করাচিতে অনুষ্ঠিত ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সৌজন্যে ২৯ বছরের মধ্যে প্রথম বারের মতো কোনও আইসিসি টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় তিন দশক পর বড় দায়িত্ব পেয়েছে পাকিস্তান। ২০০৯ সালে লাহোরে সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণহানি হয়েছিল এবং বেশ কয়েক জন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার আহত হয়েছিলেন। এর পর থেকেই পাকিস্তানে ক্রিকেট দীর্ঘ সময়ের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। এর পর ছয় বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল পাকিস্তানকে। জিম্বাবোয়ে প্রথম একটি সীমিত ওভারের সিরিজের জন্য পাকিস্তানে সফর করেছিল। তবে তার আগে পর্যন্ত মেন ইন গ্রিন দুবাই এবং আবুধাবিকে তাদের ঘরের মাঠ করে তুলেছিল।
আরও পড়ুন: ODI-এ ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রেকর্ড বেশ যন্ত্রণার, কী বলছে পরিসংখ্যান?
এর পর ধীরে ধীরে অনেক দেশই পাকিস্তানে সফর করে। যদিও ভারত এখনও পাকিস্তানে সফর করে না। এমন কী এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতেও পাকিস্তানে যায়নি ভারত। তারা দুবাইয়ে তাদের সব ম্যাচ খেলছে। বাকি ছ'টি দল পাকিস্তানে খেলছে। এমনকী নিউজিল্যান্ড, যারা নিরাপত্তার ইস্যুতে ২০২১ সালে তাদের সফর মাঝপথে ছেড়ে দেশে ফিরে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি তারা পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছে এবং এখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিয়েছে। তবে যতই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক না কেন, অতীত পিছু ছাড়ছে না।
আরও পড়ুন: এদের নখরার শেষ নেই, ভারতকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে- Champions Trophy-র আগে খোঁচা পাক প্রাক্তনী সাকলিনের
ঘটনাটি কী?
বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অধিনায়ক মহম্মদ রিজওয়ান টস জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরপরই, ফাইটার জেট দ্বারা সৃষ্ট একটি বিকট শব্দে নিউজিল্যান্ড ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং করাচি জনসাধারণ চমকে ওঠে। তাঁরা রীতিমতো ভীত হয়ে পড়েছিল।
পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানগুলি তখন স্টেডিয়ামের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ে বিকট শব্দ ডেসিবেলের মাত্রা ছাপিয়ে গিয়েছিল। কী কারণে এসব হচ্ছে সেটা বোঝার আগে ডেভন কনওয়ে আউট হয়ে যান। ভীতির জেরেই সম্ভবত ডাক করে তিনি সাজঘরে ফিরে যান। ক্যামেরা ভক্তদের দিকে ঘোরালে দেখা যায়, ক্রিকেট ভক্তরা রীতিমতো ভীত হয়ে পড়েছিল, কেউ কেউ নিজেদের কান চেরে রেখেছিল, অনেকে আবার তাঁদের বুক চেপে ধরেছিল। হিন্দি সম্প্রচার দায়িত্বের একজন ভাষ্যকার বলেন, ‘জেটের বিকট শব্দে ওঁরা সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছে।’
নিরাপত্তা বাড়াতে পাকিস্তান যা করেছে
পাকিস্তান সরকার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাহোর এবং রাওয়ালপিন্ডি জুড়ে ১২,০০০-এরও বেশি পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকছে। এর মধ্যে ১৮ জন সিনিয়র অফিসার, ৫৪ জন ডিএসপি, ১৩৫ জন ইন্সপেক্টর, ১,২০০ সাব ইন্সপেক্টর, ১০,৫৫৬ কনস্টেবল এবং ২০০ জন মহিলা পুলিশ অফিসার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, ভক্তদের জন্য ন'টি বিশেষ চার্টার ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই বিমানগুলো করাচি, ইসলামাবাদ এবং লাহোরের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।