রবিচন্দ্রন অশ্বিন সম্প্রতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন বর্ডার গাভাসকর ট্রফির মাঝেই। এরপর অশ্বিনের অবসর নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন উঠেছে যে কেন তিনি এভাবে সরে দাঁড়ালেন। এরপর তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, নিজের সৃজনশীলতা থেকে নতুন করে কিছু পাওয়ার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁর, সেই কারণেই সিদ্ধান্ত নেন ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর।
আরও পড়ুন- নতুন বছরে বাগান সমর্থকদের উপহার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার! হায়দরাবাদ FC ম্যাচের টিকিট ফ্রি
অবসরের পর থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটে হট কেক রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এবার এক সাক্ষাৎকারে তিনিই জানালেন, কীভাবে শান্ত চুপচাপ স্বভাবের রাহুল দ্রাবিড়কেও কার্যত বাঁধনছাড়া উচ্ছাতে মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কয়েক বছর আগে টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচের কথা বলতে গিয়েই অশ্বিন জানিয়েছেন, তিনি দুবার রাহুল দ্রাবিড়কে আনন্দে আটখানা হতে দেখেছেন, তাঁর মধ্যে একবার এর পিছনে অবদান ছিল তাঁর নিজের।
আরও পড়ুন-ওয়ার্নারের স্লেজিংয়ে ভয় পাননি! উল্টে দ্বিগুন স্লেজিং করেন পূজারা! ফাঁস করলেন রহস্য…
ভারতীয় দলের সঙ্গে পাকিস্তানের ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপের ম্যাচে যখন ভারতের জয়ের জন্য দুরান বাকি ছিল, তখনই মহম্মদ নাওয়াজ লেগ সাইডে বল করেছিলেন ক্রিজে নবাগত রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। ব্যাপক উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সেই বল অশ্বিন ছেড়ে দিতেই ওয়াইড বল হয়ে যায় এবং ভারত এক রান পেয়ে যায়। ফলে রান তখনই সমান হয়ে যায়। এরপর শেষ বলেও তিনি রান নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন। আর তখনই ড্রেসিং রুমে বাঁধনছাড়া উচ্ছাসে মেতে ওঠেন রাহুল দ্রাবিড়।
সম্প্রতি স্কাইস্পোর্টসের পডকাস্টে মাইকেল আথার্টন এবং নাসির হোসেনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবিচন্দ্রন অশ্বিন বলছেন, ‘আমি তখনও বুঝিনি যে আমি কি করেছি। আমি ড্রেসিংরুমে এসে রাহুল দ্রাবিড়কে ওরকম আনন্দে মাতোয়ারা হতে আগে দেখিনি। মানে আমি দ্বিতীয়বার ওকে অত আনন্দ করতে দেখেছি ভারতীয় দল টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর। আমি কখনও দ্রাবিড়কে আগে ওভাবে দেখিনি। আমার কাছে এসে আমায় বলেছিল, ‘এই জন্যই তোমায় স্কোয়াডে রাখা হয়েছে, এভাবেই এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় ’’। আমি সত্যিই তখন বুঝিনি ওই মূহূর্তের গুরুত্বটা। আমি বলটা দেখলাম বাইরের দিকে যাচ্ছে, আর আমি ছেড়ে দিলাম। এরপর বিরাটও সেলিব্রেট করতে শুরু করে দিয়েছিল, এরপর হাত তুলে আমাকে ও বলছিল এভাবে বল কে ছাড়ে? ’।
আরও পড়ুন- বুমরাহকে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য প্রাক্তন ইংরেজ তারকার? বাবা কলকাতার ছেলে ছিলেন!
অশ্বিন বলছেন, ‘আমার কাছে এটা একটা বড় লড়াইও। মানে বিশ্বক্রিকেটের সঙ্গে আমার একটা লড়াই চলেছে এত বছর ধরে, যে একজন গলি ক্রিকেটার এসে কলার তুলে সমানে সমানে টেক্কা দিয়ে গেছে। আর কেরিয়ারের শেষেও সে গলি ক্রিকেটারই রয়ে গেছে। এটা মেনে নেওয়া বিশ্বক্রিকেটের জন্য কঠিন বিষয়, কারণ ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ডে গলি ক্রিকেটের এত প্রসার নেই। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে এই ধরণের গলি ক্রিকেটের তেমন চল নেই ’।
গলি ক্রিকেট প্রসঙ্গে অশ্বিন বলছেন, ‘আমার কাছে ক্রিকেট জীবনে গলি ক্রিকেট একটা বড় বিষয়। আমি আমার কেরিয়ারের মাঝামাঝি লগ্নে এসেও বন্ধুদের সঙ্গে গলি ক্রিকেট খেলতাম। এর থেকে এমন একটা খুশি পাওয়া যায়, যেটা বিশ্বের অন্য কোথাও আমি পাইনি। আমার মনে হয় লেগ সাইডে বল ছাড়া একটা বড় বিষয়, কারণ আমাদের অধিকাংশ খেলায় অফ সাইডেই রান হয়। অনেকটা আন্ডারআর্ম ক্রিকেটের মতোই লেগ সাইডে বেশি রান করা যায় না। তাই আমার কাছে বিষয়টা খুবই সাধারণ, যে পা সরিয়ে ওয়াইড বল নিয়ে নেওয়া। অনেকে হয়ত ভাববে আমি সারারাত ধরে এভাবে বল ছাড়ার অনুশীলন করেছি, কিন্তু আসলে সেটা নয়। ’