দলকে জেতাতে মহেন্দ্র সিং ধোনি যে ১১০ মিটারের ছক্কাটা মারেন, সেটাই আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) কাছে। আর টানা ছ'টি ম্যাচে জিতে প্লে-অফে পৌঁছে গেলেন বিরাট কোহলি, দীনেশ কার্তিকরা। ওই বিশাল ছক্কাটা না হলে হয়ত প্লে-অফে কোয়ালিফায়াই করার জন্য প্রয়োজনীয় রানটা তুলে ফেলতেন ধোনি, রবীন্দ্র জাদেজারা। প্লে-অফে উঠে যেত চেন্নাই সুপার কিংস। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটা হয়নি। রুদ্ধশ্বাস কায়দায় ম্যাচটা জিতে বিরাটরা নিজেদের প্রথম আইপিএল জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলেন। যে বিষয়টি নিয়ে পরে মজাও করেন কার্তিক।
কিন্তু এমন কী হল, যে ছক্কাটাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিল?
আসলে প্লে-অফে কোয়ালিফায়াই করার জন্য শনিবার চেন্নাইকে শেষ ওভারে ১৭ রান করতে হত। ক্রিজে ছিলেন ধোনি এবং জাদেজা। যশ দয়ালের প্রথম বলেই বিশাল বড় ছক্কা মারেন ধোনি। বলটা একেবারেই ভালো ছিল না। লেগসাইডে ফুলটস ছিল। ধোনি খুব ভালো টাইমিং করতে না পারলেও বলটা ১১০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামের ছাদে গিয়ে পড়ে। পুরো স্তব্ধ হয়ে যান আরসিবির সমর্থকরা। আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হবে বলে ভেঙে পড়েন অনেকে।
আরসিবি সমর্থকদের সেই আশঙ্কার মধ্যেই নতুন একটি বল হাতে পান যশ। ধোনির বিশাল ছক্কার কারণে আগের বলটা খুঁজে না পাওয়া যাওয়ায় নতুন একটি বল নিয়ে বোলিং করতে শুরু করেন। আর দ্বিতীয় বলেই ধোনিকে আউট করে আরসিবিকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন যশ। তারপর বাকি চার বলে মাত্র এক রান নিতে নেন চেন্নাইকে। প্রথম বলে ছক্কা খাওয়ার পরও সবমিলিয়ে মোট সাত রান দেন। আর ২৭ রানে ম্যাচ জিতে প্লে-অফে পৌঁছে যায় আরসিবি।
আর সেটার ক্ষেত্রে বলের অবদান নেহাত কম ছিল না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যশ অবশ্যই ভালো বল করেছেন। কিন্তু তিনি যখন ২০ তম ওভারের প্রথম বলটা করতে আসেন, তখন তাঁর হাতে যে বলটা ছিল, সেটা ভিজে ছিল। ফলে তিনি যেখানে বলটা করতে চেয়েছিলেন, সেখানে পড়েনি। ফুলটস হয়ে ধোনির কাছে যায়। তিনি ছক্কা মারেন। সেই ১১০ মিটারের ছক্কার কারণে বলটা স্টেডিয়ামের ছাদে চলে যাওয়ায় হাতে নতুন বল পান যশ। যে বলটা শুষ্ক ছিল। ফলে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে বেশি সুবিধা হচ্ছিল। আর তিনি যে কতটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন, সেটা পরের পাঁচটা বলেই বোঝা গিয়েছে।
মজা কার্তিকের, হাসি বিরাটের
পরবর্তীতে ড্রেসিংরুমে কার্তিকও স্বীকার করে নেন যে ধোনির ১১০ মিটারের ছক্কাটাই তাঁদের কাছে শাপে বর হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ধোনির ওই ছক্কাটা মাঠের বাইরে গিয়ে পড়ার ঘটনাটাই আজকের সবথেকে ভালো বিষয় হয়েছে। আমরা একটি নতুন বল পেয়েছিলাম। যে বলটা বোলিংয়ের পক্ষে অনেক ভালো ছিল।’
তখন কেউ বলে ওঠেন, যশ খুব ভালো বোলিং করেছে। তাতে কার্তিক বলেন, ‘হ্যাঁ। একদম। যশ দয়াল খুব ভালো বোলিং করেছে।’ সেইসঙ্গে তিনি মজা করে বলেন যে যদি এবার থেকে বল ভিজে থাকে, তাহলে লেগসাইডে এরকম একটা ফুলটস বল করে দেবে। বলটা মাঠের বাইরে উড়ে যাবে। আর নয়া বল (যেটা শুষ্ক হবে) ম্যাচ জিতে চলে আসা যাবে। সেইসব কথা হা-হা করে হাসতে থাকেন বিরাট।