এক রানের জন্য ঐতিহাসিক জয় হাতছাড়া হয়ে গেল নেপালের। শেষ বলে রান-আউট করে জয় ছিনিয়ে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আর সেই রান-আউটের কারণে নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সবথেকে বড় জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না নেপাল। আর যে কায়দায় রান-আউট হল, সেটা নেপালের হৃদয় আরও ভেঙে দেবে। জয়ের জন্য শেষ বলে দু'রান বাকি ছিল নেপালের। বলটা ব্যাটে ঠেকাতে পারেননি নেপালের গুলশন ঝা। এক রানের জন্য দৌড়ান তিনি। উইকেটের পিছন থেকে বলটা ছুড়ে দেন কুইন্টন ডি কক। তাঁর ছোড়া বলটা গুলশনের পিঠে লাগে। বলটা যে কোনওদিকে যেতে পারত। কিন্তু নেপালের ভাগ্য এতটাই খারাপ ছিল যে গুলশনের পিঠে লেগে বলটা লেগে সোজা নন-স্ট্রাইকার্স এন্ডের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে চলে যায়। তাঁর ডিরেক্ট থ্রো নেপালের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। তবে গুলশনও সেইসময় একটা ভুল করেন। ক্লাসেনের হাতে বলটা যাওয়ার পরে তিনি কোনও কারণে একটু গতি কমিয়ে দেন। তিনি যদি সেইসময় গতি না কমাতেন, তাহলে ম্যাচটা সুপার ওভারে গড়াত।
সুপার ওভারে গড়ানোর কথাই ছিল না ম্যাচটা
যদিও ১৭.২ ওভারেও মনে হয়েছিল যে সুপার ওভার তো দূর অস্ত, নির্দিষ্ট ২০ ওভারের মধ্যেই ম্যাচটা জিতে যাবে নেপাল। ১৭.৩ ওভারে দীপেন্দ্র সিং আইরির উইকেটের পরেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। সেই ওভারের শেষ বলে আউট হয়ে যান আসিফ শেখ (৪৯ বলে ৪২ রান)। ১৮.২ ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান কুশল মাল্লা। ওই ১৯ তম ওভারে তো প্রথম চারটি বলে একটা রানও করতে পারেনি নেপাল। কিন্তু পঞ্চম বলে এনরিখ নরকিয়াকে বিশাল ছক্কা মেরে খেলার মোড় আবার ঘুরিয়ে দেন সোমপাল কামি।
নাটকীয় শেষ ওভার
তারপর জয়ের জন্য শেষ ওভারে আট রান দরকার ছিল নেপালের। প্রথম দুটি বলে কোনও রান হয়নি। তৃতীয় বলে চার মারেন গুলশন। তৃতীয় বলে দুর্দান্ত শটে চার মারেন। চতুর্থ বলে দু'রান নেন। সেই পরিস্থিতিতে দু'বলে দু'রান দরকার ছিল নেপালের। কিন্তু সেখান থেকে এক রানে হেরে গেল। চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন তাবরেজ শামসি। আর নেপালের সেই হারের ফলে বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তি পেল। নাহলে শেষ ম্যাচে বেশ চাপে পড়ে যেত।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং ইনিংস
কিংসটাউনে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে কোনওক্রমে ১১৫ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। পুরো ইনিংসেই নেপালের স্পিনারদের সামনে হাঁসফাঁস করতে থাকেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। যত ইনিংস গড়াতে থাকে, তত পিচের গতি কমে যাওয়ার বিষয়টিও প্রোটিয়াদের পক্ষে যায়নি।
কিন্তু সেই পরিস্থিতির সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেন নেপালের স্পিনাররা। সন্দীপ লামিছানের মঞ্চে চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে চার উইকেট নেন কুশল ভুরতেল। তাঁকে যোগ্যসংগত করেন দীপেন্দ্র সিং আইরি। চার ওভারে ২১ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন।
প্রোটিয়া ব্যাটারদের মধ্যে শুধুমাত্র রিজা হেনড্রিক্স এবং ত্রিস্তান স্টাবস কিছুটা দাগ কাটতে পারেন। ৪৯ বলে ৪৩ রান করেন হেনড্রিক্স। স্ট্রাইক রেট ছিল মাত্র ৮৭.৭৫। ১৮ বলে ২৭ রান করেন স্টাবস। প্রোটিয়া ব্যাটারদের মধ্যে একমাত্র তাঁরই স্ট্রাইক রেট ১০০-র উপরে ছিল।