ভারতের তারকা ব্যাটসম্যান এবং আইপিএল-জয়ী অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার অবশেষে বিসিসিআই কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুললেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান দাবি করেছেন, কী ভাবে যোগাযোগ এবং বোঝাপড়ার অভাব এবং ক্রমাগত ফিটনেস সমস্যার কারণে ভারতীয় দলে তাঁর জায়গা হারাতে হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তিও তাঁর হাতছাড়া হয়েছে।
তবে শ্রেয়স আইয়ার কিন্তু গত মরশুমে রঞ্জি ট্রফিজয়ী দল মুম্বইয়ের সদস্য ছিলেন। বিদর্ভের বিরুদ্ধে রঞ্জির ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৯৫ রানও করেছিলেন। এর পরে শ্রেয়স আইপিএলের টিম কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হিসেবে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেন। তাঁর নেতৃত্ব প্রশংসিত হয়েছে। ২০২৪ আইপিএলে কেকেআর দুরন্ত পারফরম্যান্স করেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: আমেরিকার পর এবার কানাডার চমক, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জিতে পল স্টার্লিংরা লিখলেন ইতিহাস
কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া নিয়ে কী বললেন কেকেআর অধিনায়ক?
শ্রেয়স আইয়ার শুক্রবার সন্ধ্য়েতে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন। যেখানে তিনি নিজের মনোর কথা উগরে দিয়েছে। যদিও তিনি কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়ার কথাটি মুখে বলেননি, তবে তিনি এই বিষয়েই যে ইঙ্গিত করছেন, সেটা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: একেই অপ্রত্যাশিত হার, তার উপর রউফের বিরুদ্ধে বল ট্যাম্পারিংয়ের অভিযোগ আনলেন আমেরিকার পেসার
শ্রেয়স বলেছেন, ‘আমার একটা অসাধারণ বিশ্বকাপ ছিল। আমি এর পরে বিরতি নিতে চেয়েছিলাম, আমার শারীরিক সমস্যাগুলি মেটাতে চেয়েছিলাম। শরীরের বিশেষ কিছু জায়গায় শক্তি বাড়ানোর উপর কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কমিউনিকশনের অভাবে কিছু সিদ্ধান্ত আমার পক্ষে যায়নি। দিনের শেষে ব্যাট সব সময়ে আমার হাতে থাকবে এবং এটাপারফর্ম করা এবং ট্রফি জেতানোটা আমার উপরেই নির্ভর করবে। আমি জানতাম যে, একবার রঞ্জি ট্রফি এবং আইপিএল জিততে পারলে, অতীতে যা ঘটেছিল তার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। সৌভাগ্যক্রমে, সব কিছু সঠিক ভাবে হয়েছে। ভবিষ্যতে আমাদের আরও অনেক ট্রফি জিততে হবে।’
আরও পড়ুন: রোহিতের চোট নিয়ে জল্পনা বাড়ালেন বুমরাহ পত্নী
শ্রেয়স আইয়ারের ফিটনেস ইস্যু
অক্টোবর-নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগেও পিঠের সমস্যা নিয়ে ভুগেছিলেন শ্রেয়স। গত বছর এশিয়া কাপের আগে পিঠের চোট সারিয়ে দলে ফিরেছিলেন তিনি। ওডিআই বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন। তার পরে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে, তাঁকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে প্রথম দু'টি টেস্টের জন্য বাছাই করা হয়েছিল। বাকি তিনটি টেস্টে অবশ্য তিনি বাদ পড়েন। দ্বিতীয় টেস্টের মাঝেই পিঠে খিঁচুনি অনুভব করায় তিনি আর খেলতে পারেননি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে শ্রেয়স রঞ্জিও খেলেননি। মুম্বই ক্রিকেট সংস্থাকে চোটের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বোর্ডের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন যে, শ্রেয়সের কোনও চোট নেই।
এটাও অভিযোগ উঠেছিল যে, কেকেআরের প্রাক-মরশুম শিবিরে যোগ দিলেও, রঞ্জি খেলেননি শ্রেয়স। পরে তিনি রঞ্জিতে ফিরেছিলেন। সেমিফাইনাল এবং ফাইনালে খেলেছিলেন। যদিও এর পর বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। তবে রঞ্জি ট্রফির ফাইনালের সময়ে পিঠের সমস্যার কারণে শ্রেয়স আইয়ার টানা দু'দিন মাঠেও ছিলেন না। আইপিএল ফাইনালের আগে শ্রেয়স এই নিয়ে ক্ষোভ উগরে বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপের পর দীর্ঘ ফর্ম্যাটে খেলতে গিয়ে আমার অবশ্যই সমস্যা হচ্ছিল। আমি সেটা নিয়ে লড়াই করছিলাম। যখন আমি আমার উদ্বেগের কথা জানালাম, তখন কেউ এতে বিশ্বাস করেননি। মানতেও চাননি।’ এবার আবার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়া নিয়ে ঘুরিয়ে সরব হলেন শ্রেয়স।