ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭৮ রানে হারিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান ৩৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কঠিন লড়াই করে। এর আগে গ্লেন ফিলিপসের বিধ্বংসী ১০৬ রানের অপরাজিত ইনিংস নিউজিল্যান্ডকে ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করাতে সাহায্য করে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার লাহোরের নবনির্মিত গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ইনিংসের শেষ দিকে ফিলিপস তাণ্ডব চালান এবং মাত্র ৭৪ বলে অপরাজিত ১০৬ রান করেন। ড্যারিল মিচেল সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি গিয়েও তা করতে পারেননি। ৮১ রান করে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।
ত্রিদেশীয় এই টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকাও অংশ নিয়েছে। যা মূলত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি ১৯ তারিখ থেকে পাকিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আট দেশের এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। তবে তার আগে এই সিরিজটি অনুষ্ঠিত করা হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টে প্রতিটি দল দুইটি করে ম্যাচ খেলবে এবং শীর্ষ দুই দল ১৪ ফেব্রুয়ারি করাচিতে ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
আরও পড়ুন … IND vs ENG: কীভাবে নিজের ফর্ম ফিরে পাবেন রোহিত শর্মা? উপায় বলে দিলেন সঞ্জয় বাঙ্গার
নিউজিল্যান্ডের দুর্দান্ত জয়
নিউজিল্যান্ড ৭৮ রানে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে। গ্লেন ফিলিপসের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি দলকে ৩৩০ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেয়। ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই নিউজিল্যান্ড দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে এবং ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বড় জয় পেয়েছে। গ্লেন ফিলিপস ম্যাচের সেরার পুরস্কার জিতেছেন।
ফিল্ডিংয়ের সময় চোট পেলেন রাচিন রবীন্দ্র
নিউজিল্যান্ডের তরুণ অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র ফিল্ডিং করার সময় বল ধরতে গিয়ে চোখের নীচে চোট পান। আলোয় বল দেখতে না পেয়ে বলটি সরাসরি তাঁর চোখের কাছে লাগে, ফলে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরেই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ম্যাচের পরে গ্লেন ফিলিপস বলেন, ‘আমরা মাঝের ওভারে কিছুটা চাপে ছিলাম, কারণ পাকিস্তানি বোলাররা ভালো বল করছিল। তবে ব্রেসওয়েল দারুণ ব্যাটিং করেছে, এবং আমি সেই মোমেন্টাম ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। প্রথম সেঞ্চুরি করতে পারাটা বিশেষ কিছু ছিল। আমি দলের জন্য যতটা সম্ভব অবদান রাখতে চাই।’
আরও পড়ুন … রাজদীপের হ্যাটট্রিক, অনূর্ধ্ব-১৩ টিমের ৭ ফুটবলারকে নিয়েই U-15 ইস্টবেঙ্গলকে হারাল মোহনবাগান
নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং পারফরম্যান্স
নিউজিল্যান্ডের হয়ে কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেল ফিফটি হাঁকান, যা দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেয়। তবে মিডল অর্ডারে গ্লেন ফিলিপসের বিধ্বংসী সেঞ্চুরি পাকিস্তানের বোলারদের দিশেহারা করে দেয়। শেষ ৫ ওভারে ৮৪ রান তোলে নিউজিল্যান্ড, যার মধ্যে শাহিন আফ্রিদির ৪৯তম ওভারেই ২৫ রান আসে। এই ওভারেই মূলত পাকিস্তান ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পাকিস্তানের হ্যারিস রউফ ম্যাচে ছিলেন না, কারণ তিনি সাইড স্ট্রেইনের কারণে বোলিং করতে পারেননি। এর ফলে ডেথ ওভারে পাকিস্তানের বোলিং দুর্বল হয়ে পড়ে।
পাকিস্তান কোথায় পিছিয়ে পড়ল?
পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুতেই বাবর আজম দ্রুত আউট হন, তবে ফখর জামান দায়িত্ব নিয়ে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করেন এবং দুর্দান্ত শট খেলে হাফ সেঞ্চুরি করেন। দ্রুত দুইটি উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান চাপে পড়ে যায়। আঘা সলমন ও তাহিরের ৫০ রানের পার্টনারশিপ ইনিংস সামলানোর চেষ্টা করেছিল, তবে রান রেট ক্রমাগত বাড়তে থাকায় চাপ তৈরি হয়। এবং দুজনই পরে আউট হয়ে যান। নিউজিল্যান্ডের স্যান্টনার (৩ উইকেট) ও ব্রেসওয়েল (২ উইকেট) মিলিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন। এছাড়া হেনরি ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে গুঁড়িয়ে দেন।
আরও পড়ুন … IND vs ENG: সাদা বলের ক্রিকেটে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে ইংল্যান্ড: নাসের হুসেনের চিন্তায় বাটলারদের পারফরমেন্স
ম্যাচের সারসংক্ষেপ-
নিউজিল্যান্ড: ৩৩০/৬ (গ্লেন ফিলিপস অপরাজিত ১০৬ রান, ড্যারিল মিচেল ৮১ রান, কেন উইলিয়ামসন ৫০ রান)
পাকিস্তান: ২৫২/১০ (ফখর জামান ৫১ রান, সলমন আলি আঘা ৪৩ রান, তাহির ৩৯ রান)
ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৭৮ রানে জয়ী হয়
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: গ্লেন ফিলিপস (অপরাজিত ১০৬ রান)