাচ হাতের নাগালের বাইরে চলে গেল। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যদি মণিশ পাণ্ডে ১২৮র স্ট্রাইক রেটে খেলেন তাহলে যা হওয়ার তাই হল। তবে ইডেনের স্পিনিং ট্র্যাকের সিএসকের নূর আহমেদ নিলেন চার উইকেট, সেদিক থেকে নজর কাড়তে পারলেন না কেকেআরের স্পিনাররা।
অবশেষে চেন্নাই সুপার কিংসকে শুরু থেকেই ধাক্কা দিয়ে নাইট রাইডার্সকে মাস্ট উইন ম্যাচে লড়াইয়ে রেখেছিল বোলাররা। প্রথম দুই ওভারের মধ্যেই ওপেনার আয়ুষ মাত্রে এবং ডেভন কনওয়ে ফেরেন ০ রানে। কিন্তু এরপর উর্ভিল প্যাটেলের ১১ বলে ৩১ রানের ঝোড়োর ইনিংসটাই সিএসকে ফের চালকের আসনে বসিয়ে দেয়। কিন্তু এরপরই ফের পাল্টা আঘাত হানেন কেকেআরের বোলাররা।
উর্ভিল প্যাটেল এবং অশ্বিনকে আউট করেন হর্ষিত রানা। বরুণ চক্রবর্তীও পাওয়ারপ্লের মধ্যে ফিরিয়ে দেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। ফলে পাওয়ারপ্লেতে পাঁচ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছিল সিএসকে, কিন্তু কোথাও যেন নাইটদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কাল হয়ে দাঁড়াল।
এরপর ডেওয়াল্ড ব্রেভিস এসে পাল্টা মার শুরু করলেন। ২৫ বলে ৫২ রান করে নিষ্প্রাণ ম্যাচেই অক্সিজেন এনে দেন সিএসকের হয়ে।বৈভব অরোরার এক ওভারে ৩০ রান তোলেন ব্রেভিস, সেখানেই খেলা ঘুরে যায়। এরপর শিবম দুবেও ৪০ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেললেন। শেষদিকে কাজের কাজটা করার দায়িত্ব ছিল ধোনির ওপর। শেষ দুই ওভারে বাকি ছিল ১৮ রান। ১৯তম ওভারে শিবম দুবে একটি ছয় মারার পর আউট হয়ে যান, এরপর এক আধটা রান আসার পর ২০তম ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। সেখানে রাসেলের প্রথম বলেই ছয় মেরে চেন্নাইয়ের দিকে ম্যাচের ভাগ্য নিয়ে যান মাহি। এরপর তৃতীয় বলে তিনি সিঙ্গল নিয়ে স্কোর লেভেল করে দেন। চতু্র্থ বলে অংশুল কম্বোজ চার মেরে চেন্নাইকে জিতিয়ে নাইটদের খাদের কিনারায় পাঠিয়ে দিল। কেকেআরের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে বরুণ চক্রবর্তী ২ উইকেট নিলেন ২৮ রানে। মইন আলি ১ উইকেট নিলেন, তবে দিলেন ২ ওভারে ২৩ রান। আর এক উইকেটও পেলেন না নারিন। নাইট স্পিনারদের ইডেনের পিচে তেমন ভালো পারফরমেন্স করতে না পারাই তাঁদের কার্যত আইপিএল থেকে ছিটকে দিল।