ডাচেদের দেওয়া ১০৪ রান তাড়া করতে নেমে যেন কেঁপে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার। ৩ রানে তারা ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। পাওয়ার প্লে-তে ৪ উইকেট হারিয়ে করেছিল মাত্র ১৬ রান। সেখান থেকে ডেভিড মিলারের লড়াইয়ের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ায় প্রোটিয়ারা। মেলে লজ্জার হাত থেকে রেহাই। শেষ পর্যন্ত ৭ বল বাকি থাকতে চার উইকেটে তারা ম্যাচ জিতে নেয়।
শনিবার নিউইয়র্কে টি২০ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ডাচেদের মুখোমুখি হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে নেদারল্যান্ডসকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান এডেন মার্করাম। অটনিল বার্টম্যান, মার্কো জানসেনদের দাপটে শুরু থেকেই নড়বড় করছিল ডাচ ব্যাটাররা। নিয়মিত ব্যবধানে তারা উইকেট হারাতে শুরু করেন। একমাত্র সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট যেটুকু অক্সিজেন দিয়েছেন। বাকিদের অবস্থা তথৈবচ।
ডাচ ওপেনার মাইকেল লেভিতকে খালি হাতে সাজঘরে ফেরান জানসেন। এর পর বার্টম্যানের বলে ২ করে আউট হন ম্যাক্স ও'দাউদ। তিনে নামা বিক্রমজিৎ সিং-কে (১৭ বলে ১২) বোল্ড করেন জানসেন। এনরিখ নরকিয়ার বলে বাস ডে লিডও মাত্র ৬ করে (১৬ বলে) করে আউট হন। স্কট এডওয়ার্ডস আবার ৯ বলে ১০ করে রানআউট হন। তেজা নিদামানুরুও ফেরেন গোল্ডেন ডাক করে।
এই পরিস্থিতিতে নেদারল্যান্ডসের স্কোরবোর্ডে যে রানটুকু জ্বলজ্বল করছে, সেটা হল এঙ্গেলব্রেখটের ৪০ (৪৫ বলে)। আটে নেমে তাঁকে কিছুটা সঙ্গত করেছিলেন লোগান ভ্যান বিক। ৪৮ রানে ৬ উইকেট থেকে দলকে শতরান পার করান তাঁরা। ভ্যান বিক ২৩ করে (২২ বলে) বার্টম্যানের বলে আউট হন। এঙ্গেলব্রেখটকেও ফেরান বার্টম্যান। তাঁর ৪০ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ২টি চার এবং একটি ছয়ে। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে কোনও মতে নেদারল্যান্ডস করে ১০৩ রান। প্রোটিয়াদের হয়ে ১১ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন বার্টম্যান। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন নরকিয়া এবং মার্কো জানসেন।
আরও পড়ুন: এত চাপ থাকে, সেক্স তো… চাঞ্চল্যকর দাবি KKR-এর সহকারী কোচের
জবাবে ১০৪ রান তাড়া করতে নেমে কেঁপে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংও। তবে ডেভিড মিলারের সৌজন্যেই কোনও মতে জয় ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয় প্রোটিয়ারা। মানরক্ষা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। রান তাড়া করতে নামলে ইনিংসের প্রথম বলেই ডায়মন্ড ডাক করে রান আউট হয়ে যান কুইন্টন ডি'কক। রেজা হেনড্রিক্স (১০ বলে ৩), এডেন মার্করাম (৩ বলে ০) এবং হেনরিখ ক্লাসেন (৭ বলে ৪) রান পাননি। ১২ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট পড়ে হাসফাঁস দশা হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। পাওয়ার প্লে-তে তাদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে মাত্র ১৬ রান। সেই সময়ে মনে হচ্ছিল, ম্যাচ হয়তো বের করে নেবে নেদারল্যান্ডস।
আরও পড়ুন: ভারত-পাক ম্যাচ শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যে নামতে পারে ঝেঁপে বৃষ্টি, ভেস্তে গেলে কপাল পুড়বে বাবরদের
তবে এর পরেই ছয়ে নেমে দলের হাল ধরেন ডেভিড মিলার। ত্রিস্তান স্টাবস তাঁকে কিছুটা সঙ্গত করেন। তরুণ স্টাবস কঠিন পরিস্থিতিতে মিলারের পাশে থেকে লড়াই করার চেষ্টা করেন। ৩৭ বলে ৩৩ করে আউট হন স্টাবস। তখন ফের ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। তবে মিলার কিন্তু হাল ছাড়েননি। ৫১ বলে ৫৯ করে তিনি তিনি অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তাঁর ইনিংসে ছিল তিনটি চার, চারটি ছক্কা। ছয় মেরেই দলের জয় নিশ্চিত করেন মিলার। ডাচেদের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন লোগান ভ্যান বিক এবং ভিভিয়ান কিংগমা। ১ উইকেট নিয়েছেন বাস ডে লিড।
এই জয়ের ফলে ২ ম্যাচে চার পয়েন্ট হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার। তারা পরের রাউন্ডের দিকে এক পা বাড়িয়ে রাখল। নেদারল্যান্ডস আবার ২টি ম্যাচ খেলে একটিতে জিতেছে, একটিতে হেরেছে।