দুই 'কালপ্রিট' ধরা পড়লেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পরে ভারতীয় দলের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে শূন্যে ছোড়ার পিছনে যে রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির হাত আছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল ভিডিয়োয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে পাওয়ার পরে বার্বাডোজের মাঠের একটা জায়গায় ভারতীয় খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে আছেন। তখন বিরাটের হাতে ট্রফি ছিল। সেইসময় বিরাটের কানে-কানে কিছু বলতে থাকেন রোহিত। ক্যাপ্টেনের কথা শুনে তাঁর দিকে মুখ ঘোরান বিরাট। তারপরই বিরাটের দিকে তাকিয়ে হাত উপরে তোলার ইঙ্গিত করতে থাকেন রোহিত। সেটা যে কীসের পরিকল্পনা চলছিল, তা কিছুক্ষণ পরেই বোঝা যায়। দ্রাবিড়কে নিজেদের কোলে তুলে নেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই মহাতারকা। আর হেড কোচকে শূন্যে ছুড়ে দিতে থাকেন।
রোহিত ও বিরাটের আবেগে ভেসে যান দ্রাবিড়ও
প্রাথমিকভাবে দ্রাবিড় কিছুটা কুণ্ঠাবোধ করলেও পরে বিরাট-রোহিতদের আবেগের সামনে নিজেকে পুরোপুরি সঁপে দেন। সেই সুযোগ পেয়েই দ্রাবিড়কে ছ'বার শূন্যে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তাঁকে নামিয়ে দেন বিরাট এবং রোহিত। সেইসময় দ্রাবিড়ের মুখে চওড়া হাসি ছিল। আর সেটার পরে দ্রাবিড়কে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেন সহ-অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। হেড কোচের মাথা ধরে ঝাঁকিয়ে দেন।
সত্যিই আবেগের দিন, আবেগে ভাসতেই হবে
আর সত্যিই আবেগে ভেসে যাওয়ারই কথা। ১১ বছর পরে কোনও আইসিসি ট্রফি জিতল ভারত। ১৭ বছর পরে জিতল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ১৩ বছর পরে যে কোনও বিশ্বকাপ জিতল। রোহিত শর্মা ‘রোহিত’ হওয়ার পরে প্রথমবার কোনও বিশ্বকাপ জিতলেন। আর দীর্ঘ ৩০ বছরের খেলোয়াড়ি জীবন এবং কোচিং জীবনের পরে প্রথমবার বিশ্বকাপ ছুঁতে পারলেন দ্রাবিড়। নিজেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলতে পারলেন।
দ্রাবিড়ের জন্য তাই মুহূর্তটা আরও স্পেশাল ছিল। ২০০৩ সালে যখন দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হয়েছিল, তখন ফাইনালে উঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যেতে হয়েছিল। চার বছর পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যখন ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হয়েছিল, তখন প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে গিয়েছিল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশের কাছে। আর সেই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মাঠেই জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হল দ্রাবিড়ের।
ভাষা হারিয়ে ফেলেন দ্রাবিড়
দ্রাবিড় বলেন, 'আমি সাধারণত ভাষা হারিয়ে ফেলি না। কিন্তু গত কয়েক ঘণ্টায় আমি সত্যিই ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি এই দলটাকে নিয়ে এর থেকে বেশি গর্ববোধ করতে পারি না। যেভাবে আমরা কঠিন সময় লড়াই করেছি, আজও সেই কাজটা করেছ, সেটাই প্রমাণ করছে এই দলটা লড়তে জানে।'