পাকিস্তান রয়েছে পাকিস্তানেই। এত বছরেও যে কিছুই বদলায়নি, সেটাই আরও একবার বোঝা গেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে। অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিতে ভুগেই দলকে ঘরের মাটিতে লজ্জার হারের সম্মুখীন হতে হয়েছে, যে লজ্জা তাঁরা দ্বিতীয় টেস্টে জিতলেও কাটাতে পারবেন না। এই প্রথম দেশের মাটিতে পাক দল কোনও টেস্টে ১০ উইকেটে হেরেছে। আত্মবিশ্বাস দেখাতে গিয়ে ইনিংস ডিক্লিয়ার করতে গিয়ে, বিষয়টি বুমেরাং হয়ে গেছে তাঁদের কাছেই।
একটা সময় মুলতান, করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, যেখানেই খেলা হোক না কেন, যেই প্রতিপক্ষের সঙ্গেই হোক না কেন পাকিস্তান দল ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামত। অথচ সেই ইনজামাম উল হক, সইদ আনোয়ার, ওয়াসিম আক্রম, শোয়েব আখতারদের উত্তরসুরীদের এমন বিশ্রী পারফরমেন্স দেখে হতবাক দেশের ক্রিকেটমহল।
আরও বেশি সমালোচনার মুখে পড়েছেন বাবর আজম, স্যাম মাসুদরা, কারণ তাঁরা নিজেদের দেশের মাঠেও উইকেট নাকি বুঝতে পারেননি। একজনও স্পেশালিস্ট স্পিনার না খেলিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে চার পেসারে খেলে পাকিস্তান। ফলও হাতে নাতে পেয়েছ তাঁরা। যেখানে মেহেদি হাসান মিরাজ, শাকিব আল হাসানরা পাক ব্যাটিং লাইন আপে ত্রাসের সঞ্চার ঘটিয়েছেন সেখানেই পাক পেসারদের নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন মুশফিকুর রহিমরা, যা দেখে বেজায় চটেছেন প্রাক্তনীরা।
আরও পড়ুন-হার্দিকের জন্য শাস্তি!ট্রোলিংয়েরও শিকার! এতদিনেও আক্ষেপ যাচ্ছে না লোকেশ রাহুলের!
২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপ এবং ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের ছিটকে যাওয়ার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছিলেন দলে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু কোথায় কি? সেই একই সিনিয়র ক্রিকেটাররা সব ফরম্যাটে খেলে যাচ্ছেন। বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদিরা পারফরমেন্স না করলেও তাঁদের সুযোগের পর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। একমাত্র মহম্মদ রিজওয়ান ব্যতিক্রম।
টি২০ বিশ্বকাপে হারের পর পিসিবি চেয়ারম্যান নকভি বলছেলিন, দলে একটা অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। শুরুর দিকে তাঁর মনে হয়েছিল ছোট অস্ত্রোপচার অর্থাৎ বদল প্রয়োজন, যদিও পরে তিনি মেনে নেন একটু বড় অপারেশনই করতে হবে, তবে ওই মুখে বলা-টুকুই। কাজে এখনও তাঁর প্রতিফল দেখা যায়নি, যা দেখে বেজায় বিরক্ত প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। যদিও এখনও নকভি বলছেন, ‘আমি পাকিস্তান ক্রিকেটে সুদিন আনব। আসতে আসতে বিষয়গুলো মিটছে। পরিবর্তন হচ্ছে। সবার প্রকাশ্যে না হলেও, আমার কথা মিলিয়ে নেবেন। লোকচক্ষুর আড়ালেই পরিবর্তন হচ্ছে ’।
২০২১ সালের পর থেকে ঘরের মাঠে টেস্ট ফরম্যাটে জয় অধরা পাকিস্তানের। হেরেছে পাঁচটি ম্যাচে, ড্র হয়েছে চারটি টেস্টে। বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের পর দলের ক্রিকেটারদের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি। কীভাবে ক্রিকেটাররা নিজের দেশের মাটিতেই পিচ বুঝে উঠতে পারল না, এই প্রশ্নই করেছেন তিনি। একই সঙ্গে এমন পিচে চার পেসার খেলানোর সিদ্ধান্তকেও এক হাত নিয়েছেন আফ্রিদি।