সচিন তেন্ডুলকরকে ক্রিকেট থেকে বিদায় জানানোটা মোটেও সহজ কাজ ছিল না ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে। ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান নিজের শেষ ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেছিলেন ১৬ নভেম্বর ২০১৩ সালে। ওয়াংখেড়েতে ২০০ তম টেস্ট ম্যাচ খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি। শেষ বেলায় বেশ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন সচিন। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি আর। রবিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ৫০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে এসে সেই পুরনো স্মৃতি তাজা করেন মাস্টার ব্লাস্টার। তিনি জানিয়েছিলেন ঘরের মাঠ বা নিজের জন্য নয়, শেষ ম্যাচ ওয়াংখেড়েতে খেলতে চেয়েছিলেন নিজের মায়ের জন্য। রবিবার তারকাসমৃদ্ধ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুম্বইয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা। উপস্থিত ছিলেন রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে সুনীল গাভাসকর সহ আরও অনেকে। সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় অবসরের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সচিন।
রবিবার সচিন তেন্ডুলকর বলেন, ‘সিরিজ ঘোষণার আগে, আমি তৎকালীন বিসিসিআই-এর সভাপতি শ্রীনিবাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা অনুরোধ করেছিলাম। আমি বলেছিলাম আমার শেষ ম্যাচটা মুম্বইয়ে করা হোক। আমি যত বছর খেলেছি – ভারতের হয়ে ২৪ বছর খেলেছি এবং তার আগে আরও কিছু। সুতরাং, মোট প্রায় ৩০ বছর - আমার মা আমাকে কখনও খেলতে দেখেননি। তখন আমার মায়ের স্বাস্থ্য এমন ছিল যে তিনি ভ্রমণ করতে পারতেন না। তিনি ওয়াংখেড়ে ছাড়া অন্য কোনও জায়গায় গিয়ে খেলা দেখার মতো অবস্থায় ছিলেন না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘তাই আমি অনুরোধ করেছিলাম যে আমার একটি শেষ ইচ্ছা আছে – আমার মা এখানে থাকবেন এবং দেখবেন কেন আমি ২৪ বছর ধরে বাড়ি ছাড়া। বিসিসিআই আমার অনুরোধ গ্রহণ করে এবং ম্যাচটি এখানে রাখে। আর সেই ম্যাচটা আসলে আমার জন্য খুবই আবেগঘন মুহূর্ত ছিল। কারণ এত বছর পর এটাই ছিল আমার জন্য শেষ সময়। আমি জানতাম এই দিনটা আর আসবে না।’ টেস্টে শুরু থেকে ভালো ছন্দে দেখাচ্ছিল তেন্ডুলকরকে। বেশ সাবলীল ভাবে ৭৪ রান করেছিলেন তিনি। সবাই ভেবেছিলেন হয়তো শেষ ম্যাচে আরও একটা সেঞ্চুরি হাঁকাবেন তিনি। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি, আউট হয়ে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলার নরসিং দেওনারায়ণের বলে। সেই সঙ্গে শেষ হয় বিশ্ব ক্রিকেটের এক কিংবদন্তির যাত্রা।