একটি ক্যাচই বদলে দিল ম্যাচের ভাগ্য। দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে পৌঁছে গেল সেমিফাইনালে। চাপে পড়ে গেল ইংল্যান্ড। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার আটের পঞ্চম ম্যাচটি খেলা হয়েছিল ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। ইংল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
‘ক্যাচ ধরো, ম্যাচ জেতো’
ইংল্যান্ডকে জিততে হলে শেষ ৬ বলে ১৪ রান করতে হত। এদিকে এই রান ডিফেন্ড করতে, এনরিখ নরকিয়ার হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এডেন মার্করাম। প্রথম বলেই ইংল্যান্ডকে বড় ধাক্কাটা দেন নরকিয়া। ফেরান হ্যারি ব্রুককে, যিনি হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলের হাল ধরে রেখেছিলেন। তবে মার্করাম যদি দুরন্ত ক্যাচটি না ধরতেন, তবে ব্রুক হয়তো ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়তেন। ব্রুকের ক্যাচটিই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। এবং ইংল্যান্ডকে ম্যাচটি হারতে হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের জন্য সুখবর, বোলিং শুরু করে দিয়েছেন শামি, কবে ফিরবেন জাতীয় দলে? মিলল ইঙ্গিত
‘ক্যাচ ধরো, ম্যাচ জেতো’- কথাটি সত্যি প্রমাণিত হল দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। শুক্রবার সেন্ট লুসিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের ম্যাচে এই ক্যাচটি ভাগ্য নির্ধারণ করে দিল দুই দলের। মার্করাম বল লক্ষ্য করে মিড অফ থেকে ছুটে গিয়ে ব্রুকের দুর্দান্ত ক্যাচটি নেন। তিনি তাঁর চোখ বলের উপর সেট করে রেখে পিছন দিকে দৌড়ে ক্যাচ নেন। তাও সেটা ডান দিকে হাত বাড়িয়ে। এক কথায় অনবদ্য ক্যাচ। ক্যাচটি ধরতে গিয়ে মার্করাম পড়েও যান, কিন্তু বল হাত থেকে ছাড়েননি।
ব্রুক সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর আর ইংল্যান্ডের পক্ষে জেতা সম্ভব হয়নি। এর পর নরকিয়া তাঁর দ্বিতীয় বলে দেন ১ রান। তৃতীয় বলে তাঁকে চার হাঁকান স্যাম কারান। চতুর্থ বলে কোনও রান হয়নি। পঞ্চম বলে হয় ১ রান। এখানেই ম্যাচ পকেটে পুড়ে ফেলে প্রোটিয়ারা। শেষ বলে ৮ রান প্রয়োজন ছিল। তবে সেই বলে কোনও রান হয়নি। ১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে ১৫৬ রানেই শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস।
আরও পড়ুন: দলে কোনও ব্যক্তি পুজো চলবে না- রোহিতদের কোচ হওয়া প্রসঙ্গে কলকাতায় এসে নীরবতা ভাঙলেন গম্ভীর
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৬৩ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন কুইন্টন ডি'কক। ওপেন করতে নেমে ৪টি ছয় এবং চারের সাহায্যে ৩৮ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। এতে অক্সিজেন পেয়ে যায় প্রোটিয়ারা। এছাড়া ভরসা জোগান ডেভিড মিলার। অল্পের জন্য হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও, চারটি ৪ এবং ২টি ছক্কার হাত ধরে ২৮ বলে ৪৩ রান করে তিনি দলকে ১৬৩-তে নিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এছাড়া ত্রিস্তান স্টাবস ১১ বলে ১২ করে অপরাজিত থাকেন। অন্যরা সেভাবে খেলতে না পারায় রানের গতিও মন্থর ছিল প্রোটিয়াদের।
আরও পড়ুন: বাবর আজমদের বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগের প্রমাণ চাই, না হলে আইনি ব্যবস্থা, হুমকি PCB-র- রিপোর্ট
ব্যাটিং ব্যর্থতার জেরে হারতে হয় ইংল্যান্ডকে
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড় করছিল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতার জেরেই হারতে হয় ব্রিটিশদের। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার তো ডাহা ফেল। দলের ৬১ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যায় তাদের। রান পাননি ফিল সল্ট (১১)। ১৭ রানে ফেরেন জস বাটলার। বিধ্বংসী ওপেনিং জুটির ব্যর্থতা ইংল্যান্ডের হারের অন্যতম কারণ। একেবারেই ছন্দে নেই জনি বেয়ারস্টোও (১৬)। হ্যারি ব্রুক এবং লিয়াম লিভিংস্টোন যেটুকু লড়াই করলেন। পঞ্চম উইকেটে ৭৮ রান যোগ করে এই জুটি। ইংল্যান্ডকে তারা লড়াইয়েও ফিরিয়ে আনে। তবে ১৭ বলে ৩৩ করে আউট হয়ে যান লিভিংস্টোন। তবে হ্যারি ব্রুক উইকেটে থাকা পর্যন্ত ইংল্যান্ডের জয়ের বেঁচে ছিল। কিন্তু ৭টি চারের হাত ধরে ৩৭ বলে ৫৩ রান করে শেষ ওভারের প্রথম বলে ব্রুক আউট হতেই ইংল্যান্ডের আশার প্রদীপ নিভে আসে। শেষ ওভারে নরকিয়া বল হাতে বাজিমাত করে ৭ রানে জয় এনে দেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে।