ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী টম কারান আউট ছিলেন। তবে খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতায় বিচার করলে বিষয়টি অন্যভাবে দেখতেই হয়। শেষমেশ ক্রিকেটের স্পিরিটকেই আগ্রাধিকার দেয় এমআই এমিরেটস। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় নিকোলাস পুরানদের। সেই নিরিখে বলাই যায় যে, শনিবার আইএল টি-২০'র ম্যাচে নিজেরা হেরে ক্রিকেটের স্পিরিটকে জিতিয়ে দেয় এমআই।
আবু ধাবিতে ম্য়াচ ছিল এমআই এমিরেটস ও গাল্ফ জায়ান্টসের মধ্যে। ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭.৬ ওভারে দেখা যায় নাটকীয় ঘটনা। আলজারি জোসেফের বল মিড-অফে ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে দৌড়ন গাল্ফ জায়ান্টসের ব্যাটার মার্ক আডায়ার। নন-স্ট্রাইকার ব্যাটার টম কারানও ধীরে-সুস্থে প্রান্ত বদল করে নেন।
দুই ব্যাটার এক্ষেত্রে ১ রান নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন। কেউই দুই রান নেওয়ার কথা ভাবেননি। ফিল্ডার পোলার্ডও বুঝে যান যে, ব্যাটাররা এক রান পূর্ণ করেছেন এবং তাঁরা দু'রান নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। তাই তিনি হালকা চালে বল ধরে তা ছুঁড়ে দেন উইকেটকিপার নিকোলাস পুরানের দস্তানায়।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যেহেতু ওভারের শেষ বল ছিল, তাই টম কারান ক্রিজে পৌঁছনোর পরে হাঁটা লাগান সতীর্থ ব্যাটার আডায়ারের সঙ্গে পরামর্শ করতে। কারান যখন ক্রিজ ছেড়ে গুটি গুটি পায়ে বেরিয়ে যান, তখনও পোলার্ডের ছোঁড়া বল এসে পৌঁছয়নি পুরানের দস্তানায়। পুরান এক্ষেত্রে বল ধরেই স্টাম্প ভেঙে দেন এবং রান-আউটের আবেদন জানান স্কোয়ার-লেগ আম্পায়ারের কাছে।
যেহেতু বল ডেড হয়নি, তাই তৃতীয় আম্পায়ার টেলিভিশন রিপ্লে দেখে কারানকে রান-আউট ঘোষণা করেন। তার আগে দুই ব্যাটারকে কথা বলতে দেখা যায় এমআই ক্যাপ্টেন পুরানের সঙ্গে। আম্পায়াররাও আলোচনা করেন পুরানের সঙ্গে। তবে তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেওয়ায় মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না কারানের কাছে।
আরও পড়ুন:- রোহিত থেকে ঋষভ পন্ত, রঞ্জিতে ফিরে কেমন খেললেন টিম ইন্ডিয়ার ৫ সুপারস্টার?
গোটা বিষয়টি মোটেও ভালো চোখে দেখেননি গাল্ফ জায়ান্টসের কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। তাঁর অখুশি প্রকাশ করাই স্বাভাবিক। কেননা এক্ষেত্রে টম কারান যথার্থই রান নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন না। তিনি বল ডেড হয়ে গিয়েছে তথা ওভার হয়ে গিয়েছে ভেবে সতীর্থ ব্যাটারের কাছে যাচ্ছিলেন। মুম্বইয়ের অন্যন্য ক্রিকেটাররাও এক্ষেত্রে এভাবে উইকেট পেয়ে খুশি ছিলেন না।
শেষমেশ বাউন্ডারি লাইনের বাইরে যাওয়ার আগেই টম কারানকে পুনরায় ক্রিজে ডেকে নেওয়া হয়। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পরে গোটা বিষয়টাই নির্ভর করছিল এমআই ক্যাপ্টেনের উপর। একমাত্র তিনি চাইলেই ব্যাটারকে ক্রিজে ফেরাতে পারতেন। পুরান এক্ষেত্রে নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুনরায় ক্রিজে ডেকে নেন কারানকে।
ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়ে এমআই
আবু ধাবিতে শুরুতে ব্যাট করে এমআই এমিরেটস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৫১ রান তোলে। ৩৯ বলে ৫৬ রান করেন টম ব্যান্টন। ২৪ বলে ৩৪ রান করেন কায়রন পোলার্ড। পালটা ব্যাট করতে নেমে গাল্ফ জায়ান্টস ম্যাচের একেবারে শেষ বলে জয় তুলে নেয়। ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৫২ রান তুলে ম্যাচ জেতে তারা। ২৮ বলে ৩৭ রান করেন জেরার্ড এরাসমাস।