বৃষ্টি সঙ্গ না দিলে সোমবারই চূড়ান্ত লজ্জায় ডুবতে হতে পারত বাবর আজমদের। আপাতত এক রাতের জন্য পাকিস্তান ক্রিকেট দল লাঞ্ছনা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয় প্রকৃতির বদান্যতায়। অবশ্য সোমবার রাতে বাবরদের দুশ্চিন্তায় ঘুম হবে কিনা সন্দেহ। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বাড়তি সময় পেয়ে যায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজ শেষে কার ঘাড়ে কোপ ফেলা হবে, তা বিচার-বিবেচনা করে দেখার।
রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। কেননা সেই প্রথমবার তারা টেস্টে পাকিস্তানকে হারাতে সক্ষম হয়। তবে নাজমুল হোসেন শান্তরা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি যে, তাঁরা এমন একটা পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়াবেন, যেখানে বাংলাদেশ বিদেশ সফরে গিয়ে পাকিস্তানের মতো দলকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলবে।
আসলে নাটকীয় পট পরিবর্তন না হলে প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও বাংলাদেশের কাছে হার নিশ্চিত দেখাচ্ছে পাকিস্তানের। সেক্ষেত্রে বাবর আজমদের চুনকাম করে দেশে ফিরবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের শেষ সেশনের খেলা বৃষ্টিতে ভেস্তে না গেলে সোমবারই জয় নিশ্চিত করতে পারত বাংলাদেশ। আপাতত জয়ের জন্য শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার আর মোটে ১৪৩ রান। হাতে রয়েছে ১০ উইকেট। জাকির হাসান ও সাদমান ইসলামের ওপেনিং জুটি যেরকম দৃঢ়তা দেখিয়েছে, তাতে শেষ দিনে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে বিশেষ অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের।
অবশ্য বিধিসম্মত সতর্কীকরণ একটা রয়েই যাচ্ছে যে, ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। তার উপর বাংলাদেশের পারফর্ম্যান্স পাকিস্তানের মতোই অনিশ্চিত। এমন সুবিধাজনক জায়গা থেকে ভরাডুবির মুখে পড়া বাংলাদেশের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়। কেননা এই টেস্টের প্রথম ইনিংসে একসময় মাত্র ১২ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। লিটন দাসের সেঞ্চুরি ও মেহেদি হাসান মিরাজের হাফ-সেঞ্চুরি বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে বাংলাদেশকে।
রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে মন্দ আবহাওয়ায় জন্য প্রথম দিনের খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। দ্বিতীয় দিনে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। তারা ৮৫.১ ওভারে ২৭৪ রানে অল-আউট হয়ে যায়। পালটা ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংস শেষ করে ২৬২ রানে। তারা সাকুল্যে ৭৮.৪ ওভার ব্যাট করে।
প্রথম ইনিংসের নিরিখে ১২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। তারা চতুর্থ দিনে তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ করে মাত্র ১৭২ রানে। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস স্থায়ী হয় ৪৬.৪ ওভার। সইম আয়ুব ২০, শান মাসুদ ২৮, মহম্মদ রিজওয়ান ৪৩, আঘা সলমন অপরাজিত ৪৭ ও বাবর আজম ১১ রান করেন।
বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। ৪টি উইকেট নেন নাহিদ রানা। ১টি উইকেট নেন তাসকিন। উইকেট পাননি শাকিব।
জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ১৮৫ রানের। তারা চতুর্থ দিনের শেষে ৭ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তুলেছে। ২৩ বলে ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন জাকির হাসান। তিনি ২টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছেন। ১৯ বলে ৯ রান করে নট-আউট থাকেন সাদমান।