গাব্বায় স্টিভ স্মিথ ঠিক যেন ‘ভৃগুর দাদু নৃপেন বাবু।' যিনি সোজা কথাকে কঠিন করে বলতেন। ঘাসকে বলতেন তৃণ। হরিণকে বলতেন মৃগ। আসলে এই তুলনা এক্কেবারে যথাযথ। কেননা ব্রিসবেন টেস্টের চতুর্থ দিনে স্মিথ যে কাণ্ড ঘটান, তা দেখে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, তিনি সহজ কাজ করতে এক্কেবারে পছন্দ করেন না। বরং কঠিন কাজ অনায়াসে করে দেখোনার প্রতি আগ্রহ তাঁর।
ব্রিসবেন টেস্টের চতুর্থ দিনে লোকেশ রাহুলের একেবারে জলভাত ক্যাচ ধরার সুযোগ ছিল স্মিভ স্মিথের সামনে। তবে প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে রাহুলের অতি সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন তিনি। ১৭.১ ওভারে স্মিথের হাত থেকে জীবনদান পেয়ে অনবদ্য হাফ-সেঞ্চুরি করেন লোকেশ।
ভারতীয় তারকা নিজের ইনিংসকে যত গভীরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, খারাপ লাগা বাড়ছিল স্মিথের। কেননা ৩৩ রানের মাথায় লোকেশকে ফেরাতে পারলে ভারতীয় দল আরও বেকায়দায় পড়ত নিশ্চিত। তবে লাঞ্চের ঠিক আগে নিজের ভুল শুধরে নেন স্মিথ। এবার নাথান লিয়নের বলে সেই স্লিপেই লোকেশ রাহুলের কঠিন ক্যাচ ধরেন স্মিথ।
ইনিংসের ৪২.৩ ওভারে লিয়নের অফ-স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটে লাগাতে দেরি করে বসেন রাহুল। বল ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপ অঞ্চলে উড়ে যায়। স্টিভ স্মিথ নিজের ডানদিকে শরীর ফেলে একহাতে ক্যাচ ধরে নেন। ফলে ব্যক্তিগত ৮৪ রানের মাথায় আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় রাহুলকে। ১৩৯ বলের লড়াকু ইনিংসে ৮টি চার মারেন লোকেশ। যে রকম ব্যাট করছিলেন, তাতে শতরান নিশ্চিত দেখাচ্ছিল রাহুলের। তবে স্মিথের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের জন্যই সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয় তাঁর।
স্টিভ স্মিথ ব্রিসবেন টেস্টে লোকেশ রাহুলের দুর্দান্ত ক্যাচ ধরার আগে ব্যাট হাতে অস্ট্রেলিয়াকে নির্ভরতা দেন। প্রথম ইনিংসে অনবদ্য শতরান করেন তিনি। গাব্বার প্রথম ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১২৮ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন স্মিথ। তিনি শতরানের গণ্ডি টপকান ১৮৫ বলে। শেষমেশ ১২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৯০ বলে ১০১ রান করে সাজঘরে ফেরেন স্টিভ।
অন্যদিকে চলতি বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে লোকেশ রাহুলের এটি দ্বিতীয় অর্ধশতরান। গাব্বায় ৮৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলার আগে পার্থ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৭৭ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন। সব মিলিয়ে রোহিত শর্মার বদলে ওপেন করতে নেমে লোকেশ এখনও পর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার মর্যাদা রেখেছেন বলা যায়।