বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ানদের অনুপস্থিতিতে পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পেয়ে যান হাসান নওয়াজ। ২২ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার কেরিয়ারের প্রথম ২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে যে রকম পারফর্ম্যান্স মেলে ধরেন, তাতে ফের পাকিস্তানের জার্সিতে মাঠে নামার সুযোগ পাবেন কিনা সন্দেহ ছিল। তবে পাক টিম ম্যানেজমেন্ট কার্যত শেষ সুযোগ দেওয়ার ছলে নওয়াজের উপর আস্থা রাখে। তবে তৃতীয় সুযোগেই এমন এক কীর্তি গড়েন পাক তরুণ, যা পাকিস্তানের ক্রিকেটে আগে কেউ করে দেখাতে পারেননি।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের জার্সিতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় হাসান নওয়াজের। ক্রাইস্টচার্চের প্রথম ম্যাচে তিনি ২ বলে খেলে শূন্য রানে আউট হয়ে বসেন। দুনেদিনে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও খাতা খুলতে পারেননি নওয়াজ। সেবার ৩ বল খেলে মাঠ ছাড়েন তিনি।
কেরিয়ারের প্রথম ২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পরে তৃতীয় ম্যাচে নওয়াজ সুযোগ পাবেন কিনা, সেই বিষয়ে সংশয় উঁকি দিচ্ছিল। তবে অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচেও পাকিস্তান মাঠে নামায় নওয়াজকে। এবার আর টিম ম্যানেজমেন্টকে হতাশ করেননি তিনি। কেরিয়ারের তৃতীয় ম্যাচেই পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে দ্রুততম শতরান করেন নওয়াজ এবং ভেঙে দেন বাবর আজমের সর্বকালীন রেকর্ড।
শুক্রবার অকল্যান্ডে ৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২৬ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতরান পূর্ণ করেন হাসান নওয়াজ। তিনি শতরানের গণ্ডি টপকান ৪৪ বলে। শেষমেশ ১০টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ বলে ১০৫ রান করে অপরাজিত থাকেন হাসান। পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে সব থেকে কম বলে শতরানে রেকর্ড এটি। এক্ষেত্রে হাসান ভেঙে দেন বাবর আজমের নজির। বাবর ২০২১ সালে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪৯ বলে টি-২০ শতরান করেন।
রোহিতদের সঙ্গে একাসনে নওয়াজ
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে পরপর ২টি ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পরেই সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটার রয়েছেন আরও তিনজন, যাঁদের মধ্যে দু'জন ভারতীয় এবং একজন দক্ষিণ আফ্রিকার। দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকা।
১. সঞ্জু স্যামসন ২০২৪ সালে কেবেরহা ও সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে পরপর ২টি টি-২০ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন। তবে জোহানেসবার্গে ঠিক পরের ম্যাচেই অপরাজিত ১০৯ রান করেন সঞ্জু।
২. রোহিত শর্মা ২০২৪ সালে মোহালি ও ইন্দোরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পরপর ২টি টি-২০ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন। তবে বেঙ্গালুরুতে ঠিক পরের ম্যাচেই অপরাজিত ১২১ রান করেন হিটম্যান।
৩. দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রসউ ২০২২ সালে তিরুবনন্তপুরম ও গুয়াহাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে পরপর ২টি টি-২০ ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন। তবে তার পরেই ইন্দোরে অপরাজিত ১০০ রান করেন প্রোটিয়া তারকা।
সুতরাং, ক্রাইস্টচার্চ ও দুনেদিনে পরপর ২টি ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পরে অকল্যান্ডে সেঞ্চুরি করা হাসান নওয়াজ এক্ষেত্রে রোহিত শর্মা, সঞ্জু স্যামসনদের সঙ্গে একাসনে বসে পড়েন।