বাংলাদেশ বনাম ভারতের চেন্নাই টেস্টের দিনের শুরুটা যদি হয় হাসান মাহমুদের তাহলে দিনের শেষটা নিঃসন্দেহে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। এক্ষেত্রে অশ্বিনের কৃতিত্ব যে বাংলাদেশ পেসারের থেকেও বেশি, সেটা বলাই যায়। কারণ হাসানের কাজ মূলত বোলিং করা, সেখানে অশ্বিন স্রেফ চেন্নাইয়ের মাঠে বল হাতে কামাল দেখাবেন সেটা নয়। তাঁর আগে বিপদে পড়ে যাওয়া ভারতীয় দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুললেন বিশ্বস্ত ব্যাটে ভর দিয়ে। করলেন শতরান, পিছিয়ে পড়া ভারতীয় দলকে বসিয়ে দিলেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চালকের আসনে। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে জুটিতে এখনও পর্যন্ত তাঁরা তুললেন ১৯৫ রান, যেখানে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম ছয় ব্যাটারই সাজঘরে ফিরেছিলেন মাত্র ১৪৪ রানের মধ্যেই।
আরও পড়ুন-গল টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরান কামিন্দুর! আগামীর তারকা, বললেন মালিঙ্গা
১১২ বলে অপরাজিত ১০২ রান করে এই মূহূর্তে উইকেটে রয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। স্রেফ শতরান করলেন তাই নয়, হাসান মাহমুদদের বিরুদ্ধে দাদাগিরি করলেন চেন্নাইয়ের মাঠে। কারণ তাঁর শতরানের পথে স্ট্রাইক রেট ছিল ৯১, টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষেত্রে যা ঈর্ষনীয় তো বটেই। নিজের ইনিংসে এখনও পর্যন্ত মেরেছেন ১০টি চার এবং দুটি ছয়। প্রসঙ্গত ভারতের প্রথম সারির ব্যাটারদের মধ্যে কেউ একটাও ছয় মারতে পারেননি।
আরও পড়ুন-প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের দাদাগিরি! লিটনকে পন্ত বললেন,‘আমায় কেন মারছ’…লড়ছেন অশ্বিন-জাড্ডু
৩৮ বছর বয়সের পর শতরানের নজির
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চেন্নাইতে শতরান করে রবিচন্দ্রন অশ্বিন নাম তুলে নিলেন অনন্য রেকর্ড বুকে। ৩৮ বছর বয়সের পর ভারতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটারদের মধ্যে এতদিন তিনজনের ছিল শতরানের নজির, রাহুল দ্রাবিড় করেছিলেন ৫টি শতরান। ওপেনার ভিনু মনকর কড়েছিলেন ২টি শতরান। এছাড়াও একটি শতরান ছিল বিজয় মার্চেন্টের। এবার সেই তালিকাতেই নাম তুললেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
চেন্নাইয়ের মাঠে জোড়া শতরান
চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার শতরান করলেন অশ্বিন। এটি ছিল অশ্বিনের টেস্ট কেরিয়ারের ষষ্ঠ শতরান। এর আগে ২০২১ সালেও ভারতীয় দল যখন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিপদে পড়েছিল তখন ১০৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে বিপদমুক্ত করেছিলেন অশ্বিন। এবারও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দলকে টেনে তুললেন ভারতীয় অলরাউন্ডারই।
আরও পড়ুন-ওরা করলে লিলা, আর আমরা করলেই বিলা!, পিচ বিতর্কে সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন গৌতম গম্ভীর…
প্রথম দিনের শেষের ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান। নিজের শতরানের পর অশ্বিন কৃতিত্ব দিলেন তার পার্টনার রবীন্দ্র জাদেজাকেও। বললেন, জাদেজা তাঁকে এক রানগুলোকে দু রানে কনভার্ট করতে বলছিল। সেই কারণেই একসঙ্গে কথা বলে কঠিন পরিস্থিতি থেকে দলকে বের করতে সুবিধা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ভারতীয় দল যখন চাপের মধ্যে ছিল, তখন দীনেশ কার্তিক রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বাবাকে প্রশ্ন করেছিলেন ভারত কি ২০০ পার করতে পারবে? ঘরের মাঠে ছেলের ওপর আস্থা রেখেই তখন অশ্বিনের বাবা বলেছিলেন, ছেলে কিছু করে দেখাবে। দিনের শেষে তাই অশ্বিন পরিবারের মুখেই তৃপ্তির হাসি। পাশাপাশি বর্ডার গাভাসকর ট্রফির আগে ব্যাট হাতে অশ্বিনের রানে থাকা কিছুটা স্বস্তি দিয়ে গেল কোচ গৌতম গম্ভীরকেও।