শেফিল্ড শিল্ডের ১৩২ বছরের ইতিহাসে অন্যতম উত্তেজক ম্যাচের সাক্ষী থাকল ক্রিকেটবিশ্ব। হবার্টে শেষ বলের থ্রিলারে তাসমানিয়াকে হারিয়ে দেয় সাউথ অস্ট্রেলিয়া। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সাউথ অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জেতে মাত্র ২ রানের ব্যবধানে।
অর্থাৎ, চার দিনের ম্যাচের একেবারে শেষ বলের আগে জয়ের রাস্তা খোলা ছিল দু'দলের সামনেই। ম্যাচ ড্র হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল পুরোদস্তুর। শেষমেশ দুই ব্যাটারের ভুল বোঝাবুঝিতে ম্যাচ হারতে হয় তাসমানিয়াকে।
প্রথম ইনিংসে বিরাট ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া তাসমানিয়ার সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২৯ রানের। জিততে হলে ১১৩ ওভারে তাদের এই রান তুলতে হতো। তাসমানিয়া ১১২ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ৪২২ রান তুলে ফেলে। অর্থাৎ, শেষ ওভারে জিততে ৭ রান দরকার ছিল তাদের। হাতে ছিল ২ উইকেট।
শেষ ওভারে ওয়েস এগরের প্রথম বলে ১ রান নেন লরেন্স। দ্বিতীয় বলে কোনও রান ওঠেনি। তৃতীয় বলে বেলকে বোল্ড করেন এগর। ব্যাট করতে নামেন শেষ ব্যাটার মেরেডিথ। তিনি চতুর্থ বলে ১ রান নেন। পঞ্চম বলে ১ রান নেন লরেন্স। অর্থাৎ, শেষ বলে জিততে ৪ রান দরকার ছিল তাসমানিয়ার। তাদের হাতে ছিল ১ উইকেট।
জিততে হলে সাউথ অস্ট্রেলিয়াকে শেষ বলে উইকেট তুলতেই হতো। তাসমানিয়া যদি শেষ বলে চার রান সংগ্রহ করতে না পারত, তাহলে তারা ম্য়াচ জিতত না বটে, তবে ম্যাচ ড্র করে মাঠ ছাড়ত। শেষমেশ এগরের ওভারের শেষ বলে ২ রান নেওয়ার চেষ্টায় নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউট হন মেরেডিথ। ফলে ২ রানের সংক্ষিপ্ত ব্যবধানে ম্যাচ জিতে যায় সাউথ অস্ট্রেলিয়া।
সচরাচর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এমন রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি দেখা যায়। তবে চার দিনের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট কত রোমাঞ্চকর হয়ে উঠতে পারে, তার প্রমাণ মেলে শেফিল্ড শিল্ডের এই ম্যাচে।
উল্লেখ্য, হবার্টে সাউথ অস্ট্রেলিয়া বনাম তাসমানিয়া ম্যাচে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে সাউথ অস্ট্রেলিয়া। তারা প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৩৯৮ রান তুলে ব্যাট ছেড়ে দেয়। পালটা ব্যাট করতে নেমে তাসমানিয়া প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয় ২০৩ রানে। অর্থাৎ, প্রথম ইনিংসের নিরিখে ১৯৫ রানের বিরাট লিড পেয়ে যায় সাউথ অস্ট্রেলিয়া।
তাসমানিয়াকে ফলো-অন না করিয়ে দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নামে সাউথ অস্ট্রেলিয়া। তারা ৯ উইকেটে ২৩৩ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ডিক্লেয়ার করে। জয়ের জন্য ৪২৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে শেষ ইনিংসে ব্যাট করতে নামে তাসমানিয়া। তারা ম্যাচের একেবারে শেষ বলে অল-আউট হয় ৪২৬ রানে।