বাবর আজমের ব্যাট থেকে শেষবার ওয়ান ডে শতরান এসেছে ২০২৩ সালের আগস্টে নেপালের বিরুদ্ধে। তার পর থেকে ২৩ ইনিংসে তিনি সাতটি অর্ধশতরান করেছেন, তবে আগের মতো প্রভাবশালী ছিল না কোনও ইনিংসই। অন্যান্য ফর্ম্যাটেও কার্যত একই অবস্থা বাবরের। তাঁর শেষ প্রভাবশালী টি-২০ ইনিংস ছিল ২০২৪ সালের মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। বাবর শেষ ২৬টি টেস্ট ইনিংসে মাত্র দু'বার ৫০ রানের গণ্ডি ছুঁয়েছেন। পাকিস্তানের এই সুপারস্টারের ব্যক্তিগত পারফর্ম্যান্স গ্রাফ ধীরে ধীরে নীচের দিকে নামছে। এটা পাকিস্তানের দলের সার্বিক পারফর্ম্যান্সেও প্রভাব ফেলছে।
১৯৯৬ সালের প্রায় তিন দশক পরে পাকিস্তান কোনও আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করছে। আয়োজক দেশ হিসেবে পাকিস্তানকে নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল বিপুল। তবে চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে মাত্র চার দিনের মধ্যেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় পাক দলের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে পাকিস্তান কোনও রকমে নিজেদের দেশে আয়োজিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে পৌঁছয়। তবে ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়।
পাকিস্তান চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে যাওয়ার পরে বাবরের ফর্ম, বিশেষ করে তাঁর রান তোলার গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিস্তর। যখন পাকিস্তানের প্রাক্তন সুপারস্টারদের সমালোচনায় জর্জরিত বাবর, ঠিক তখনই ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাসকর পাক তারকে খাদের গভীর থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করলেন।
প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার বাসিত আলির ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলার সময় গাভাসকর বাবর আজমকে ফর্মে ফেরাতে একটি টেকনিক্যাল টিপস দিয়েছেন। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বাবরকে তার স্টান্সে সামান্য রদবদলের পরামর্শ দেন। সানির ধারণা, বাবর স্টান্সে একটু রদবদল করলে ক্রিজে ভালোভাবে নড়াচড়া করতে পারবেন এবং বলের বাউন্স সম্পর্কেও ভালো ধারণা হবে তাঁর।
বাবর আজমকে সাফল্যের মন্ত্র দিলেন গাভাসকর
গাভাসকর বলেন, ‘যদি আপনি আমাকে টেকনিকের কথা জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বাবর আজমকে শুধু একটা কথাই বলব। ও ক্রিজে দু’পা অনেকটা ফাঁক করে দাঁড়ায়। যদি ও নিজের দু'টো পায়ের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে দেয়, তাহলে ওর দু'টি সুবিধা হবে। প্রথমত, ও সামনে বা পিছনে নড়াচড়া করতে অস্বস্তি বোধ করবে না। দ্বিতীয়ত, যখন আপনি দু'পায়ে ফাঁক কমিয়ে দেন, আপনার উচ্চতা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে বাউন্স সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাওয়া যায়। দু'পা কাছাকাছি রাখলে আপনি আরও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন এবং অনেক ভালোভাবে বলের মোকাবিলা করা যায়। বাবর যদি এটা করার চেষ্টা করে, তাহলে ওর রান তোলা অনেক সহজ হয়ে দাঁড়াবে। বাবর রানে ফিরলে শুধু পাকিস্তানের মানুষই নয়, পুরো বিশ্বও আনন্দ পাবে।'
গাভাসকর, যিনি গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টি-২০ বিশ্বকাপের সময় বাবরকে সামনে থেকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, বলেন যে তিনি সবসময়ই এই স্টাইলিশ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের স্ট্রোক প্লেয়ের অনুরাগী।
সানির কথায়, ‘বাবরের কভার ড্রাইভ দৃষ্টিনন্দন। ভারতের বিরুদ্ধেও দেখুন, মিড-উইকেটের দিকে ও যে ফ্লিক শটে বাউন্ডারি মারে, কী অসাধারণ শট ছিল। সারা বিশ্ব এই ধরণের শট দেখতে চায়।’