মঙ্গলবার কি অবশেষে বার্বাডোজ থেকে বেরোতে পারবে ভারতীয় দল? আপাতত সেই বিষয়টি নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই। পুরোটাই প্রকৃতির উপরে নির্ভর করছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে খবর, মঙ্গলবার যদি বার্বাডোজ বিমানবন্দর খুলে যায়, তাহলে চার্টার্ড ফ্লাইটে করে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে বিশ্বকাপজয়ী দল। বিসিসিআইয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থার পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সরাসরি ভারতে উড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তেল ভরার জন্য আমেরিকা বা ইউরোপে দাঁড়ানো হতে পারে। আমরা বিমানবন্দরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি। নিদেনপক্ষে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত বিমানবন্দর বন্ধ থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদি উল্লেখযোগ্যভাবে আবহাওয়ার উন্নতি হয়, তাহলে আগে খুলে যেতে পারে। বিমান পরিষেবা শুরু করার জন্য হাওয়ার বেগ কমতে হবে। আপনি তো প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করতে পারেন না। আমরা অপেক্ষা করছি। দেখছি যে পরিস্থিতি কোনদিকে যায়।’
গ্রানাডায় আছড়ে পড়েছে হারিকেন, তাণ্ডব ২৪০ কিমিতে
সেইসব পরিকল্পনার মধ্যেই সোমবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে আছড়ে পড়েছে বেরিল। গ্রানাডার ক্যারাইয়াকু দ্বীপে ল্যান্ডফল হয়েছে। যে হারিকেনকে ‘ক্যাটেগরি ৪’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আবহাওয়াবিদরা। ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তরফে জানানো হয়েছে যে অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেটা এতটাই বিপজ্জনক যে রেকর্ড উষ্ণ জলের প্রভাবে আটলান্টিকের বুকে জন্ম নেওয়া সেই হারিকেন তাণ্ডব চালিয়েছে ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগে।
সেই পরিস্থিতিতে বার্বাডোজ, টোব্যাগো, সেন্ট ভিনসেন্টসের মতো বিভিন্ন জায়গায় ঝোড়ো হাওয়া উঠেছে। উত্তাল হয়েছে সমুদ্র। বার্বাডোজে ঝড়ের তাণ্ডব এতটা না হলেও ঝোড়ো হাওয়ার বেগ নেহাত কম নয়। যেখানে আটকে রয়েছে টিম ইন্ডিয়া। গত শনিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে বার্বাডোজের হোটেলেই থাকতে হচ্ছে ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ এবং তাঁদের পরিবারের সদস্য। আটকে পড়েছেন জয় শাহ-সহ ভারতীয় বোর্ডের অন্যান্য কর্তারাও।
সোমবারই বার্বাডোজ ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল টিম ইন্ডিয়ার
মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়ায় সোমবার ভারতীয় দলকে যে চার্টার্ড ফ্লাইট করে বার্বাডোজ থেকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটাও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে কোনও বিমান নামতে পারছে না। উড়তে পারছে না কোনও বিমান। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিসিসিআইয়ের এক কর্তা বলেছেন যে ‘সোমবার উড়ে যাওয়ার জন্য আমরা চার্টার্ড ফ্লাইটের বন্দোবস্ত করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। চার্টার্ড ফ্লাইট চালানো একাধিক সংস্থার সঙ্গে আমরা কথাবার্তা চালাচ্ছি। কিন্তু বিমানবন্দর কখন খুলবে, সেটার উপরে সবকিছু নির্ভর করছে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে বিমান ওঠানামা করতে পারবে না।’
২০০৭-র মতো কি হবে ভারতে?
২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পরে টিম ইন্ডিয়াকে যেভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, এবারও সেরকম কিছু দেখার অপেক্ষায় আছেন ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তরা। যদিও আপাতত সেইসব নিয়ে কিছু ভাবছে না বোর্ড। সোমবার বোর্ড সচিব বলেছেন, ‘প্রথমত, কীভাবে খেলোয়াড়-সহ সবাইকে এখান থেকে সুরক্ষিতভাবে বের করে নিয়ে যাব, সেটার উপর জোর দিচ্ছি আমরা। ভারতে পৌঁছানোর পরে আমরা সংবর্ধনার বিষয়ে ভাবব।’