একে তো বাংলাদেশের কাছে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে হেরে মাথা হেঁট হয়েছে বাবর আজমদের। তার উপর পাকিস্তানের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ অভিযান বিরাট ধাক্কা খেল আইসিসির শাস্তির মুখে পড়তে হওয়ায়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে স্লো ওভার-রেটের দায়ে পড়ায় কাটা গেল পাকিস্তানের মূল্যবান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট। স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলে পাকিস্তান কার্যত খাদের অতলে তলিয়ে গেল।
অন্যদিকে পাকিস্তানকে প্রথমবার টেস্টে পরাজিত করেও উচ্ছ্বসিত হওয়ার সুযোগ রইল না বাংলাদেশের সামনে। তারা নিজেদের ঐতিহাসিক সাফল্য উপভোগ করার আগেই দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কেননা শুধু পাকিস্তানই নয়, বরং রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্লো ওভার-রেটের দায়ে পড়ে বাংলাদেশও। সঙ্গত কারণেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট কাটা যায় নাজমুল হোসেন শান্তদেরও।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, পাকিস্তানের বেশি পয়েন্ট কাটা গেলেও তাদের লিগ টেবিলে অবস্থান বদল হয়নি। তুলনায় কম পয়েন্ট কাটা যায় বাংলাদেশের। তা সত্ত্বেও তাদের লিগ টেবিলে পিছিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশের সর্বনাশ এক্ষেত্রে পৌষমাস হয়ে দেখা দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। কেননা তারা নিজেদের পুরনো স্থান ফিরে পায় পুনরায়।
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে নির্ধারিত সময়ে বোলিং কোটা শেষ করতে পারেনি পাকিস্তান-বাংলাদেশ উভয় দলই। সব দিক বিবেচনার পরেও ৬ ওভার পিছিয়ে ছিলেন শান মাসুদরা। ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিল থেকে তাদের ৬ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি-র ৩০ শতাংশ জরিমানাও করা হয়েছে।
বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ে পিছিয়ে ছিল ৩ ওভার। তাই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিল থেকে তাদের ৩ পয়েন্ট কেটে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি-র ১৫ শতাংশ জরিমানাও করা হয়। দু'দলের ক্যাপ্টেন এক্ষেত্রে অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় ফর্মাল হেয়ারিংয়ের প্রয়োজন পড়েনি।
৬ পয়েন্ট কাটা যাওয়ার পরে পাকিস্তানের খাতায় রয়েছে ৬ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট। তারা ২২.২২ শতাংশ হারে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। পাকিস্তান রয়েছে আপাতত লিগ টেবিলের ৮ নম্বরে। ৩ পয়েন্ট কাটা যাওয়ার পরে বাংলাদেশের সংগ্রহে রয়েছে ৫ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট। তারা ৩৫.০০ শতাংশ হারে পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। বাংলাদেশ এক ধাপ নেমে গিয়ে লিগ টেবিলের সাত নম্বরে অবস্থান করছে।
আইসিসির কোড অফ কন্ডাক্টের ২.২২ ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বোলিং কোটা পূর্ণ করতে না পারলে প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য ম্যাচ ফি'র ৫ শতাংশ হারে জরিমানা করা হয় সংশ্লিষ্ট দলের ক্রিকেটারদের। সেই সঙ্গে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ প্লেয়িং কন্ডিশনের ১৬.১১.২ ধারায় প্রতি ওভার পিছিয়ে থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট দলের ১ পয়েন্ট করে কেটে নেওয়ার শাস্তিবিধান রয়েছে।
শুধু দলগতভাবেই নয়, বরং রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ব্যাটার মহম্মদ রিজওয়ানের দিকে বিপজ্জনকভাবে বল ছোঁড়ার জন্য শাস্তি হয়েছে শাকিব আল হাসানের। তাঁর ম্যাচ ফি-র ১০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শাকিবের ডিসিপ্লিনারি রেকর্ডে ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ করা হয়েছে।