প্রায় নিজের ভুলেই সেঞ্চুরি হাতছাড়া করতে বসেছিলেন। ননস্ট্রাইকার এন্ডে তখন ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে নীতীশ রেড্ডি। অপরদিকে প্যাট কামিন্স বল হাতে ছুটে যাচ্ছেন মহম্মদ সিরাজের দিকে। আর দর্শকদের মাঝে তখন বসে আছেন নীতীশ রেড্ডির বাবা। জোড়হাতে চোখ বন্ধ করে প্রার্থনা করে চলেছেন। পরের ওভারে স্কট বোল্যান্ডকে সামনের দিকে লং অন এলাকা দিয়ে উড়িয়ে বাউন্ডারি মারলেন নীতীশ। পার করলেন সেঞ্চুরির গণ্ডি। আর শূন্যে তখন হাত ছুঁড়লেন নীতীশের বাবা। তখন ধারাভাষ্যে থাকা এমএসকে প্রসাদ জানাচ্ছেন, নীতীশের জন্যে নিজের চাকরি ছেড়েছিলেন তাঁর বাবা। জীবনে অনেক কষ্ট করে ছেলেকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন নীতীশের বাবা। (আরও পড়ুন: রেড্ডির 'পুষ্পারাজ'! ভারতে 'বিতর্কের' মাঝেই অজি ভূমে আল্লুকে নিয়ে উন্মাদনার আঁচ)
আরও পড়ুন: নিজের ভুলেই হাতছাড়া হতে চলেছিল সেঞ্চুরি! তবে রেকর্ডের ছড়াছড়িতে শতরান রেড্ডির
এরপর দিনের খেলা শেষে ফক্স ক্রিকেটের হয়ে নীতীশের বাবার সাক্ষাৎকার নিতে যান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। সেই সময় নীতীশের বাবা আবেগে ভেসে যাচ্ছেন। গিলক্রিস্টকে তিনি বলেন, 'এটা খুবই স্পেশাল। পরিবারের জন্যে খুবই বিশেষ আজকের দিন। যখন মহম্মদ সিরাজ ক্রিজে ছিলেন, তখন খুবই নার্ভাস মনে হচ্ছিল।' নীতীশের কাকা এবং অন্যান্যরা তখন পাশ থেকে বলতে থাকেন, এই পুরো সময় নীতীশের বাবা প্রার্থনায় মগ্ন ছিলেন। পরে স্টেডিয়াম থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে নীতীশের বাবা বলেন, 'ওঁর আইডল বিরাট কোহলি।' তিনি আরও বলেন, 'কঠোর পরিশ্রমের কোনও বিকল্প হয় না।' এর আগে এই সিরিজে দু'টো ৪০-এর স্কোর ছিল তাঁর। তবে এই ইনিংসেই নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতরান করেন নীতীশ। আর সেই ইনিংসকেই সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন তিনি। (আরও পড়ুন: 'স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড', পিচে গড়িয়ে পড়ে আউট পন্ত, দলকেও ফেলে গেলেন খাদে?)
আজ একটা সময়ে ঋষভ পন্ত, রবীন্দ্র জাদেজার উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। মেলবোর্নে প্রথম ইনিংসে ভারতীয় দল ২২১ রানের মাথায় ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। তার পরেই ওয়াশিংটন সুন্দরকে সঙ্গে নিয়ে পালটা লড়াই শুরু করেন নীতীশ। তৃতীয় দিনের চায়ের বিরতির আগেই ১০০ রানের পার্টনারশিপ পূর্ণ করেন দু'জনে। শেষমেশ দলগত ৩৪৮ রানের মাথায় আউট হন ওয়াশিংটন সুন্দর। নীতীশ অবশ্য এখনও অপরাজিত আছেন। মেলবোর্নে অষ্টম উইকেটের জুটিতে সুন্দর ও নীতীশ যোগ করেন ১২৭ রান। নীতীশ ১৭৬ বলে ১০৫ রানে দাঁড়িয়ে আছেন ক্রিজে। তাঁর স্ট্রাইকরেট ৫৯.৬৬। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১০টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কা।